সাকিব, রশিদ দুজনই মানছেন- চট্টগ্রাম টেস্টে পার্থক্য গড়বেন ব্যাটসম্যানরা

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, চট্টগ্রাম থেকে | 2023-08-31 04:44:24

এই সিরিজে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম আলোচিত বিভাগের নাম-ব্যাটিং! আফগানিস্তান এখানে পা রাখার আগ থেকেই বলাবলির বিষয় শুধু একটাই- বোলিং। আরেকটু সুনির্দিষ্ট করে বললে-স্পিন!

চট্টগ্রাম টেস্টে ১৫ জনের বাংলাদেশ দলে তিনজন পেসারও আছেন। আফগানিস্তানের পেস বোলিংও বেশ আলোচিত। সিরিজে পেসাররাও আছেন লাইমলাইটে। আলোচনায় ছিলেন না শুধু ব্যাটসম্যানরা।
 
তবে ম্যাচের আগে ব্যাটসম্যানদেরই আলোয় আনলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান-‘মানছি উভয় দলের স্পিন শক্তি বেশ ভালো। দেশের মাটিতে তো আমরা ভালোই বোলিং করেছি। আমাদের স্পিনাররা যখনই সুযোগ পেয়েছে, তাদের পছন্দমতো উইকেট যখনই পেয়েছে, সবসময়ে ভালো পারফরমেন্স করেছে। ওদেরও (আফগানিস্তান) কোয়ালিটি স্পিনার আছে। তবে আমার মনে হয় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে, এখানে দুই দলের ব্যাটিংটাই।’

অধিনায়কের সেই চিন্তাই দেখা গেলো দলের অনুশীলনেও। ব্যাটিং পর্বে বেশ মনোযোগী হলেন সব ব্যাটসম্যানরা। নেট বোলারকে ডেকে নির্দিষ্ট জায়গায় বল ফেলতে বললেন মাহমুদউল্লাহ। পাশের নেটেই সাকিবও লম্বা সময় ধরে ঘাম ঝরালেন। টেস্ট স্পেশালিষ্ট মমিনুল হক ব্যাটিংয়ের ভুলত্রুটিগুলো সামলে নিলেন। ওপেনার সাদমান ইসলাম নেটে সবচেয়ে বেশি সময় নিয়ে অনুশীলন করলেন। ব্যাট হাতে ফর্মটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না মোহাম্মদ মিঠুনের। মূল নেটে বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী ব্যাটিং করার পর চলে গেলেন প্রেসবক্স প্রান্তের কোনায়। বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ সোহেল পৃথক সেই নেটে মিঠুনকে একের পর এক বল ছুঁড়ে গেলেন। মিঠুন এই পর্বে কোনো শটস খেলার চেয়ে পা বাড়িয়ে বল ডিফেন্সের দিকেই বেশি মনোযোগী হলেন।

শুধু বুধবার নয়, মঙ্গলবার ৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের নেট সেশনেও ব্যাটসম্যানদেরই বেশি পরিশ্রমী মনে হলো। অনুশীলন নেটে সাকিব আল হাসান ও মুশফিক রহিমের ব্যাটিংকে টেস্টের ব্যাটিং অনুশীলনের তুলনায় একটু বেশি আক্রমণাত্মক মনে হলো।

-তবে কি আফগান স্পিনের বিপক্ষে রক্ষণ নয়, পাল্টা আক্রমণ কৌশলই বেছে নিচ্ছে বাংলাদেশ?

এই প্রশ্নে সাকিবের ব্যাখ্যাটা এমন-‘অনেক সময় শটস খেলেই ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাস অনুভব করে। শট ঠিক মতো লাগলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত একজন ব্যাটসম্যান কখনোই সেট না যতক্ষণ না পর্যন্ত সে রান করছে। আপনি যদি ১০০ বলে ১০ রান  করেন তখনো আপনি সেট নন। কিন্তু ১০ বলে ৪০ বা ৫০ রান করলে তখন কিন্তু সেট। তাই ব্যাট হাতে শুধু পড়ে থাকলে চলবে না। রান করতে হবে। উইকেটে শুধু থাকাই এখনকার টেস্ট ক্রিকেট নয়। আগে ছিলো যে টিকে থাকাটাই শুধু গুরুত্বপূর্ণ। এখন থাকার সঙ্গে রানও করতে হয়। দুটি দিকই থাকতে পারে। একেকজনের জন্য একেকটি গুরুত্বপূর্ণ।’

আফগান অধিনায়ক রশিদ খানও এই টেস্টে তার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে কার্যকর পারফরমেন্সের অপেক্ষায়। বললেন-‘টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন ফরম্যাটের খেলা। আমরা জানি আমাদের এখানে কেমন ক্রিকেট খেলতে হবে। দলের ব্যাটসম্যানরা সেই প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে। এই টেস্টে ব্যাটসম্যানদের বড় একটা পরীক্ষা হবে। যারা নার্ভ ধরে রাখতে পারবে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখতে পারবে। তারাই হাসছে জয়ের হাসি।’

আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরাও মারকাটারি ব্যাটিং ভালোবাসে। তবে দুদিনের অনুশীলন ম্যাচে আফগান ব্যাটসম্যানরা জানান দিয়েছে- ধৈর্য্য ধরেও খেলতে পারে তারা।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকেও তেমনই ‘ধৈর্য্যের সঙ্গে ধারালো’ ব্যাটিং পারফরমেন্সই আশা করছেন অধিনায়ক সাকিব-‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের সামনে এই টেস্টে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আমি আমার ব্যাটসম্যানদের ওপর পুরো আস্থা রাখছি। প্রস্তুতি আমাদের বেশ ভালোই হয়েছে। এখন শুধু মাঠে ওই অনুশীলনের প্রতিফলন দেখাতে পারলেই আমরা ভালো কিছু করতে পারবো।’

-ভালো কিছু!

সাকিবের কাছে চট্টগ্রাম টেস্টে ভালো কিছুর একটাই অর্থ-জয়!

এ সম্পর্কিত আরও খবর