মিঠুন-সাইফুদ্দিনের ব্যাটে বাংলাদেশের স্বস্তি

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 10:47:48

৯৬ রানে ৬ উইকেট নেই। সেখান থেকে শেষমেষ ২৩২ রান। ইনিংস শেষে স্কোরবোর্ডে এই সঞ্চয় দেখে স্বস্তি পেতেই পারে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের শুরুটা হলো ভয়াবহ! কিন্তু সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারলো দল ইনিংস শেষে। আর এই সংকট উত্তরণের পুরো কৃতিত্বের দাবিদার মিডলঅর্ডারে মোহাম্মদ মিঠুন এবং শেষের দুই ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

মিঠুনের ব্যাট হাসলো ৬২ রানে। ৮ নম্বরে নামা মেহেদি হাসান মিরাজের ২৬ এবং লেজের সারিতে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ৫৮ বলে ৪১ রানের ইনিংস দলের বাকি স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের লজ্জাই দিচ্ছে! এই তিনের ব্যাটিংই বাংলাদেশকে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বড় ধরনের সমস্যা থেকে বের করে আনলো।

টসে জিতে নেপিয়ারে ব্যাটিংয়ের শুরু হতে না হতেই বাংলাদেশের তিন উইকেট নেই! ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি গতির ঝড়ে উড়ে যায় বাংলাদেশের শুরুর রক্ষণ। ফুলার লেন্থে পড়া বলে খেলতে গিয়ে তামিম ইকবাল উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৫ রানে। ম্যাট হেনরির গতির কাছে পরাস্ত হয়ে লিটন দাস বোল্ড ১ রানে। মুশফিক রহিমকে উইকেটে আসতে হলো পাওয়ার প্লে’তেই। কিন্তু অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল ব্যাটে লাগিয়ে মুশফিকও বোল্ড সিঙ্গেল ডিজিটেই!

সৌম্য সরকার শুরুর ধাক্কা কিছুটা সামলে নিয়ে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন; আক্রমণই সেরা রক্ষণ! তবে সব বলে যে হাঁকাতে হয় না, সেটা বুঝলেন সৌম্য উইকেট খুঁইয়ে দিয়ে এসে! ২২ বলে তার ৩০ রানের চেয়ে উইকেটে টিকে থাকাই তার বেশি প্রয়োজন ছিলো। সেই কাজটাই করতে পারলেন না সৌম্য।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও উইকেটে জমে গিয়ে আউট হলেন। সাব্বির রহমান উইকেটে এসে দুটো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে উদ্ধারের ঘোষণা দিলেন। কিন্তু সেই তিনিও অতিরিক্ত উত্তেজনায় খেই হারিয়ে বসলেন যেন! লেগসাইডের বলে সুইপ করতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে বসেন। তড়িৎগতিতে উইকেটের পেছনে টম লাথাম যে সামান্য সুযোগ পান সেটাকেই কাজে লাগিয়ে স্ট্যাম্পিং করেন। 

২২.৩ ওভারে ৯৪ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দল তখন তাসমান সাগরে যেন লাইফ জ্যাকেট ছাড়া ভাসছে! প্রায় ডুবন্ত দলকে উদ্ধারের কাজে নামেন মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথমে মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে ৩৭ রানের ছোট জুটি গড়েন। দলকে অক্সিজেন যোগানোর আসল কাজটা হয় তার সাইফুদ্দিনের সঙ্গে অষ্টম উইকেট জুটিতে। এই জুটিতে দুজনে যোগ করেন ৮৪ রান।

ভবিষৎতের অলরাউন্ডার কোটায় খেলা সাইফুদ্দিন ঠিকই তার ব্যাটিং প্রতিভা দেখালেন এই ম্যাচে। মিঠুন খেললেন ৯০ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৬২ রানের ইনিংস। যাকে নিদ্বির্ধায় দলের মান বাঁচানো ইনিংস বলে রায় দেয়া যেতে পারে। ১৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। সাইফুদ্দিন খেললেন ৩ বাউন্ডারিতে ৫৮ বলে ৪১ রানের দারুণ কার্যকর ইনিংস।

দলের ইনিংস ২৩২ রানে পৌছানোর জন্য অতিরিক্ত খাতকেও একটা বাড়তি ধন্যবাদ দিতেই পারে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড অতিরিক্ত খাত থেকে ২৭ রান খরচা করে। যার ১৬টিই আবার ওয়াইড!

শুরুতে কিউইদের পেস ঝড় এবং শেষে স্যান্টারের স্পিন; এই সম্মিলিত আক্রমনেই বাংলাদেশের ইনিংস থেমে গেলো ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২৩২/১০ (৪৮.৫ ওভারে, তামিম ৫, লিটন ১, সৌম্য ৩০, মুশফিক ৫, মিঠুন ৬২, মাহমুদুল্লাহ ১৩, সাব্বির ১৩, মেহেদি হাসান ২৬, সাইফুদ্দিন ৪১, মাশরাফি ৯*, মুস্তাফিজুর ০, অতিরিক্ত ২৭, হেনরি ২/৪৮, বোল্ট ৩/৪০, ফার্গুসন ২/৪৪, স্যান্টার ৩/৪৫)।

এ সম্পর্কিত আরও খবর