‘ব্যাটিং রংবাজি’তে রংপুরের রাত!

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, চিটাগং থেকে | 2023-08-27 23:07:42

এই ম্যাচ তো আসলে প্রথম ইনিংসেই শেষ! রংপুর রাইডার্স ২৩৯ করার পরই ম্যাচের সম্ভাব্য ফল একপেশে হয়ে হেলে পড়লো। শেষ পর্যন্ত সেই হিসেবই রেখেই রংপুর ৭২ রানে ম্যাচ জিতলো। প্রথম দেখায় চিটাগং ভাইকিংসের কাছে হেরেছিলো রংপুর রাইডার্স। ফিরতি মোকাবেলায় জবাবটা ঠিকই দিলো তারা।

তাও আবার যেনতেন জবাব নয়; একেবারে চিটাগংকে রানবন্যায় ভাসিয়ে। ম্যাচ শেষে মুশফিক রহিম নিশ্চয়ই দুঃখ করবেন-টসে জিতেও এমন ব্যাটিং স্বর্গে আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ কেন নিলাম না!

ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড। বোলারদের পিটুনি দেয়ায় রেকর্ড-ব্যাটিং আনন্দের এমনসব অনেক রেকর্ড গড়ে রংপুর রাইডার্স এই ম্যাচে ‘ব্যাটিং রংবাজি’ দেখালো!
প্রথম ৬ ওভারে এলো ৬৯ রান। ১০ ওভারে গিয়ে দাড়ালো তা ১০৯। ১৫ ওভারের সময় স্কোরবোর্ডে জমা ১৮১ রান। ২০ ওভারে ২৩৯ রানে গিয়ে থামলো রংপুরের রান উৎসব। যে উৎসবে ব্যাট হাতে অ্যালেক্স হেলস করলেন ৪৮ বলে ১০০। রাইলি রুশোর অপরাজিত ১০০ পেলেন ৫১ বলে। ছক্কা-চারের ঝড়ে এই দুজন যা করলেন তাতে মনে হচ্ছিলো জহুর আহমেদ চৌধুরীর স্টেডিয়ামের মাঠ নয়, খেলছেন তারা বাড়ির আঙিনায়! চিটাগংয়ের তাবৎ বোলার তখন নেহাতই যেন গলির বোলার! ব্যাট হাতে হেলস ও রুশোর নিষ্ঠুরতার বলি হলেন খালেদ আহমেদ (৩ ওভারে ৫০), রবিউল হক (৪ ওভারে ৫৪) ও সিকান্দার রাজা (৪ ওভারে ৪৮)। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হেলস ও রুশোর মাত্র ৭৮ বলে ১৭৪ রানের বিশাল জুটি। চলতি বিপিএলে এখন পর্যন্ত যে কোন উইকেট জুটিতে এটি সর্বোচ্চ রান। সবমিলিয়ে রংপুরের ইনিংসে ছক্কার সংখ্যা ১৩। বাউন্ডারি ২১টি। অর্থাৎ মাত্র ৩৪ বলে বিগ শটে রান ১৬২!

এতো ভাই, ব্যাটিং মাস্তানি ছাড়া আর কি!

রান রেকর্ড উৎসবের এই ম্যাচে রংপুরের দুজন ব্যাটসম্যান করলেন ঠিক ১০০ করে রান। আর দুজন ফিরলেন ২ ও ১ রান করে। পরের এই দুজনের নাম ক্রিস গেইল ও এবি ডি ভিলিয়ার্স!
যে ম্যাচে গেইল ও ভিলিয়ার্সের যৌথ অবদান মাত্র ৩ রান, সেই ম্যাচেই রংপুরের মোট সংগ্রহ ২৩৯ রান। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে রংপুর গুটিয়ে গিয়েছিলো মাত্র ৯৮ রানে। আর মাঝপথে এসে এখন গড়লো সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

সামনের সময়টা এখন আরো রঙিন করার অপেক্ষায় রংপুর! আর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে চিটাগং ভাইকিংস নিজ মাঠের প্রথম ম্যাচে বড় গোত্তা খেলো। চিটাগং ইনিংসে মুশফিক রহিম আউট হওয়ার পর গ্যালারি ফাঁকা হতে শুরু করে। স্বাগতিকরা নিজেদের ব্যাটিং পর্বে আনন্দের এক টুকরো ঝলক দেখলো কেবল মুশফিক ও ইয়াসির আলীর ব্যাটে। শফিউলের এক ওভারে মুশফিকের তিন ছক্কা গ্যালারির দর্শকদের কিছুটা হাততালির সুযোগ দিলো। আর ইয়াসির আলীর ৩ ছক্কা ৬ বাউন্ডারিতে ৪৮ বলে ৭৮ রানের ইনিংস চিটাগংয়ের হারকে একটু দীর্ঘায়িত করলো মাত্র। ২৩৯ রানের জবাবে ১৬৭ রান তোলাকেই বড় সান্ত¦না মানছে চিটাগং।

ব্যাটসম্যানদের উৎসবের এই ম্যাচে বোলার হিসেবে একজন কিন্তু ঠিকই জিতলেন; মাশরাফি বিন মর্তুজা! ৪ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: রংপুর রাইডার্স: ২৩৯/৪ (২০ ওভারে, গেইল ২, হেলস ১০০, রুশো ১০০*, মিঠুন ১৫, ভিলিয়ার্স ১, নাহিদুল ১১*, রবিউল ১/৫৪, সিকান্দার ১/৪৮, খালেদ ০/৫০, আবু জায়েদ ২/৩৫)। চিটাগং ভাইকিংস: ১৬৮/৮ (২০ ওভারে, ইয়াসির ৭৮, মুশফিক ২২, মাশরাফি ৩/৩৪)। ফল: ৭২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: অ্যালেক্স হেলস

এ সম্পর্কিত আরও খবর