এই ম্যাচ জিততেই তো এসেছে বাংলাদেশ, সমস্যা হলো আফগানিস্তানও তাই!

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম, সাউদাম্পটন, ইংল্যান্ড থেকে | 2023-08-31 20:32:13

ইংল্যান্ডের যে হোটেলেই উঠছি, দামি বা কম খরুচে যাই হোক কেন-রুমের দরজার পেছনে লেমিনেট করে সতর্ক সঙ্কেত ঝোলানো- কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না!

বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ডু’স এবং ডোন্ট-এর এমন একটা তালিকা বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডসও লিখে নিয়ে এসেছেন তার ডায়েরিতে। নির্দেশাবলিগুলো ঠিক করা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য।

কোচ ও বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের সেই তালিকায় ডোন্ট এর ঘরে তালিকার এক নম্বরে বড় হরফে লেখা-‘আফগানিস্তানের কাছে হারা যাবে না!’

বড় স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবতার সঙ্গে চলতেই বেশি ভালোবাসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা। অসম্ভব বলে কোনো শব্দই নেই কাছে। আর তাই ‘ইম্পসিবল’ শব্দকে মাশরাফি দেখেন ‘আই এম পসিবল’ হিসেবেই। দুই ম্যাচে জয়। তিন ম্যাচে হার। এক ম্যাচ বৃষ্টিতে বাতিল হওয়ার পরও বাংলাদেশ বাকি যে তিন ম্যাচকে ঘিরে এখনো সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছে তার মুল উপকরণের নাম-বুকভরা সাহস ও সামনে আসা লড়াই জেতার জেদ!

বিশ্বকাপ শুরুর আগে মাশরাফির হিসেবটা ছিলো এমন-র‌্যাঙ্কিংয়ের নিচুতে থাকা তিন দলকে হারাতে হবে। এবং উপরে থাকা অন্তত দুটো দলের বিপক্ষে জিততেই হবে! এমন একটা তালিকা তৈরি করে প্রতিপক্ষের নামের পাশে লেখা হয়-‘মাস্ট উইন ম্যাচ’!

আফগানিস্তান ম্যাচ বাংলাদেশের সেই তালিকারই। পরিস্কার নির্দেশাবলি এই ম্যাচ জিততেই হবে। বাংলাদেশ দলের মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন সেই নির্দেশাবলিই যেন এই ম্যাচের ৪৮ ঘন্টা আগে আরেকবার পড়ে শোনালেন-‘প্রতিপক্ষ যখন আফগানিস্তান, তখন আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হারলে অনেকে হয়তো মেনে নেন। কিন্তু আফগানিস্তানের কাছে হারলে সেটা হবে না। সবাই প্রত্যাশা করে যেন এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আমরা জিতি। প্রত্যেকটা ম্যাচই আমাদের কাছে সমান। সব ম্যাচেই জেতার জন্যই নামা হয়। তারওপরও এই ম্যাচটিতে আমাদের আরো সতর্ক থাকা উচিত।’

শনিবার ভারতের বিপক্ষে আফগানিস্তানের লড়াই আরেকবার জানিয়ে দিলো কেন ২৪ জুন, সোমবারের এই ম্যাচে বাংলাদেশের বাড়তি সতর্কতা নিয়ে নামা উচিত? চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম পাঁচ ম্যাচে আফগানিস্তান যা খেলেছে সেই পারফরমেন্স তাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির মতোই নাজুক। কিন্তু ষষ্ঠ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে এসে ম্যাচের শেষ ওভার পর্যন্ত আফগানিস্তান যে লড়াকু এবং পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলেছে-তাতেই বোঝা যাচ্ছে; বড় বিপদজনক দল এই আফগানিস্তান।

সোমবারের এই ম্যাচে খেলার আগে একটা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে আফগানিস্তান। সাউদাম্পটনের এই মাঠ, এই উইকেটের সঙ্গে হাতে-কলমে তাদের পরিচয়টা হয়ে গেছে। তাও আবার ভারতের মতো শক্তিমান দলের বিপক্ষে খেলে, জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার ম্যাচে। সেই ম্যাচ ১১ রানে ভারত জিতলেও আফগানিস্তানের আক্রমণাত্মক বোলিং এবং ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পিত ব্যাটিং জানাচ্ছে-সামান্য সুযোগ নিতে পারলেই এই আফগানিস্তান ম্যাচের রং বদলে দেয়ার ওস্তাদি জানে।

দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ২৪ জুন, সোমবারের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অতি অবশ্যই ফেভারিট।

তবে ছোট্ট একটা সমস্যা হলো-বাংলাদেশের মতো আফগানিস্তানও এই ম্যাচকেই যে ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচ হিসেবে ভাবছে!

এ সম্পর্কিত আরও খবর