কেউ ৩০০ করলে করুক, আমরাও করে ফেলবো: সাকিব

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-13 19:25:37

একটু পেছনে ফিরে যাই। চার বছর আগে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সেই বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে সবাই বাংলাদেশ দলের সাফল্য কামনা করলেন। তবে সেসময় কেউ জোর গলায় বলেননি-আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবো। ম্যাচ বাই ম্যাচ সামনে বাড়ার কথা বলেই সম্ভাবনার নিক্তিটা সেবার স্থির করেছিলেন সবাই।

কিন্তু সবাইকে চমকে সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছে গেলো ঠিকই!

এবার ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের মাঠে যাওয়ার আগে স্বপ্ন-সাফল্যের ঘুড়িকে আকাশের অনেক উঁচুতে উড়িয়েছে বাংলাদেশ। খেলতে চাই সেমিফাইনালে। শুধু বলার জন্য বলা নয়। স্বপ্ন সফল করে দেখানোর জেদ নিয়েই বলেছে বাংলাদেশ।

মাত্র একযুগ আগে বিশ্বকাপের যে দল ছিলো শুধু অংশগ্রহণকারী একটা দল। সেই দল এখন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে। বাস্তবতার সঙ্গে এই স্বপ্নের যোগসূত্র কি? অথবা ঠিক কোন ক্রিকেটীয় যুক্তি নিরিখে বাংলাদেশ দলের স্বপ্ন অতো বেশি সবুজ?

উত্তরটা শুনি বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে-‘আমাদের এবারের দলটা অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের দারুণ একটা সংমিশ্রণে গড়া। দলের আমরা পাঁচ সিনিয়র আছি, যারা প্রায় ২০০টি করে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছি। এদের প্রত্যেকেই অনেক বেশি অভিজ্ঞ। তাছাড়া দলে তরুণ যারা আছে তাদেরও বেশির ভাগ ক্রিকেটারের ৬০ থেকে ৭০টির মতো ওয়ানডে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বিশ্বকাপের মতো ভীষণ চাপের একটা টুর্নামেন্টে এই অভিজ্ঞতার মিশ্রণ আমাদের অনেক সহায়তা করবে। চাপের মুখে কিভাবে সামাল দিতে হয়, সেটা অভিজ্ঞজনই ভালো জানে। ম্যাচে ভালো ফল বের করে আনার জন্য সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে বেশ।’

বাংলাদেশ দলের প্রাণভোমরা বলা হয় সাকিব আল হাসানকে। দলের অন্যতম নিউক্লিয়াস! ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিং বা ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিস্ক দিয়ে দলকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছেন।

-তো দলে নিজের এই ভুমিকা নিয়ে সাকিব নিজে কি ভাবেন?

সাকিব জানালেন-‘দলে আমাকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হয়। শুধু ব্যাটিং বা বোলিংয়েও নয়, নেতৃত্বের দায়িত্বও নিতে হয়। দলকে সহায়তার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সেটা আমি করি, করে যাবো।’

বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে আয়ারল্যান্ডে তিনজাতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচে জিতে এসেছে বাংলাদেশ। ফাইনালে বড় টার্গেট টপকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বহুজাতিক কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ট্রফি জিতেছে বাংলাদেশ। সেই টুর্নামেন্ট শেষ করে একটু আগেভাগে ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশ লেস্টারশায়ারে চলে আসে। সেখানে সবমিলিয়ে পাঁচদিনের মতো ক্যাম্প করে। নিবিড় অনুশীলনে অংশ নেয়।

সেই প্রসঙ্গে সাকিব বলছিলেন-‘আমাদের প্রস্তুতিটা বেশ ভালো হয়েছে। সবার আত্মবিশ্বাস বেশ উচুঁতে আছে। তবে সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে বিশ্বকাপ কিন্তু বিশ্বকাপই। বড় চ্যালেঞ্জের টুর্নামেন্ট এটা।’

বলা হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ হবে স্কোরবোর্ডে ৩০০ রান তোলা এবং ৩০০ প্লাস রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার টুর্নামেন্ট। এই বিষয়ে সাকিব যা বললেন তাকে বলে টেনশনহীন উত্তর-‘সবগুলো দলই খুব ভালো পর্যায়ে আছে। যে কোনো দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। এটাও জানি যে কোনো দলকে ৩০০ রানের নিচে আটকে রাখা কঠিন হবে। তবে আমাদের বিপক্ষে কোনো দল যদি এরচেয়ে বেশি রান করে ফেলে তাহলেও আমি কিছু মনে করবো না। কারন আমরাও ৩০০ রান তুলতে পারি। আর রান যাই তুলি না কেন, সেটা রক্ষার করার মতো বোলিংও আমাদের আছে!’

শুধু কথার কথা নয়, আত্মবিশ্বাসের স্ফুরণ ছটা প্রতিটা বাক্যে! বিশ্বাসে!

এ সম্পর্কিত আরও খবর