ওয়েলিংটনে ‘অন্যকিছু’ অপেক্ষা করছে!

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 14:35:49

হ্যামিল্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে ছিলো পুরো সবুজ উইকেট। কোনটা মাঠ আর কোনটা উইকেট-এই পার্থক্য নির্ণয় করাটা দুরূহ হয়ে পড়ছিলো। কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হলো সবুজ সেই উইকেটে কিন্তু পেস বোলারদের চেয়ে দাপট বেশি দেখিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা এবং সেটা উভয় দলেরই!

সবমিলিয়ে হ্যামিল্টন টেস্টের তিন ইনিংসে সবুজ উইকেটে রান উঠেছে ১,৩৭৮। উভয় পক্ষের মিলিয়ে ম্যাচে সেঞ্চুরি হয়েছে ছয়টি! এর মধ্যে আবার একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে! নিউজিল্যান্ডের পেস বোলাররা সাফল্য পেয়েছেন, তবে ম্যাচ শেষে নায়ক ব্যাটসম্যানরাই!

সেটা যেমন জয়ী দলের, ঠিক তেমনি বিজিত দলের জন্যও!

নিউজিল্যান্ড ইনিংস ব্যবধানে হ্যামিল্টনে জিতলেও দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং প্রতিরোধ তাদের কিছুটা হলেও ঘাবড়ে দিয়েছিলো। সহজ সলিড ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ঘুরে দাড়াতে পারে। বড় ইনিংস খেলার দক্ষতা রাখে-সেই প্রমান পেয়েছে নিউজিল্যান্ড হ্যামিল্টনে। তার তাই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ওয়েলিংটনে ভিন্ন কৌশল নিয়ে নামছে নিউজিল্যান্ড।

ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ পার্কের উইকেটও সাধারণত ব্যাটসম্যানদের সহায়কই হয়ে থাকে। এই মাঠে সর্বশেষ দুটি টেস্টেও বড় রানই উঠেছিলো। তবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও বাংলাদেশ যদি মনে করে থাকে তেমন ব্যাটিং উইকেটই তাদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে; তবে সেটা হবে বড় ভুল!

নিশ্চিত জানুন ওয়েলিংটনের উইকেটে দলের পেস বোলারদের জন্য যথেষ্ট তেজ রাখছে নিউজিল্যান্ড। এই টেস্টের একাদশে নিউজিল্যান্ড যদি কোন স্পিনার না রাখে তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই। চলতি মৌসুমে পেছনের তিন টেস্টে নিউজিল্যান্ড সবমিলিয়ে ৫২ উইকেট শিকার করেছে। যেখানে স্পিনারদের সঞ্চয় শূন্য! সব উইকেট পেস বোলাররা নিয়েছেন। হ্যামিল্টন টেস্টেও একাদশের একমাত্র স্পিনার টড অ্যাস্টল কোন প্রভাব রাখতে পারেননি। বরং একাদশে একজন পেসার বাড়ালে শীর্ষ তিন পেসারের বোঝাটা একটু কমে। সেই চিন্তা এবং পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের চিরকালীন দুর্বলতা এই দুইয়ের যোগে ওয়েলিংটন টেস্টে নিউজিল্যান্ড অলআউট পেস আক্রমণের একাদশে সাজানোর পরিকল্পনার পথেই হাঁটছে।

ওয়েলিংটনে টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট এবং নেইল ওয়াগনার-নিউজিল্যান্ডের এই তিন পেসারের রেকর্ডও বেশ। সাউদি এখানে ১১ ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন ৩৪টি। বোল্টের শিকার ৮ ম্যাচে ৩৩ উইকেট। আর ‘বাউন্সার ম্যান’ খ্যাত নেইল ওয়াগনার ৭ টেস্টে ২৮ উইকেট। এদের সঙ্গে অলরাউন্ডার কোটায় খেলা কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমও পেস বোলিংয়ে দক্ষ।

ওয়েলিংটনের উইকেটও সবুজ ঘাসের। আর এই সবুজের পুরোটাই কিন্তু পেস বোলারদের সজীব পারফরমেন্সের জন্য তৈরি করছে নিউজিল্যান্ড। গ্র্যান্ডহোম, সাউদি, বোল্ট ও ওয়াগনার-এই চার নিউজিল্যান্ড পেসারের প্রত্যেকের ওয়েলিংটনে টেস্ট খেলার বেশ ভাল অভিজ্ঞতা আছে। এই চারজন এখানে সবমিলিয়ে খেলেছেন ৩২ টেস্ট। আর এই ভেন্যুতে এই চারজনের সম্মিলিত উইকেট শিকারের সংখ্যা ১০১।

এবার একটু নজর ফেরাই বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগের দিকে। ‘বিশ্রাম’ শেষে ওয়েলিংটন টেস্টের একাদশে ফিরছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দলে যে কয়েকজন পেস বোলার রয়েছেন তাদের কারোরই ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ পার্কে খেলার অভিজ্ঞতাই নেই!

তাহলে হিসেব কি দাড়ালো? শূন্যের সঙ্গে ১০১ এর লড়াই!

এ সম্পর্কিত আরও খবর