চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। নিজেদের প্রথম ম্যাচটা যেকোনো দলের জন্যই জেতা খুব জরুরি, বাংলাদেশের জন্য তা আরও একটু বেশি। অনেকের মতে, গ্রুপপর্বে এই ম্যাচটার ওপরই নির্ভর করছে কোন দল যাবে পরের রাউন্ডে অর্থাৎ সুপার এইটে।
ডি-গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তাই লঙ্কানদের চলতি আসরে দ্বিতীয় ম্যাচ। এই ম্যাচেও তারা হেরে গেলে পরের রাউন্ডে পৌঁছানোটা হয়ে যাবে বেশ কঠিন। তখন গ্রুপপর্বের শেষ দুই ম্যাচ আইসিসির দুই সহযোগী সদস্য দল নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে জেতা ছাড়া উপায় থাকবে না শ্রীলঙ্কার কাছে।
অপরদিকে লঙ্কানদের হারিয়ে আসর শুরু করতে পারলে সুপার এইটের দিকে অনেকটাই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। নাজমুল শান্তদের পরবর্তী তিন ম্যাচ যথাক্রমে দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে। সেখানে প্রোটিয়ারা বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে অপেক্ষা করলেও বাকি দুই ম্যাচে টাইগারদের এগিয়েই রাখছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও সমর্থকরা।
অনেকের আশংকা মতে, লঙ্কানদের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করলে কি হবে বাংলাদেশের? জবাবটা খুব সহজ। পরের রাউন্ডে ওঠার রাস্তা তখন শান্ত-সাকিবদের জন্য হয়ে যাবে বেশ কঠিন! তাই আগামীকালকের প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়াটা বাংলাদেশকে এনে দিবে দারুণ এক সূচনা।
দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে না পারা, বিশ্বকাপের ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হার, প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে শোচনীয় হার। সবকিছু মিলে বাংলাদেশের দলের যখন টালমাটাল অবস্থা যাচ্ছে, তখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় নিশ্চিতভাবেই হতে পারে বিশ্বকাপে টাইগারদের ‘পারফেক্ট স্টার্ট’।
যেকোনো ম্যাচেই আলাদাভাবে নজরে থাকেন দলের অধিনায়করা। সেখানে প্রসঙ্গটা যখন নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে, তখন তার সাম্প্রতিক ব্যাটিং ব্যর্থতা কিছুটা চিন্তার কারণ হয়েই দেখা দিচ্ছে। চলতি বছরে দশটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির কেবল একটিতে তিনি পেয়েছেন ফিফটির দেখা। স্ট্রাইক রেটটাও খুব করুণ। সবশেষ বিপিএলেও সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়েও তেমন পারফর্ম করতে পারেননি। সমালোচনার সমুদ্রেই যেন ডুবে আছেন শান্ত। দল তাই এবারের বিশ্বকাপে তার পরিবর্তনের আশাতেই আছে।
এদিকে লঙ্কান অধিনায়ক হাসারাঙ্গার লেগ স্পিনটা প্রায়শই হয়ে ওঠে কার্যকরী। তার স্পিন ঘূর্ণি বড় চ্যালেঞ্জই জানাবে বাংলাদেশকে। এদিকে লঙ্কান শিবিরে ব্যাট হাতে কুশল মেন্ডিসের সবচেয়ে পছন্দের প্রতিপক্ষ তো বাংলাদেশ। বিশ ওভারের ফরম্যাটে শরিফুল-তাসকিনদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তাই তাকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা করতেই পারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট মাঠের এই লড়াই যেন ক্রিকেটবিশ্বের নতুন ডার্বি। ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের ঠিক পরেই এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বাঘ-সিংহের এই এশিয়ান ডার্বি। শনিবার সকালে জয়ের শেষ হাসিটা কে হাসে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।