মরক্কো-উরুগুয়ে টু রাশিয়া

, খেলা

মোহাম্মদ আলী, অতিথি লেখক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 14:51:55

মস্কো (রাশিয়া) থেকে: পথে বের হলেই রঙ-বেরঙের মানুষের দেখা পাচ্ছি। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর সারা পৃথিবীকে নিয়ে এসেছে পুতিনের দেশে।
 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার্থে রাশিয়ায় এসেছি কয়েক বছর হলো। নদী আর উদ্যানময় রাজধানী মস্কোকে এতো বর্ণিল সাজে আর বহুবর্ণা মানুষের ভিড়ে আগে দেখিনি। বিশ্বকাপ শুরুর পর পুরো শহরের চেহারাটাই পাল্টে গেছে।
 
বিশ্বকাপের দলগুলোর নিজ দেশ থেকে সদলবলে সমর্থকরা এসেছেন একদার লাল বিপ্লবের এই দেশে। এভিনিউ, রেল স্টেশন, বাসস্টান্ডে তাদের উচ্ছ্বল উপস্থিতি চোখে পরে।
 
ভাষা বুঝি না লোকগুলোর। প্রতীক ও পতাকা দেখে চেনা যায় তাদের পরিচিতি। সুদূর উত্তর আফ্রিকার আটলান্টিকের তীর থেকে এসেছেন মরক্কোর সমর্থকরাও। উদ্দেশ্য নিজ দেশকে সমর্থন জানানো। কি অপার দেশপ্রেম! দেখে মুগ্ধ হই।
 
মরক্কোর লোকদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি নি। কথা বলা হয় না। ওরা ইংরেজি এক বর্ণও জানে না। ওদের ভাষা আরবি। ফ্রান্সের শাসনে থাকায় কিছুটা ফ্রেঞ্চ জানে। আমার আরবি বা ফরাসি জ্ঞান একেবারেই নেই। তবু আমাদের মিলিত হতে অসুবিধা হয় নি। আনন্দে জাপটে ধরে ছবি তুললো মরোক্কান সমর্থকরা।
 
উরুগুয়ের ছোট্ট শহর সালতো থেকে মস্কো এসেছেন ওসকার ও ডানিয়াল। নিজ দেশের কট্টর সমর্থক তারা। মোটামুটি ইংরেজি জানে বলে ওদের সাথে টুকটাক কথা হলো। নিজ দেশ উরুগুয়েকে তারা মনে করে বিশ্ব ফুটবলের খানদানি সদস্য। প্রথম বিশ্বকাপ যে তাদের দেশ উরুগুয়ে জয় করেছিল, সে কথা গর্বের সঙ্গে বার বার বলতে ভুলে নি। স্বদেশপ্রেমে মাতোয়ারা হয়ে আছেন দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলপ্রেমী লোকগুলো।
 
মস্কোভা নদী তীরের পার্কগুলোর বেঞ্চে, রেড স্কোয়ারের সুবিশাল চত্বরে, ক্রেমলিনের আশেপাশে ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরতে দেখি নানা দেশের নানা বর্ণ ও ভাষার মানুষদের। নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, কেউই বাদ যায় নি। এসেছে বাচ্চা-কাচ্চাসহ পুরো পরিবার। খেলার ফাঁকে দেখছেন জার ও লেনিনের স্মৃতিময় প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মস্কো শহরের নানা দ্রষ্টব্য স্থান। 
 
ফুটবল উন্মাদনা মনে হয় বিশ্বের মানুষের মধ্যে কিছুদিনের জন্য স্বস্তি আর ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি করছে। মহাবিশ্বের মহাজাতির বিচিত্র সদস্যদের এনে দাঁড় করিয়েছে পাশাপাশি। প্রেমে, মিলনে, মৈত্রীতে একাকার করেছে ধরিত্রীর অনিন্দ্য-সুন্দর মানব বংশকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর