রংপুরের ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যায় মাশরাফি

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 06:47:31

গেলবারের চ্যাম্পিয়ন অথচ এবার ফাইনালের আগেই বিদায়। তাও আবার ফাইনালে উঠতে একবার নয়, দুবার খেলার খেলার সুযোগ পেয়েও তা হারালো রংপুর রাইডার্স!

গ্রুপে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকায় দুটো ‘সেমিফাইনাল’ খেলার সুযোগ পায় রংপুর। সেই দুটোতেই হার। এবং টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। অথচ টুর্নামেন্টের প্রথমদিন থেকে হট ফেভারিট ছিলো মাশরাফি বিন মর্তুজার দল রংপুর রাইডার্স।

এত কাছে এসেও শিরোপা ধরে রাখতে না পারার কারণ কি? সেই হিসেব মেলাচ্ছে এখন রংপুর।

এবারের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের সফরের সময়কে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমত: এবি ডি ভিলিয়ার্সের আগমনপূর্ব সময়। দ্বিতীয়ত: ডি ভিলিয়ার্সের থাকাকালীন সময়। এবং তৃতীয়ত: ডি ভিলিয়ার্স চলে যাওয়ার পরের রংপুর রাইডার্স।

এবি ডি ভিলিয়ার্সের আগমনপূর্ব সময়: রংপুর রাইডার্স এই সময় ২টি ম্যাচ জিতে। হারে চারটি। মোটেও ভালো কোন সময় নয়। এর মধ্যে একেবারে ক্লোজ কয়েকটি ম্যাচও হারে। আবার বিশাল ব্যবধানে হারও রয়েছে।

ডি ভিলিয়ার্সের থাকাকালীন সময়: টুর্নামেন্টের মাঝপথে দলের সঙ্গে যোগ দেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। পূর্বচুক্তি অনুযায়ী খেলেন দলের হয়ে ছয়টি ম্যাচ। সেই ছয়টি ম্যাচেই রংপুর রাইডার্স জয়ী! শতভাগ সাফল্য!

ডি ভিলিয়ার্স চলে যাওয়ার পরের সময়: রংপুরকে শেষ চারে পৌঁছে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ফিরে যান ডি ভিলিয়ার্স। তাকে ছাড়া পরের দুটি ম্যাচে খেলে রংপুর। দুটিতেই হার। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়!

ডি ভিলিয়ার্সের আসা-থাকা-যাওয়া, খেলা এবং না খেলার এই সময়ের মধ্যেই নিহিত এবং নির্দিষ্ট হয়ে গেলো রংপুরের সাফল্য ও ব্যর্থতার সার্বিক চালচিত্র!

১৪ ম্যাচের মধ্যে জয়ী ৮ ম্যাচের বেশিরভাগেই সাফল্যের মুল কারিগর ছিলো রংপুর রাইডার্সের বিদেশি ব্যাটসম্যানরা। আরেকটু সুনির্দিষ্ট করে বললে রাইলি রুশো, অ্যালেক্স হেলস ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। ক্রিস গেইলও দলে ছিলেন। কিন্তু পারফর্ম করতে পারেননি। মুলত অ্যালেক্স হেলস ও এবি ডি ভিলিয়ার্স চলে যাওয়ার পর তাদের শূন্যস্থান আর পুরো করতে পারেনি রংপুর।

ব্যর্থতার অন্যতম কারণও সেটা। ব্যাটিংয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় বিদেশিদের ওপর নির্ভর ছিল রংপুর। বোলিংয়ে স্থানীয়দের শক্তি, আর ব্যাটিংয়ে বিদেশি; এই ফর্মুলা নিয়ে এবারের দল গড়ে রংপুর। কিন্তু দলের সবচেয়ে বড় সঙ্কট হলো কোন জেনুইন অলরাউন্ডার খুঁজে না পাওয়া। আর স্পিন বিভাগে ব্যর্থতা।

অধিনায়ক মাশরাফিও মানলেন সেই সত্যটা, ‘আমাদের যদি বিদেশি একটা অলরাউন্ডার থাকতো তাহলে সুবিধা হতো। যেমন ব্রাভো বা রাসেল। এমন একজন অলরাউন্ডার যার ব্যাটিং-বোলিং টপ কোয়ালিটির। ব্যাটিংয়ে আমাদের একটা স্লট ফাঁকা ছিলো। মেহেদি মারুফকে সাত-আট ম্যাচ সুযোগ দিয়েছি। অন্যান্য দলে তিসারা বা আফ্রিদি সাতে আটে নামছে। আমাদের দলে নিচের দিকে আমি সাতে আটে আমি বা ফরহাদ রেজা নামি। এটা বড় সমস্যা। এবি (ডি ভিলিয়ার্স) ও হেলস যতক্ষণ ছিলো, ততক্ষণ আমরা টপের ব্যাটিং ভাল ম্যানেজ করতে পেরেছি। কিন্তু ওরা চলে যাওয়ার সমস্যা হয়েছে। এবি চলে যাওয়ার পর ব্যাটিংয়ের ফাঁকা জায়গায় যারা খেলেছে তাদের কাছ থেকে আমরা সেরাটা পাইনি। তাছাড়া আমাদের স্পিন বিভাগ আমাদের সেরা সাফল্য এনে দিতে পারেনি। অন্যান্য দলের স্পিনাররা এই ধরনের উইকেট থেকে অনেক সাফল্য পেয়েছে। আমাদের সেটা হয়নি। এগুলোই আমাদের অভাব ছিলো।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর