সমস্যায় সাকিব, আইসিসির বিচারিক প্রক্রিয়াটা কেমন?

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-09-01 17:10:44

ক্রিকেটারের নাম: সাকিব আল হাসান।

অভিযোগ: ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পাওয়ার পর সেটা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু) কে জানাননি। তথ্য গোপন করেছেন। রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইসিসির বিচারিক প্রক্রিয়া কি? সেই বিষয়ে জানতে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনের মুখোমুখি হয়েছিল বার্তাটোয়েন্টিফোর। অনেককিছু বিষয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য না করে বিসিবির প্রধান নির্বাহী যা জানিয়েছেন তার সারাংশ এমন।

কোন খেলোয়াড় বা ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত একক কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি কোন সুনির্দিষ্ট বিধি ভঙ্গের কারণে রিপোর্টেড হয় তখন সেটার একটা তদন্ত হয়। আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু) সেটার তদন্ত করে। আকসু সেই তদন্ত করে যদি দেখে যে এই বিষয়ের যথাযথ প্রমাণ আছে তাদের কাছে তখন তারা সেটা আইসিসির আইন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে। আইসিসির আইন বিভাগ তখন আরেকদফা নিজস্ব কায়দায় এটার তদন্ত করে এবং যখন নিশ্চিত হয় যে সন্দেহাতীতভাবে কাউকে ধরা যাবে তখন তারা সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। এই চার্জ গঠন করার সময় সেই ক্রিকেটারের সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানায়। সেই সঙ্গে আইসিসির আইন বিভাগ তাদের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার দুটো পদ্ধতি আছে। অভিযুক্ত খেলোয়াড়কে তখন জিজ্ঞেস করা হয় তুমি কি এই অভিযোগের বিষয়ে সম্মত কিনা। অভিযুক্ত ক্রিকেটার বা কর্মকর্তা যদি তখন সেই অভিযোগ মেনে নেয় তখন একটা সুনির্দিষ্ট সমঝোতার মধ্যে তার শাস্তির ঘোষণা করা হয়। আর যদি অভিযুক্ত ক্রিকেটার বা কর্মকর্তা যদি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার না করেন তবে পুরো বিষয়টা ট্রাইব্যুনাল পর্যন্ত গড়ায়।

পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া ও শুনানি সেখানেই চলে।

প্রশ্ন হলো সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ড কখন এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে পারবে?

উত্তর হলো-আইসিসি যখন অভিযুক্ত ক্রিকেটার বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবে তখন সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ড এই বিষয়ে জানতে পারবে। অথবা অভিযুক্ত ক্রিকেটার বা কর্মকর্তা যদি নিজেই স্বপ্রনোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানায়।

সাকিবের বিরুদ্ধে এই অভিযোগের বিষয়টি কেমন করে বিসিবি জানলো সেই প্রশ্নের উত্তরে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এটা নিশ্চিত যে শুধু সাকিবের কাছ থেকে নয়, বিসিবি এই অভিযোগের সারাংশ আইসিসির কাছ থেকেও জানতে পেরেছে।
এই বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান-‘আমরা এখন পর্যন্ত এই অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আইসিসির কাছ থেকে কিছু জানতে পারিনি।’

-তাহলে পুরো বিষয়টি কিভাবে এখন প্রকাশ্যে এল?

বিসিবির প্রধান নির্বাহীর উত্তর-‘ আমরা ধারণা করছি পুরো বিষয়টা পাবলিক ডোমিনে আসার এসেছে কারোর মাধ্যমে। এই বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু আমাদের জানা নেই।’

-সাকিবের বিরুদ্ধে ক্রিকেট জুয়াড়ির কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাব গোপন করার অভিযোগ যে উঠেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর সাকিবও এই বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত আইনি লড়াইয়ে যাবেন না সেটাও প্রায় নিশ্চিত। সেজন্যই বলা যায়-আইসিসি এই বিষয়ে সাকিবের শাস্তির বিষয়টি খুব দ্রুতই জানিয়ে দেবে। এবং সেটা আজ-কালের মধ্যে।

বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কথায়ও সেই সুরই মিলল-‘যদি এটা আইনি লড়াইয়ে যায় তবে রায় জানার জন্য সময় লাগবে। আর সমঝোতার মাধ্যমেই অভিযুক্ত নিজের দোষ স্বীকার করে নেন তাহলে রায় ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই জানা যাবে।’

আইসিসির আনা এই অভিযোগে ফেঁসে যাওয়ার পর সাকিব মাত্র কিছুদিন আগে বিষয়টি বিসিবির নজরে আনেন। বিসিবি সেই অনুযায়ী কাজ করছে। এখন এই বিষয়ে বিসিবির কাজ একটাই-সাকিবের শাস্তিটা যাতে একেবারে ন্যূনতম হয়, সেজন্য কাজ করা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর