চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে বোলারদের নরক দর্শন!

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম থেকে | 2023-08-31 16:34:10

যার সঙ্গেই দেখা হচ্ছে তারাই জাহিদ রেজা বাবুকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন-‘বাবু ভাই, গুড উইকেট! ভাল কাজ দেখিয়েছেন। এই না হলো টি-টুয়েন্টির উইকেট!’

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু। ঢাকা ও সিলেটে বিপিএল যে উইকেট দেখেছে তার সংক্ষিপ্ত বর্ননা হতে পারে এমন-বল আটকে যায় যে উইকেটে!

আর তাই হাতে গনা কয়েকটি ম্যাচে ঢাকা ও সিলেট পর্বের বেশিরভাগ ম্যাচেই রানও আটকে গেছে অনেক নিচে। এসব উইকেটে টিকে থাকার চিন্তাই ব্যাটসম্যানদের বেশি করতে হয়েছে। কিভাবে উইকেট বাঁচানো যায়-সেই চিন্তায় চিন্তায় ২০ ওভার শেষ!

আর ঠিক উল্টো চিত্র চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এখানে টুর্নামেন্টের প্রথম দুদিনে যা হয়েছে তাকে এককথায় বলা যায়-রান উৎসব! সাগরিকরার এই মাঠে শুরুর চার ম্যাচেই রানের ফুল্গধারা। বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৩৯ রানের নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে এই স্টেডিয়ামে। এক ইনিংসে দুই সেঞ্চুরির ঘটনাও প্রথমবারের মতো দেখলো বিপিএল। ১৮০, ২৩৯, ১৯৫ ও ১৯৮-জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রথম চার ম্যাচে এবারের বিপিএল এই স্বাস্থ্যবান স্কোর দেখেছে।

উইকেটে ঘাস আছে। তবে সেই ঘাস বোলারদের জন্য নয়। ঘাসে পড়ে বল দ্রæত ব্যাটে আসছে। সমান উচ্চতা পাচ্ছেন বল। নিচু হয়ে আসা বলের দেখা মিলেনি এখনো। সুইংও খুব একটা নেই। বোলাররা এখানে পুরোদুস্তর বেচারা! এক ম্যাচে ৪ ওভারে রেকর্ড ৫৪ রান খরচার ‘দুর্ঘটনাও’ দেখেছেন এখানে বোলাররা। দুঃখী সেই বোলার চিটাগং ভাইকিংসের রবিউল হক। ইনিংসের প্রথম ওভারে ২২ রান খরচা করেছেন রাজশাহী কিংসের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বী। প্রতি ম্যাচে পেস বোলাররা বেদড়ক পিটুনি খেয়েছেন। স্পিনাররাও খুব যে দাপট দেখাতে পেরেছেন তা কিন্তু নয়। তবে বোলারদের এই তালিকায় ব্যতিক্রম যে নেই তাও কিন্তু নয়।

ব্যাটিং স্বর্গের এই উইকেটেও মাশরাফি বিন মর্তুজা এক ম্যাচে তিন উইকেট পেয়েছেন। শেষ ওভারে চমৎকার বোলিং করে রাজশাহীকে জয় এনে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে বেশির ভাগ বোলার এই উইকেটে বল করতে নামার আগে বুকে ফুঁ দিয়ে সাহস বাড়িয়ে নিচ্ছেন! প্রতিটি ডেলিভারির আগে আশঙ্কায় থাকছেন-এই বল কি গ্যালারিতে পড়ছে?

চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে শেষ ওভারে ম্যাচ জেতানো বোলার মুস্তাফিজুর রহমান ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে সেই শঙ্কার কথাই জানালেন-‘বল করার আগে আমার তো বুকের ভেতর উথাল পাথাল শুরু হয়ে গিয়েছিলো। বাড়ি (পিটুনি) খেলাম নাকি সেই চিন্তাই টেনশনে ফেলে দিচ্ছিলো!’

স্টেডিয়াম কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু উইকেট প্রসঙ্গে রবিবার দুপুরে এই প্রতিবেদককে জানালেন-‘এখানকার সবগুলো ম্যাচেই উইকেট এমনই হবে। বল ব্যাটে আসবে। কোন আনইভেন বাউন্স মিলবে না।’

অর্থাৎ এই মাঠের বাকি ম্যাচগুলোতেও তাহলে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গোদ্যানে বোলাররা নরক যন্ত্রণাই পাচ্ছেন!

এ সম্পর্কিত আরও খবর