মেসি'র আর্জেন্টিনা দলের সাথে বাংলাদেশে একদিন!

, খেলা

মায়াবতী মৃন্ময়ী, অতিথি লেখক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 07:43:39

 

ফুটবলের রাজপুত্র স্বয়ং মেসি'র সঙ্গে আস্ত একটি দিন কাটানো কতটুকু রোমাঞ্চকর, ভাবা যায়! আর সেটি যদি হয় খোদ বাংলাদেশের মাটিতে, তাহলে তো কথাই নেই! সত্যিই এমনটি ঘটেছিল। বার্তা২৪.কমকে আর্জেন্টিনা দলের সাথে বাংলাদেশে পুরো একদিনের স্মরণীয় অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ক্রীড়া সাংবাদিক চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কাজল।

বিষয়টি একটু পেছন থেকে বলেন তিনি। ম্যারডোনা যেদিন বিশ্বকাপ খেলা শুরু করেন, সেদিন থেকে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখা শুরু হয়েছিল ক্রীড়া সাংবাদিক চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কাজলের।

সেদিনের খেলার রোমাঞ্চকর স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, 'ম্যারাডোনা বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচটি খেলেছিলেন বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ১৯৮২ সালের ১৩ জুন। সে খেলায় আর্জেন্টিনা ০-১ গোলে হেরে যায়। রাত জেগে সে খেলাটি দেখেছিলাম। তখন ঘরে ঘরে ডিস আর শত শত টিভি চ্যানেল ছিল না। বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রের মাধ্যমে একমাত্র বাংলাদেশ টেলিভিশন খেলাটি সরাসরি দেখিয়েছিল।'

চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কাজল জানান, 'বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ভ্রান্ত ও পক্ষপাতিত্বপূর্ণ নীতির জন্য দীর্ঘদিন ক্রীড়া সাংবাদিকতা করেও বিশ্বকাপ ফুটবল আসরে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে ২০১১ সালে মেসি ও আর্জেন্টিনার বাংলাদেশ সফরের সময় স্প্যানিশ দোভাষী হিসাবে বাফুফেকে সহযোগিতা করেছিলাম।'

চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কাজল বার্তা২৪.কমকে আরো জানান, 'ঢাকায় অনুষ্ঠিত আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচটির কয়েকদিন আগে আর্জেন্টিনার লিয়াজো অফিসারের দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় গাফফার আমাকে এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে অনুরোধ করেন। কারণ আর্জেন্টিনার তখনকার কোচ সাবেল্লা ছাড়া আর কেউই ইংরেজি জানতেন না, জানতেন স্প্যানিশ।'

তিনি বলেন, 'নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটির আগের দিনটিতে আমি সারাদিন আর্জেন্টিনা দলের সাথে ছিলাম। ঢাকা শেরাটনে সেদিন অনেককে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের অটোগ্রাফ নিয়ে দিয়েছি। কারণ পুলিশের কড়া নিরাপত্তার জন্য কেউই খেলোয়াড়দের কাছাকাছি আসতে পারছিল না। কিন্তু আমি নিজে কারও অটোগ্রাফ নিই নি বা কারো সাথে ছবি তুলিনি।'

'কেন?' জানতে চাইলে, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কাজল বলেন, 'কারণ এটি তো আমার দল নয়। আমি যে আর্জেন্টিনা দলটি চিনতাম, সে দলে ছিলেন ম্যারাডোনা, কেম্পেস,  আর্ডিলাস, তারিনতিনি, ডিয়াস, বুরুচাগা, বাতিস্তুতা, ওর্টেগার মত খেলোয়াড়রা। কিন্তু এ দলটির একমাত্র মেসি ছাড়া আর কাউকেই তো আমি চিনি না। হিগুয়েন ও আগুয়েরোর মত কয়েকজনের নাম জানতাম। কিন্তু কোনটা কে আমি জানি না।'

তিনি জানান, 'বিকেল বেলা খেলোয়াড়দের একত্রে হোটেলের নাশতার টেবিলে দেখে এক সময় মনে হয়েছিল, এটি কি সত্যিই আর্জেন্টিনা দল? এরাই কি ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল? হ্যা, এটিই আর্জেন্টিনা। এরাই বিজয়ীদের উত্তরসুরী।'

'আসলে মানুষের সব আকর্ষণের সাথে সময়ের একটি ব্যাপার থাকে। যাই হোক, আর্জেন্টিনা দলটির সাথে দোভাষী হিসেবে কাজ করা আমার জন্য ছিল নতুন অভিজ্ঞতা, যদিও সময়মত এসএসএফের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় আমি দলের সাথে মাঠে ঢুকতে পারিনি, প্রেস বক্সে বসেই খেলাটি দেখতে হয়েছিল', বলেন চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কাজল।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর