বিশ্বকাপের ‘উত্তাপ’ বাড়াতে রাস্তায় পতাকা বিক্রেতারা

, খেলা

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-30 07:44:09

ঢাকা: ফুটবল বিশ্বকাপ যতো এগিয়ে আসছে বাড়ছে উত্তেজনা। ফুটবলপ্রেমীরা শুরু করে দিয়েছেন দিনক্ষণ গণনা। গোটাবিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে এক মাসের এ রোমাঞ্চের জন্য অধির আগ্রহে বাংলাদেশি সমর্থকরাও। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে ১৮তম বিশ্বকাপ ফুটবল আসর নিয়ে বিশ্লেষণ, তর্ক। বলা চলে, ফুটবল জ্বরে ধীরে ধীরে আক্রান্ত হচ্ছে সমর্থকরা।

বিশ্বকাপের উত্তেজনার পারদে ‘উত্তাপ’ বাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছে পতাকা, জার্সি ও ব্যাজ বানানোর কারিগররা। তাদের বানানো পতাকা বিক্রি শুরু হয়েছে ঢাকার মিরপুর, কাওরান বাজার, ফার্মগেট ও গুলিস্তান এলাকার রাস্তায় রাস্তায়।

রাজধানীর ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের অনেকেই পেশা বদলে শুরু করেছে ফেরি করে পতাকা বিক্রি। তারা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কিংবা পথে হেঁটে হেঁটে লাঠিতে পতাকা বেঁধে কাঁধে করে বিক্রি করছে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর জাতীয় পতাকা।

বাসা-বাড়ির ছাদ কিংবা দোকানঘরে উড়ানোর জন্য পছন্দের পতাকা সংগ্রহ করছে ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা। এখনও অবশ্য পতাকা কেনার উন্মাদোনা পুরোপুরি শুরু হয়নি। তবে শিশুদের আবদার রক্ষার জন্য অনেক বাবা পতাকা কিনছেন। তবে কিশোরদের মধ্যে পতাকার কেনার প্রবণতা বেশি।

ফুটবল বিশ্বকাপে বাংলাদেশ না থাকায় অংশ নেওয়া দলগুলোকে সাপোর্ট করে সমর্থকরা। তবে অন্য দলের সার্পোর্টার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও দেশের সমর্থকরা মূলতঃ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল এ দু'ভাগে বিভক্ত। অন্য দেশের সমর্থন তুলনামূলক একটু কম।

তাই পতাকা বিক্রেতাদের কাছে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার পতাকাই বেশি। তবে জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইংল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেরও পতাকা পাওয়া যায় তাদের কাছে।

কাওরান বাজারের রাস্তায় পাতাক ফেরি মিন্টু। পোস্তগোলার একটি কারখানা থেকে পাইকারি দরে পতাকা এনে বিক্রি করেন তিনি।

মিন্টু বার্তা২৪.কমকে জানান, বিশ্বকাপের এখনও বাকি প্রায় এক মাস। তাই পুরোপুরি জমেনি পতাকা বিক্রি। আর ১০-১৫ দিন পরে জমবে ব্যবসা। তবে যারা আগে আগে এ ব্যবসায় আসবে তাদের লাভ বেশি হবে। বাজারে বিক্রেতা বেশি হলে পতাকার দাম কমবে।

মিন্টুর মতো ফার্মগেটে পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায় সৈয়দ হককে। তার কাছে রয়েছে নানা সাইজের পাতাকা, তন্মধ্যে পাঁচফুট সাইজের পতাকা অন্যতম। সাইজের ওপর ভিত্তি করে পতাকার দাম নির্ধারত হয়। ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৪শ’ টাকা পর্যন্ত ফেরি করে বিক্রি হয় এসব পতাকা।

বাড়ির ছাদে ব্রাজিলের লাগাবেন বলে পতাকা কিনছেন আতিক। জানালেন, ‘আমি আমার পুরো পরিবার ব্রাজিলের সমর্থক। নেইমার পছন্দের খেলোয়াড়। এজন্য আমি ব্রাজিলের পতাকা কিনছি।’

বিশ্বকাপ জ্বরে মানুষ এতটাই আক্রান্ত হয় যে, পছন্দের দলের শতশত ফুট পতাকা অর্ডার দিয়ে বানায় তারা। অনেকে আবার বাড়ির রঙ করেন পতাকার রঙে।

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পতাকা ও জার্সি ঢাকার বিভিন্ন অলিগলিতে তৈরি হলেও এসবের মূল কারখানা পুরান ঢাকার কদমতলী, পোস্তগোলা, ইসলামপুর ও কেরানীগঞ্জ।

বিক্রেতারা জানান, অন্য সময় দেশের পতাকা বিক্রি বা অন্য পণ্য বিক্রি করলেও ফুটবল বিশ্বকাপের সময় লাভজনক হওয়ায় পতাকা, জার্সি ও ব্যাজ বিক্রি করেন।

কেমন লাভ জানতে চাইলে বিক্রেতা সৈয়দ হক বলেন, বিভিন্ন দামের পতাকা রয়েছে। লাভ বলে গেঞ্জির ব্যবসা ছেড়ে পতাকার ব্যবসায় নেমেছি। গত বিশ্বকাপে পতাকা ও জার্সি বিক্রি করেছি। পুরো ফাইনাল খেলা পর্যন্ত মোট ৭০ হাজার টাকার মতো আয় হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর