ফেভারিট স্টাইলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্স, পেরুর বিদায়

, খেলা

এম. এম. কায়সার ,স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-10 14:11:03

জিতলেই দ্বিতীয় রাউন্ড। ফ্রান্সের জন্য হিসেবটা ছিল এমন। আর টিকে থাকতে হলে পেরুকেও এই ম্যাচ জিততেই হবে। দুই দলের এই হিসেবের ম্যাচে ‘অংক’ মেলালো ফ্রান্স। ১-০ গোলে ম্যাচ জিতে উঠে গেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে। গোলদাতা কাইলিয়ান এমবাম্পে। ৩৪ মিনিটের সময় পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোলটা পায় ফ্রান্স। ডি বক্সের ভেতর কাটাকুটি করে জোরালো শট নেন অলিভার জিরুদ। তার শট পেরুর এক ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে দিক বদলায়, তাতেই ধোঁকা খান সামনে বেরিয়ে আসা পেরুর গোলকিপার প্রেদো গালাস। বল তার মাথার ওপর দিকে ধীরে ধীরে পোষ্টের দিকে যেতে থাকে। এমবাম্পে দৌড়ে এসে সেই বলকে ফাঁকা জালে পাঠান। বিশ্বকাপে ফ্রান্সের সবচেয়ে কমবয়সী গোলদাতার নাম এখন কাইলিয়ান এমবাম্পে। বয়সটা মনে রাখেন, কুইজের কাজে আসতে পারে-১৯ বছর ১৮৩ দিন।

ফ্রান্সের এই জয়ের সঙ্গে ‘সি’ গ্রুপের পুরো হিসেবও পুরো হয়ে গেল। ডেনমার্ক আগেই টানা দুই ম্যাচ জিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে নাম লিখিয়েছিল। সেই তালিকায় তাদের সঙ্গী হল ফ্রান্স। আর বেচারা পেরু ও অস্ট্রেলিয়ার শেষ ম্যাচটা  নেহাৎ একটা অংশগ্রহনের ম্যাচ হয়ে রইল!

গোল শোধের জন্য বিরতির পর আক্রমণের মেজাজে নামে পেরু। সান্তামারিয়া ও ফারফানকে বদলি হিসেবে নামিয়ে আক্রমণভাগে শক্তি বাড়ায় তারা। গোল শোধের জন্য বেশ কয়েকবার সম্মিলিত চেষ্টা চালায় পেরু। লং বলের আক্রমণের ফ্রান্সের ডিফেন্সকে অস্থির করে তোলে। আক্রমণের পরিকল্পনা ভাল ছিল কিন্তু ফিনিসিং যে ছিল না। আর তাই ফাইনাল থার্ডে এসে পেরুর সব আক্রমণ শুধু সমর্থকদের আফসোস বাড়ায়!

অভিজ্ঞতা থেকেই ফ্রান্স জানতো শুরুতে গোল পেয়ে গেলে ম্যাচের অর্ধেকটা সেখানেই জেতা হয়ে যাবে। তাই কিক অফ হতেই ফ্রান্স গোলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই ম্যাচে একাদশে ফিরেন অলিভার জিরুদ। আগের ম্যাচে ইনজুরির জন্য বদলি হিসেবে খেলেছিলেন ফ্রান্সের এই ষ্ট্রাইকার। আক্রমণভাগে জিরুদ এবং তাকে দুই ফ্ল্যাঙ্ক থেকে বল যোগান দেন গ্রিজম্যান, এমবাপ্পে ও পল পগবা। ফ্রান্সের এই চারজন মাঝমাঠ থেকে ডি বক্স পর্যন্ত পেরুর ফুটবলারদের অস্থির করে রাখেন। ম্যাচের প্রথম মিনিট পেরুর গোলকিপার পেদ্রো গালাসেকে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়।

ম্যাচের ১২ মিনিটের সময় ৩০ গজ দুর থেকে পল পগবার আচমকা শট সামান্য দুরুত্বের জন্য পেরুর পোষ্ট পেরিয়ে যায়। ১৪ মিনিটের সময় এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হারায় ফ্রান্স। গ্রিজম্যানের কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ছোট বক্সের মধ্যে অনেক উচুঁতে লাফিয়ে উঠে হেড করেন ডিফেন্ডার ভ্যারান। কিন্তু তার হেড দুর পোষ্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।

আফসোসে পুড়ে ফ্রান্স। আর ভাগ্যকে ধন্যবাদ দেয় পেরু। গোল করার সুযোগ যে ফ্রান্স পায়নি তা নয়। বরং তাদের সুযোগটাই অপেক্ষাকৃত বেশি সহজ। ৩০ মিনিটের সময় পেরুর অধিনায়ক পাউলো গুয়েরেরো ফাঁকায় দাড়ানো অবস্থায় বল ডি বক্সে বল পেয়ে যায়। বা পায়ে জোরে শটও নেন তিনি। সামনে শুধু ফরাসি গোলরক্ষক লরিস দাড়িয়ে। কিন্তু সোজা লরিস বরাবর শট নিয়েই ভুলটা কনে গুয়েরেরো। লরিস বলটা ঠেকিয়ে দেন। ফ্রান্সের জার্সি গায়ে নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নামা লরিস দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখেন।

ফেভারিটদের হতাশ এবং অপেক্ষায় রাখা রাশিয়া বিশ্বকাপে একমাত্র ব্যতিক্রম ফ্রান্স। টানা দুই ম্যাচে জিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে আসা ফ্রান্সের গলায় কেবল ফেভারিট তত্ত্বের জয়গান! 

এ সম্পর্কিত আরও খবর