বাংলাদেশ ২৩৪, তামিম একাই ১২৬

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 08:35:38

খুব বেশিদুর যেতে পারলো না বাংলাদেশ। হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসে থামলো ২৩৪ রানে। দলের এই রানে একা তামিম ইকবালের রানই ১২৬। ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান এলো সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা লিটন দাসের ব্যাট থেকে। ব্যাটিং যা করার একাই করলেন ওপেনার তামিম ইকবাল। বাকিরা সেই ব্যর্থতার কাতারে।

হ্যামিল্টনের সবুজ উইকেটে টসে জিতে যথারীতি বোলিং বেছে নেয় নিউজিল্যান্ড। ঘাসে মোড়া তরতাজা উইকেটে দিনের প্রথম সেশন কিন্তু ব্যাট হাতে বাংলাদেশই শাসন করে।

শুরুতে সম্ভবত এমন পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিলো না নিউজিল্যান্ড। আক্রমণই সেরা রক্ষণ-সেই মনোভাব নিয়ে তামিম ইকবাল হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথমদিন ব্যাটিং করেন। তার সেই আক্রমণের তোড়েই হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথমদিনের প্রথম সেশন ব্যাটিং আনন্দেই কাটালো বাংলাদেশ। লাঞ্চে গেলো ২ উইকেট হারিয়ে ১২২ রান তুলে। যেখানে তামিম ইকবালের রানই ৮৬।

লাঞ্চের পরও তামিম তার সেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই করে গেলেন। ১৮ বাউন্ডারিতে ঠিক ১০০বলে সেঞ্চুরি পুরো হলো। কিন্তু উইকেটের অন্যপ্রান্ত থেকে সতীর্থদের সমর্থনই যে তেমন কিছু পেলেন না। নিউজিল্যান্ডের শর্ট বল কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে সেটাই যেন অজানা ছিলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। শীর্ষ ব্যাটসম্যানদের বেশিরভাগই আউট হলেন শর্ট বলে। টিম সাউদি ও নিল ওয়াগনার নিজেদের মধ্যে ৮ উইকেট ভাগাভাগি করে নিলেন। ওয়াগনার ৪৭ রান খরচায় ৫ উইকেট পান। সাউদির শিকার ৩ উইকেট। 

৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি পুরো করা তামিম ইকবাল শুরুর সেই মারকুটো ব্যাটিং স্টাইলই বজায় রাখলেন। ৬৪ রানে একবার ক্যাচ দিয়েছিলেন কিন্তু গ্রান্ডহোম ফিরতি সেই ক্যাচ হাতে রাখতে পারেননি। শর্ট বলেও তামিমের পরীক্ষা নিলেন টিম সাউদি ও নিল ওয়াগার। তবে নিজের ইনিংসকে একটু অন্যভাবে সাজানোর একটা তেজি মনোভাব নিয়েই এই ম্যাচে নেমেছিলেন তামিম। পুরোদুস্তর সেই ওয়ানডে মেজাজে ১০০ বলে সেঞ্চুরি পুরো তার। টেস্টে এটি তার নবম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে এটাই তামিম ইকবালের প্রথম সেঞ্চুরি। এর আগে নব্বই এর ঘরে পৌছেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করতে না পারার একটা দুঃখ ছিলো তার।

হ্যামিল্টনের প্রথম ইনিংসে দলের বাকিদের ব্যর্থতার মিছিলের দিনে তামিম ইকবাল ঠিকই নিজেকে আলাদা করে চেনালেন।

তামিম ইকবাল ও সাদমান ইসলামের ওপেনিং জুটিতে যোগ হয় ৫৭ রান। তাও আবার মাত্র ১০.২ ওভারে। ট্রেন্ট বোল্টের লেট সুইং ঠিক বুঝতে না পেরে ২৪ রানে বোল্ড হন সাদমান। মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিডলঅর্ডারের এই চারজনও নিউজিল্যান্ডের শর্ট বলে আউট হন। এই তালিকায় সৌম্য সরকারের আউটের ধরণটা ছিলো সবচেয়ে দৃষ্টিকটু। বল ছাড়বেন কি মারবেন এই দোটানায় পড়ে ব্যাটকে পেছনে টেনে নিলেন। কিন্তু গ্লাভস আড়াল করতে পারলেন না। গ্লাভসে ছোঁয়া লেগে বল উইকেটকিপারের হাতে জমা পড়লো। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের শুরুতে স্লিপে সহজ একটা ক্যাচও ফেলে দিলেন সৌম্য!

লাঞ্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সুখের সময় কাটলো। দ্বিতীয় সেশনে হারালো আরো ৫ উইকেট। আর চা বিরতির খানিকবাদেই ৫৯.২ ওভারে ২৩৪ রানে প্রথম ইনিংস শেষ। পুরো ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের বোলিং এমনই ডিসিপ্লিন যে একটা অতিরিক্ত রানও তারা দেয়নি!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ১ম ইনি: ২৩৪/১০ (৫৯.২, তামিম ১২৬, সাদমান ২৪, মুমিনুল ১২, মিঠুন ৮, সৌম্য ১, মাহমুদউল্লাহ ২২, লিটন ২৯, মেহেদি ১০, আবু জায়েদ ২, খালেদ ০, এবাদত ০, অতিরিক্ত ০, ওয়াগনার ৫/৪৭, সাউদি ৩/৭৬)।

এ সম্পর্কিত আরও খবর