ক্রাইষ্টচার্চেই শুরু হোক বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প!

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 15:39:27

হিসেবটা বাংলাদশের জন্য সহজ এবং সেই সঙ্গে কঠিনও!

সিরিজে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হবে। এটা হলো সহজ হিসেব। আর বিষয়টা কঠিন এই জন্য যে খেলাটা ক্রাইষ্টচার্চে। এবং সেখানকার ঠান্ডা আগের ম্যাচের ভেন্যু নেপিয়ারের চেয়েও বেশি। ম্যাচের দিন থাকবে ১৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসের গতিবেগ বেশি। উইকেটেও তেজি বোলারদের জন্য উত্তাপ বেশি। আর এমন কন্ডিশনের সঙ্গে ধাতস্ত হওয়ার অভ্যাস খুব একটা নেই বাংলাদেশ দলের।

হারলেই ওয়ানডে সিরিজের প্রত্যাশার বেলুনে ফুটো। তারওপর আবার এই বাড়তি শীত, বাতাসের তেজ, তেতে থাকা কিউই পেস বোলিং এবং ‘ঘুমিয়ে পড়া’ বাংলাদেশের ব্যাটিং-এসব কিছুকে আমলে নিলে ক্রাইষ্টচার্চের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাশরাফির দলকে এমনকিছু করতে হবে যাতে নিউজিল্যান্ডকে চমকে দেয়া যায়।

পিছিয়ে পড়েও লড়াইয়ে কিভাবে ফিরে আসতে হয় সেটা ভালই জানা বাংলাদেশের। সেই দৃঢ়তা নিয়ে ১৬ ফেব্রয়ারির ভোর ৪টায় শুরু হতে যাওয়া ক্রাইষ্টচার্চে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে লড়াইয়ের জন্য দলকে উজ্জ্বীবিত করছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। নেপিয়ারের ভুল ভ্রান্তি কাটিয়ে ক্রাইষ্টচার্চে কাটিয়ে উঠতে চায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের উইকেট যে একেবারে মাইনফিল্ড নয়, দক্ষতা দেখিয়ে খেলতে পারলে এখানেও যে আস্থা নিয়ে ব্যাটিং করা সম্ভব-তার সবচেয়ে বড় প্রমান তো দেখিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। শুরুর দিকের পাঁচ ব্যাটসম্যানদের দুই বা তিনজনের ব্যাট থেকে এমন দৃঢ়তা দেখাতে পারলে ক্রাইষ্টচার্চে ফিরে আসার লড়াইয়ের জয়গানের সুর নিয়েই ফিরতে পারে বাংলাদেশ।

এই ম্যাচ নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে খুব একটা বাড়তি কোন পরিকল্পনা করতে হচ্ছে না। আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই সম্ভবত নামছে তারা। দলের তিন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি ও লকি ফার্গুসন নিজেদের মধ্যে সাত উইকেট ভাগাভাগি করে নেন। বাংলাদেশের শুরুর ব্যাটিংয়ে ধস নামান নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। আর শেষের অংশ উপড়ে ফেলার দক্ষতা দেখান স্পিনার মিচেল স্যান্টার। আর ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে জেতা ম্যাচের স্কোরকার্ডই জানাচ্ছে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদেরও তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা।

নিউজিল্যান্ডের উইকেটে সুইং এবং সিম বোলারদের জন্য করার মতো অনেককিছু থাকে। তবে সেই সুবিধা কিভাবে কাজে লাগাতে হয়-সেটাও জানতে হয়। নেপিয়ারে সেই জানার বড় অভাব ছিলো বাংলাদেশের বোলিংয়ে।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে যে শুধু বাংলাদেশের ব্যাটিংই বেহাল ছিলো তা নয়, বোলিংয়েও সঙ্কট কম কিছু ছিলো না। যে কম্বিনেশন নিয়ে বাংলাদেশ এই দল গড়েছে তাতে বোলিংয়ের দুর্বলতা স্পষ্ঠত। পুরোদুস্তর পার্টটাইমার সাব্বির রহমানের লেগস্পিনের ৭ ওভার বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে হয়েছে। সত্যিকার অর্থে মাত্র চারজন জেনুইন বোলার নিয়ে এই ম্যাচে খেলতে নামে বাংলাদেশ! মাশরাফি, মুস্তাফিজ, মেহেদি ও সাইফুদ্দিন। কোটার বাকি ১০ ওভার করার জন্য সৌম্য, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমান!

এমন বোলিং কম্বিনেশনে একাদশ সাজানো বড় বিপদ। যদি জেনুইন বোলিং কোটায় খেলা কোন বোলার শুরুতেই ইনজুরিতে পড়তেন তখন কি হতো? অথবা একজন প্রধান বোলার শুরুতে প্রচুর রান খরচা করে ফেললে, তখন? বাধ্য হয়েই অধিনায়ককে তখন সেই খরুচে বোলারের হাতেই বল তুলে দিতে হতো!

অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের শূন্যস্থানটা বাংলাদেশের একাদশের অনেককিছুকেই এলোমেলো ও শূন্য করে দিচ্ছে! একাদশে রুবেল হোসেনকেও জায়গা দিতে পারছে না বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যান কমিয়ে রুবেলকে একাদশে নিলে ব্যাটিংয়ে কাঁপাকাপি যে আরো বাড়বে!

ক্রাইষ্টচার্চের বাতাসে শীতের পরশ। ৮ উইকেটে প্রথম ম্যাচে হেরে সিরিজে পিছিয়ে থাকা। পেস বোলিংয়ের সামনে অসহায়ত্ব। টপঅর্ডারের টালমাটাল ব্যাটিং। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং ফর্ম। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এখনো জয়হীন পরিসংখ্যান; ক্রিকেটীয় এমন আরো অনেককিছুতেই অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ।

কিন্তু পিছিয়ে পড়েও জিততে জানে বাংলাদেশ-সিরিজে সম্ভাবনা ও স্বপ্ন দেখাচ্ছে সেই লড়াইয়ের জেদ!

এ সম্পর্কিত আরও খবর