জোন্সের ঝড়ে প্রথম বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রথম’ জয়

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-06-02 16:54:11

জেরেমি গর্ডন। কানাডার ডানহাতি পেসার। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য তাড়ার ইনিংসে ১৪তম ওভারে তার হাতে বল থামান কানাডা অধিনায়ক সাদ বিন জাফর। এবং ওই এক ওভারেই যেন ম্যাচটা জিতে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তিনটি ওয়াইড বল, দুটি নো, দুটি চার ও দুটি ছক্কার সেই ওভারে ৩৩ রান দেন গর্ডন। এতেই ৪২ বলে ৬৯ রানের সমীকরণ নেমে আসে ৩৬ বলে ৩৬ রানে। শেষ পর্যন্ত ১৯৫ রানের লক্ষ্যটি ১৬ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই পৌঁছে যায় বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক দেশটি। 

তবে ৭ উইকেটে এই দাপুটে জয়ের বড় কৃতিত্ব স্বাভাবিকভাবেই যাবে তৃতীয় উইকেটে অ্যারন জোন্স ও আন্দ্রেস গাউসের জুটিতে। শুরুর চাপ সামলে তাদের ৫৮ বলে ১৩১ রানের রেকর্ড জুটিতেই জয়ের ভিত গড়ে দেয়। গাউস ৬৫ রান করে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন জোন্স। তিনি স্রেফ ৪০ বলে করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৯৪ রান।

ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম এই আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে আগে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন স্বাগতিক দলের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। সেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় প্রতিবেশী দল কানাডা। 

সেই লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই স্টিভেন টেইলরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন কালিম সানা। পরে পাওয়ার প্লে শেষের পরপরই ফেরেন অধিনায়ক মোনাঙ্ক। স্কোরবোর্ডে তখন ৬ ওভার ৩ বলে কেবল ৪২ রান। লক্ষ্যটা বড় সঙ্গে শুরুতেই এমন ধাক্কায় বেশ চাপেই পড়ে যায় সহ-আয়োজক দলটি।

তবে সময় গড়িয়ে জোন্স-গাউস জুটি পেরোতে থাকে সব বাঁধা। ১০ ওভারে যেয়ে সংগ্রহ পৌঁছায় ৮১ রানে। সেখান থেকেই মূলত ব্যাটিং ঝড় শুরু করেন তারা। পরের ৫ ওভারেই তোলে ৮৭ রান, সেখানে ওভারপ্রতি রান ১৭ দশমিক ৪। পরে ১৬তম ওভারে গাউস ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি। ১৩১ রানের এই জুটি যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো টি-টোয়েন্টি যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি তৃতীয় উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। শীর্ষে আছে ২০১৪ বিশ্বকাপে তৃতীয় উইকেটে এইডন মরগান ও অ্যালেক্স হেলসের ১৫২ রানের জুটিটি।

গাউস ফেরার পর বাকি সমীকরণ অনায়াসেই মিলিয়ে দেন জোন্স। বিশ্বকাপে নিজের ও দলের প্রথম ম্যাচেই খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তার ৪০ বলে ৯৪ রানের অপরাজিত নান্দনিক ইনিংসটি সাজানো ছিল ৪টি চার ও ১০টি ছক্কার মারে। এতে জেতেন ম্যাচসেরার খেতাবও।

এদিকে এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো পাওয়ার পর সেটি শেষ পর্যন্ত ধরে ছিল কানাডা। ওপেনিংয়ে নামা নাভনিত ধালিওয়ালের দলীয় সর্বোচ্চ ৬১ রানের ইনিংস ছাড়া নিকোলাস কির্তনের ৫১ এবং শেষ দিকে শ্রেয়াস মোভার ১৬ বলে ৩২ রানের ক্যামিওতে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহে পৌঁছে যায় কানাডা। সেখানে একটি করে উইকেট নেন আলী খান, হারমিত সিং ও কোরি অ্যান্ডারসন।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র, দল দুটিরই এটি ছিল প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। কানাডা বাছাইপর্বের বাঁধা পেরিয়ে এলেও সহ-আয়োজক দেশের সুবাদে সরাসরি মূলপর্বে জায়গা পায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাসের ঝুলিটা ভরপুর রেখেই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে মোনাঙ্ক প্যাটেলের দলটি এবং দাপুটে জয় দিয়েই শুরু করলো বিশ্ব মঞ্চে প্রথমবারের যাত্রা।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

কানাডাঃ ১৯৪/৫ (২০ ওভার); ধালিওয়াল  ৬১, কির্টন ৫১; হারমিত ১-২৭, অ্যান্ডারসন ১-২৯।

যুক্তরাষ্ট্রঃ ১৯৭/৩ (১৭.৪ ওভার); জোন্স ৯৪*, গাউস ৬৫; দিলন ১-১৯ , সানা ১-৩৪।

ফলাফলঃ যুক্তরাষ্ট্র ৭ উইকেট এবং ১৪ বল হাতে রেখে জয়ী।

ম্যাচসেরাঃ অ্যারন জোন্স। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর