আফগান আগুনে পুড়ল বাংলাদেশ

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, চট্টগ্রাম থেকে | 2023-08-26 22:55:55

সারাদিনের বৃষ্টিতে বাংলাদেশ ম্যাচ প্রায় বাঁচিয়েই ফেলেছিলো। কিন্তু শেষ বিকালে বৃষ্টি থামল। রোদ উঠলো। খেলা হলো সামান্য সময়। সেই অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ বাংলাদেশের বাকি চার উইকেট। আফগানিস্তান ম্যাচ জিতলো ২২৪ রানে।

প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করলো আরো পঁচা ব্যাটিং! এবার ইনিংস শেষ ১৭৩ রানে।

সারাদিন যদি খেলাটা হতো তাহলে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জটা আরো বড় থাকতো। কিন্তু শেষ বিকালের সামান্য সময়ের জন্য খেলার সময় যখন বরাদ্দ হলো তখন হার বাঁচানোর সুবিধা বাংলাদেশের পক্ষেই গেলো। অথচ সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারলো না বাংলাদেশ।

রশিদ খান ও জহির খানের স্পিনের কাছে শেষ বাংলাদেশের শেষ বিকালে চট্টগ্রাম টেস্ট হেরে গেলো বাংলাদেশ অল্পতেই!

শেষ বিকালে যখন খেলা শুরু হলো প্রথম বলেই সাকিব আল হাসান আউট। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে পড়া বলে ব্যাট চালিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক উইকেট ছুঁড়ে দিলেন।

শেষ বিকালে বাংলাদেশের পতনের সেই শুরু। খানিকবাদে মেহেদি হাসান মিরাজ আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের গুগলি বুঝতেই পারলেন না। পরিস্কার এলবি। কিন্তু রিভিউ নিলেন মিরাজ। রিভিউটাও নষ্ট করলেন।

তাইজুল ভুল আম্পায়ারিংয়ের শিকার। বল তার ব্যাটে লাগলো। কিন্তু আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে জানালেন এলবি। কিছু করার নেই। কারণ ততক্ষনে রিভিউও শেষ। সৌম্য সরকার শেষ উইকেটে নাঈম হাসানকে নিয়ে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেবেন-এমন একটা আশা তখনো ছিলো বাংলাদেশ শিবিরে। কারণ খেলার সময় তো তখন অল্প বাকি। কিন্তু রশিদ খান যে এই ম্যাচ জেতার পণ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তাকে যে থামাতে পারলো না পুরো বাংলাদেশ মিলেও!

প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানে ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৯ রানে ৬ উইকেট। ম্যাচে ১১ উইকেট। সঙ্গে একটি হাফসেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই টেস্ট ম্যাচকে পুরোপুরি নিজের নামে করে নিলেন আফগান অধিনায়ক।

বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম ও শেষদিনের খেলার আড়াই সেশন নষ্ট হলো। মাঝে একবার খেলা হলো মাত্র ১৩ বলের। তারপর আবার লম্বা সময় ধরে খেলা বন্ধ, বৃষ্টির দাপটে।

সকালের সেশনটা গেলো বৃষ্টি দেখতে দেখতে। খেলা শুরু হলো ঠিক দুপুর ১টায়। কিন্তু মাত্র ৭টি পরেই ফের বৃষ্টি। ওই বৃষ্টি যখন থামলো তখন ঘড়িতে খেলা শেষের ঘন্টা প্রায় বেজে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত মাঠকর্মীদের অক্লান্ত চেষ্টায় দিনের খেলা মাঠে গড়ালো দ্বিতীয়বারের মতো। খেলার সময় নির্ধারন করা হলো ১ ঘন্টা ১০ মিনিট। ওভারের হিসেবে ১৮.৩ ওভার।
সামান্য এই সময়ও টিকে থাকতে পারলো না বাংলাদেশ। গুটিয়ে গেলো এই সময়ের ৬৬ মিনিটের মধ্যে। ওভারের হিসেবে টিকলো ১৫.১ ওভার। অর্থাৎ দিনের খেলার আর মাত্র ২০ বল বাকি ছিলো। কিন্তু ব্যাট হাতে সেটুকু সময়ও পার করতে পারলো না বাংলাদেশ। গুটিয়ে গেলা ১৭৩ রানে।

মাঠে নামার জন্য সেকি তাড়া আফগানিস্তানের! দুপুরে লম্বা সময় ধরে মাঠ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ শেষে আম্পায়াররা তখনো খেলা কখন শুরু হবে- সেই সিদ্ধান্তও দেননি। কিন্তু সাদা জামায় পুরোদুস্তর ফিট হয়ে মাঠে নেমে পড়লো তারা। এই ম্যাচ জেতার জন্য জেদ, প্রতিজ্ঞা এবং নিজেদের উজাড় দেয়ার যে স্পৃহা দেখালো আফগানিস্তান; মূলত তার কাছেই উড়ে গেলো বাংলাদেশের বাহাদুরি!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: আফগানিস্তান ৩৪২/১০ (১১৭ ওভারে, রহমত শাহ ১০২, আসগর আফগান ৯২, আফসার ৪১, রশিদ খান ৫১, তাইজুল ৪/১১৬) ও ২৬০/১০ (৯০.১ ওভারে। বাংলাদেশ ২০৫/১০ ও ১৩৬/৬ ( ৯০.১ ওভারে, ইব্রাহিম জাদরান ৮৭, আসগর আফগান ৫০, আফসার ৪৮, রশিদ খান ২৪, সাকিব ৩/৫৮) বাংলাদেশ ২০৫/১০ (৭০.৪ ওভারে, লিটন ৩৩, মমিনুল ৫২, মোসাদ্দেক ৪৮*, রশিদ খান ৫/৫৫, নবী ৩/৫৬) ও ১৭৩/৬ (৬১.৪ ওভারে, সাদমান ৪১, মুশফিক ২৩, সাকিব ৪৪, সৌম্য ১৫ , রশিদ ৬/৪৯)। ফল: আফগানিস্তান ২২৪ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: রশিদ খান
 
 

এ সম্পর্কিত আরও খবর