ইরান ১: মরক্কো ০
ম্যাচে প্রায় সবকিছুই হল। মাঝমাঠ থেকে দারুণ সমঝোতায় বিল্ডআপ। পোস্টে শট। ষ্ট্রাইকারদের চমৎকার আক্রমণ। এবং গোলপোস্টে গোলকিপারের দুর্দান্ত সেভ। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমাট ম্যাচ। ফাউলও কম কিছু হল না। রেফারিকে হলুদ কার্ডও বের করতে হল বেশ কয়েকবার।শুধু হচ্ছিল না গোল! গোল হওয়ার মতো পরিস্থিতি এবং ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েকবার। কিন্তু ফিনিসিংটা যে হচ্ছিল না। নিশ্চিত গোলশূণ্যের দিকে যাচ্ছিল ইরান ও মরক্কোর ম্যাচটা।
কিন্তু ম্যাচের অতিরিক্ত সময় সব হিসেব বদলে দিল ইরানের একটি ফ্রিকিক। ৯৪ মিনিটে নেয়া এহসান হাজি সাফির ফ্রিকিক থেকে ইরানের কেউ নন, নিজেদের জালে গোল করে বসেন মরক্কোর আজিজ! গোলপোস্টের দিকে উড়ে আসা ফ্রিকিক ক্লিয়ার করার জন্য হেড দেন আজিজ, কিন্তু বল কর্নারের দিকে না গিয়ে হেডের সুইংয়ে মরক্কোর জালে আশ্রয় নেয়! আত্মঘাতী গোল! আর এই গোলেই মরক্কোর হার। ম্যাচের এই একটি মাত্র ভুলে গোটা ম্যাচে মরক্কোর লড়াইয়ের কৃতিত্ব হারিয়ে গেল!
ফুটবল আসলে এমনই-একটি ভুলেই সর্বনাশ!
মরক্কো ও ইরান দুই দলের খেলার ষ্টাইলটা প্রায় একই। রক্ষণের ওপর জোর দিয়ে মাঝে সাজে আক্রমণে উঠে আসা। তবে যেহেতু উভয় দলই সমান শক্তির তাই ম্যাচে এগিয়ে থাকার মেজাজ ঠিকই দেখাল দুদল। আর সেটা করতে গিয়ে মাঝে সাজে খেলোয়াড়রা মেজাজ হারালেন। তাতে ফাউলের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ল। আর সেই জেরে কেউ মাঠ ছাড়লেন বুকে চোট নিয়ে, কেউ মাথা চেপে ধরে।
গোলের জন্য উভয় দলের খেলোয়াড়রা পরিশ্রম করে গেলেন পুরো ৯০ মিনিট জুড়েই। কিন্তু দুই প্রান্তেই যে গোলকিপাররা পণ করে নেমেছিলেন কোন গোল হতেই দেবেন না। ৭৯ মিনিটের সময় ইরানের ডি বক্সে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় নিচু হয়ে হেড করে বলটা বাড়িয়ে দেন সামনে দাড়ানো হাকিম জিইয়েচের দিকে। অ্যাজাক্সে ফুটবলার হাকিম সেই বলে বাম পায়ে প্রচন্ড জোরে শট নেন। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে হাতের তালু লাগিয়ে কর্নারের বিনিময়ে নিশ্চিত গোলটা রক্ষা করেন ইরানের গোলকিপার আলীরেজা বেইরানভ্যান্ড।
আজমাউনের স্পেস কমিয়ে দেয়ার জন্য গোলকিপার মুনীর মোহাম্মদি পোস্ট ছেড়ে সামনে বাড়েন। একটু বেশি তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে তাল সামাল দিতে পারেননি আজমাউন। বলটা চিপ করে গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে তুলে দিলে ফাঁকা পোস্টে নিশ্চিত গোল। কিন্তু তিনি সেটা না করে শট নেন। বাম দিকে হাত বাড়িয়ে আজমাউনের সেই শট অবিশ্বাস্য কায়দায় ঠেকিয়ে দেন মুনীর। পুরোটা সময় জুড়ে প্রতিপক্ষের স্ট্রাইকারদের সব আক্রমণ দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ঠেকিয়ে দিলেও মুনীর মোহাম্মদিকে পরাস্ত করলেন খোদ তার নিজ দলের খেলোয়াড়!