সুন্দর শুরুর বাজে শেষে হতাশ তামিমও

ক্রিকেট, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 13:47:18

শুরুটা ভাল হচ্ছে না। তাই দল ভাল করতে পারছে না। ওয়ানডে সিরিজ জুড়ে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের এই অভিযোগ শুনতে হচ্ছিলো। আর টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথমদিনে এসেই যখন টপঅর্ডারে বাংলাদেশ ভাল রান পেল তখনই মাঝের এবং শেষের সারির ব্যাটসম্যানরা গড়িয়ে পড়লেন। আধো ঘুমের ঝিমুনি ব্যাটিং করে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলেন বাকি ‘ঘুম’ পুরো করতে!

অথচ তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি এবং ২ উইকেটে ১২২ রানের সংগ্রহ হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে অনেক দুরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। সেই স্বপ্নকে হতাশায় পরিণত করলেন দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা। আর তাই ২১ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ১২৮ বলে ১২৬ রান করেও দিন শেষে তামিম ইকবাল হাসতে পারছেন না। দলের ব্যর্থতায় হতাশ তিনিও-‘এই রকম একটা ভাল শুরু পাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার ছিলো। টেস্টের প্রথমদিন, সবুজ উইকেট। বাতাসে সুইং। এমনসব কন্ডিশনে সাধারনত দেখা গেছে শুরুতে আমরা বেশ কয়েকটা উইকেট হারায় ফেলি। যেটা কিন্তু আগে আমাদের সঙ্গে ঘটেছেও। কিন্তু এখানে এত সুন্দর শুরুর পরেও সেটাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে না পারার একটা হতাশাও তো অবশ্যই আছে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে না পারায় পুরো দল কিছুটা হতাশ। কারণ আমরা সবাই জানতাম একটা সময় এই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তো আমাদের হাতেই ছিলো।’

সেই নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হওয়ার হতাশা সেঞ্চুরিয়ান তামিমের একটু বেশি। এত ভাল পারফরমেন্স করার পরও আনন্দ হচ্ছে না। দল সঙ্কটে থাকলে ব্যক্তিগত সুখও যে তখন অসুখের কাঁটা!

হ্যামিল্টনের উইকেট সবুজ হলেও এটাকে মাইনফিল্ড বলার উপায় নেই।

-তাহলে কোথায় ভুল করলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা? উইকেটে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানো সেঞ্চুরিয়ান তামিম সেই ব্যাখায় বললেন-‘প্রথম ইনিংসে আমার মনে হয় আমরা ভাল করতে করতে হঠাৎ করে ভুলটা করে ফেলেছি। নিল ওয়াগনার বল হাতে কি করবে সেটা তো আমাদের জানাই ছিলো। তাকে তো আমরা আগেও দেখেছি। খেলেছি। প্রশ্ন হলো তার বিপক্ষে কোন ব্যাটসম্যান কিভাবে খেলবে এটা তো সেই ব্যাটসম্যানদের ওপর নির্ভর করে। কেউ তার বলে শটস খেলতে পছন্দ করে। কেউ মাথা নিচু করে ছেড়ে দেয়। আমি তো তার শর্ট বল ছেড়ে দিয়েছি। আমি বলবো ওরা যে খুবই ভাল কিছু বোলিং করেছে তাও কিন্তু না। আমাদের আউট গুলো দেখলেই বোঝা যায় আমরা খুব যে ব্রিলিয়ান্ট কোন ডেলিভারিতে আউট হয়েছি তা নয়। ওরা যে পরিকল্পনা করেছিলো সেই পরিকল্পার ফাঁদে আমরা পা দিয়েছি। ভুল শটস খেলেছি। সাফল্যটা ওদের হাতে তুলে দিয়েছি।’

দলের ২৩৪ রানের মধ্যে তার একার রানই ১২৬। শুরু থেকেই যে মার মার কাট কাট ব্যাটিং করেছিলেন, শেষ পর্যন্ত সেই স্টাইলই বজায় রাখলেন। হাফসেঞ্চুরি এলো মাত্র ৩৮ বলে। সেঞ্চুরি পাক্কা ১০০ বলে। তাহলে কি মেরে কেটে ব্যাট করবেন বলে আগেই বিশেষ কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেমেছিলেন তামিম? এই প্রশ্নের উত্তরে তামিমের স্বলাজ জবাব-‘আসলে খুব বিশেষ কোন পরিকল্পনা ছিলো না। তবে পরিস্কার একটা চিন্তা ছিলো লম্বা সময় ধরে ব্যাট করে যেতে হবে। মারার বল হতে মারতে হবে। আমার আওতার মধ্যে পাওয়া বলে ঠিকমতো শটস খেলতে পারছিলাম। ইনিংসের শুরুতে বেশ কিছু বাউন্ডারি পেয়ে যাই আমি। উইকেট সবুজ তবে ব্যাটিংয়ের জন্য খুবই ভাল উইকেট এটা। এই উইকেটে আমাদের আরো বেশি স্কোর করা উচিত ছিলো। সারাদিন ব্যাট করতে পারলে আমাদের স্কোর ৩০০ বা ৩৫০ রান হতে পারতো। এই উইকেটে সেটাই হতো ভাল স্কোর।’

হতাশার সঙ্গে আফসোসের সুরও স্পষ্ঠ! তামিম এবং সেই সঙ্গে পুরো দলের!

এ সম্পর্কিত আরও খবর