বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতিটা মোটেও ভালো ছিল না বাংলাদেশের। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হার ছাড়াও প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেও হেরেছিল শান্ত-সাকিবরা। তবে মূলপর্বে নিজেদের দারুণভাবে প্রমাণ করে চলেছেন নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ডালাস থ্রিলারে লঙ্কানদের ২ উইকেটে হারানোর পর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচেও জয়ের একদম দুয়ারে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এবার ডাচদের হারিয়ে সুপার এইটে এক পা রেখেই দিল শান্তর দল। কাগজে-কলমের হিসেবে কার্যত এখনো পরের রাউন্ডে নিশ্চিত না হলেও অনেকটাই কাছে চলে গেল তারা। তবে দেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা তো এখনই বাংলাদেশকে দেখছেন সুপার এইটে। দলকে জানিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছাও।
গত রাতে আর্নস ভ্যালেতে ডাচদের বিপক্ষে ২৫ রানে জেতে বাংলাদেশ। এই মাঠে পুরো এক দশক পর মাঠটিতে গড়াল কোনো ম্যাচ। এর আগে ২০১৪ সালে সবশেষ ম্যাচটিও খেলেছিল বাংলাদেশ, স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ থেকে বিশ্বকাপ দলে আছেন কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে সেন্ট ভিনসেন্টের স্টেডিয়ামটি ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে মাশরাফির। দলের জয় উৎসবের দিনে সেই স্মৃতিই তুলে ধরলেন ফেসবুকের এক পোস্টে।
এই মাঠে অধিনায়ক হয়ে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন মাশরাফি। তবে সেটি শেষ করে যেতে পারেননি। সাকিবের অধিনায়কত্বে পরে বাংলাদেশ ম্যাচটা জেতে। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে পোস্টটিতে মাশরাফি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অধিনায়ক হয়ে সেন্ট কিটসের (আসলে সেইন্ট ভিনসেন্ট) এই মাঠে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম। প্রথম ইনিংসে সম্ভবত ৩৮ বা ৪০ রান করেছিলাম। প্রথম ইনিংসে ৬ ওভার বল করে ইনজুরিতে পড়ি এবং পরে আর বল করা হয়নি। যদিও টেস্ট ম্যাচ আমরা জিতি এবং রিয়াদ সেকেন্ড ইনিংসে ৬ (৫) উইকেট পায়। এটাই আমার শেষ টেস্ট ম্যাচ ছিলো এবং আমি এরপর অপারেশন করে আবার প্রায় আট মাস পর দলে ফিরি। সেটা ছিলো ২০০৮ (২০০৯) সাল, এবং সেই ম্যাচে সাকিব পরে ক্যাপ্টেন হিসাবে দলের দায়িত্ব নেয়।’
মাশরাফি এরপরই আসেন ম্যাচ প্রসঙ্গে। ম্যাচে বোলাররা ছিলেন দারুণ ছন্দে। তবে নজর কেড়েছেন সাকিব। ফর্মহীন সময়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ৪৬ বলে ৬৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সঙ্গে রিয়াদ ও জাকেরের ক্যামিওর প্রশংসাও করেছেন মাশরাফি। ‘আজ সাকিব আবার পুরো দলের দায়িত্ব নিয়ে দারুণ একটা ইনিংস খেলেছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শেষ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করেছে। যার কারণে একটা বড় রান করা সম্ভব হয়েছে, সেই সাথে রিয়াদ এবং জাকিরের কথা বলতেই হবে। তারা দুজনও সিচুয়েশন অনুযায়ী যা দরকার ছিলো সেটাই করেছে।’
ম্যাচটিতে বরাবরের মতোনই বোলাররা ছিলেন দারুণ ছন্দে। এতে তাদের আলদা করে কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি মাশরাফি। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বোলিংয়ে পুরো দল হিসাবে আবার ও দারুণ পারফর্ম্যান্স। দিন দিন রিশাদ স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠছে, মুস্তাফিজ, সাকিব (তানজিম সাকিব) অসাধারণ। তাসকিনের কথা আসলেই আলাদা করে বলা উচিত, বিগত দুই বছরে এই ফরম্যাটে বুমরাহর পর সম্ভবত সে বিশ্বের সেরাদের কাতারে।’
মাশরাফি বাংলাদেশকে দেখছেন সুপার এইটেই। তার মতে আর নেই কোনো বাঁধা। তাই তো জানিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছাও। ‘এই বিশ্বকাপ সত্যিই আমাদের জন্য বিশাল সুযোগ। এতো স্লো উইকেটে খেলা যেটা আমরা সবসময় আশা করি। সেরা আটে স্বাগতম। এবার শুরু হবে আমাদের আসল বিশ্বকাপ। এই উইকেটে কেউ সেরা দল নয়, আমরা বিশ্বাস রাখতে পারলে দারুণ কিছু করা সম্ভব।’
শেষে আরও একবার সাকিব বন্দনায় মাতলেন মাতলেন। সঙ্গে অভিনন্দন জানালেন পুরো দলকে। ‘সাকিব কে টুপি খোলা সালাম,সেই সাথে পুরো দলকে অভিনন্দন। বিগ বিগ রিলিফ। অভিনন্দন বাংলাদেশ!’