প্রথম দিনেই ম্যাচে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ- মানছেন মুমিনুল

ক্রিকেট, খেলা

আপন তারিক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ইন্দোর (ভারত) থেকে | 2023-08-28 05:20:53

এমনিতেই তিনি স্বল্পভাষী। এক দুই শব্দে বাক্য শেষ করতে পারলেই যেন বাঁচেন! কিন্তু এখন তো অধিনায়ক, অনেক জবাবদিহি করতে হবে। বৃহস্পতিবারই অধিনায়কত্বের অভিষেক হলো মুমিনুল হকের। একইসঙ্গে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পথচলা শুরু হলো বাংলাদেশের। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সেই লড়াইয়ের প্রথম দিনটা হতাশাতেই কাটল অতিথিদের।

দিন শেষে অবশ্য সব ব্যর্থতা নিজের কাঁধে তুলে নিতে চাইলেন মুমিনুল। বিশেষ করে টস জিতে বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাটিং নিয়েও কিছুই করতে পারল না। ১৫০ রানে অলআউট। -তাহলে কি শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল?

উত্তরে মুমিনুল বলছিলেন, 'অল্প রানে অলআউট হওয়াতে আমার মনে হচ্ছে সিদ্ধান্তটা খারাপ ছিল। এটা পুরোপুরি আমার ভুল। অবশ্য শুরুতে ব্যর্থ হলেও পরে ঠিকই আক্রমণ করেছিলাম। আমি ও মুশফিক ভাই, লিটনও ভালো খেলছিল। আমার মনে হয় আমারই ভুল ছিল, আমি যদি ওই সময় আউট না হতাম, মুশফিক ভাইয়ের সাথে ভালো জুটি হতো তাহলে হয়তো বড় স্কোর হতে পারতো।'

এতো কম রানে অলআউট, উইকেট কি খেলার মতো নয়? নাকি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা খেলতে পারল না?

এমন প্রশ্নের মুখে কিছুটা যেন বিব্রত হলেন মুমিনুল। নেতৃত্বের প্রথম দিনই তিক্ত অভিজ্ঞতার পর বলছিলেন, 'উইকেট আনপ্লেইবল ছিল না। সবাই জানেন যাদের বিপক্ষে খেলেছি তারা নাম্বার ওয়ান বোলিং সাইড। ওদের বিপক্ষে খেলতে গেলে মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হবে। ওই জায়গায় আমরা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা হয়তো মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম বলেই এমন বিপর্যয় হয়েছে।'

ব্যাটিং ভালো হয়নি, এরপর বোলিংয়েও আবু জায়েদ রাহি ছাড়া অন্যরা ফ্লপ। সব মিলিয়ে অধিনায়কত্বের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ভালো হলো না মুমিনুলের। ভালো একটা ইনিংস খেলতে গিয়েও নিজে ফিরলেন ৩৭ রানে। নিজের আউট প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার ইন্দোরের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বসে বলছিলেন, 'আমার ছোট একটা ভুল ছিল এ কারণে আউট হয়ে গেছি। আমাদের প্রস্তুতি কিন্তু খারাপ ছিল না। গত কিছুদিনে নয়টার মতো চারদিনের ম্যাচ খেলেছি। তবে এটা ঠিক এমন টাইপের বোলারের বিরুদ্ধে খেলিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সব সময় ট্যাকটিস আর টেকনিক দিয়ে হয় না। এর মধ্যে পুরোটাই মনে হয় মেন্টালি। এখানে মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হবে।'

ইন্দোরে ভারত তিন পেসার খেলালেও বাংলাদেশে ছিলেন দু'জন স্পেশালিস্ট পেসার। এমন উইকেটেও কেন সাহস পেল না বাংলাদেশ?

এমন প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে মুমিনুল বলছিলেন, 'সাহস বলে কিছু না। আমাদের স্টকে আসলে নিয়মিত চারদিন খেলার মতো পেস বোলার কম। আমরা বাংলাদেশে সব সময় ব্যাটিংয়ে একটু বেশি মনোযোগ দেই। এ কারণে দুই পেসার খেলেছে।

বাংলাদেশ কী মাঠে নামার আগেই মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়ে? কী হয় তাদের? উত্তর খুঁজতে প্রশ্নটা উড়ে যায় মুমিনুলের দিকে। এবারও ডিফেন্স করলেন অধিনায়ক। বলেন, 'সত্যি কথা বলতে কী যে কোনো সিরিজ শুরু করার আগে এমন কী আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের আগেও আপনাদের বড় ভূমিকা থাকে, আপনারা ভিন্নভাবে নিবেন না-আপনারা এমন সব প্রশ্ন করেন যাতে অনেক কিছুই মাথা ঢুকে যায়। চাপ বেড়ে যায়!'

দলে ছিলেন না মুস্তাফিজুর রহমান। অথচ ম্যাচ পূর্ব ভারতের ভাবনা জুড়ে ছিলেন তিনিই। খোদ বিরাট কোহলি একদিন আগে তার নামটা নিয়েছিলেন। ভারতের হুমকি হিসেবে দেখেছিলেন। সঙ্গে আল আমিনের মতো অভিজ্ঞ পেসারও একাদশে জায়গা পাননি। এমনটা হলো কেন?

'বাংলাদেশ আসলে ব্যাটসম্যানের দিকেই একটু মনোযোগ বেশি দেয়। এ কারণে দুই পেসার খেলিয়েছি।'-বলছিলেন মুমিনুল।

দল ১ম ইনিংসে অলআউট ১৫০ রানে। এরপর ভারত ১ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৮৬ রান। বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন মুমিনুল, 'বাস্তবিক অর্থে অনেকটা পিছিয়ে গেছি। ১ম ইনিংসে এতো কম রানের পর লড়াইটা কঠিন হয়ে গেল। এখানে যতোই পজেটিভ চিন্তা করেন সত্য হলো আমরা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছি।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর