অজুহাতও খুঁজে পাচ্ছেন না মুমিনুল!

ক্রিকেট, খেলা

আপন তারিক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কলকাতা (ভারত) থেকে | 2023-08-27 17:31:53

ইন্দোরের পর কলকাতা টেস্টের আয়নাতেও ধরা পড়ল বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটের ধসে পড়া চেহারা! এমন ছন্নছাড়া একটা দল নাম্বার ওয়ানের সঙ্গে ইনিংস ব্যবধানেই তো হারবে! এক মুশফিকুর রহিম ছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানদের খুঁজেই পাওয়া গেল না! ইডেনের বড় মঞ্চে গোলাপি বলে খেলতে নেমে অংশগ্রহণটাই হয়েছে অর্জন। বলার মতো আর কিছুই নিয়ে ফিরতে পারছে না দল।

এ কারণেই দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর ইতিবাচক কিছু খোঁজার পথে হাঁটেননি মুমিনুল হক। বাংলাদেশ অধিনায়ক বরং এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে চোখ রাখছেন। সোয়া দুই দিনে ইডেন গার্ডেন্সে হেরে বিমর্ষ মুমিনুল হক বলছিলেন, 'দেখুন, দল হিসেবে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। ব্যাটিং ভালো হয়নি। বোলাররা মোটামুটি ভালো বল করেছে। আমার মনে হয়- আমাদের উন্নতির অনেক জায়গা আছে। সামনের বছর আমাদের অনেক খেলা আছে, আমরা যদি এই সব জায়গায় উন্নতি করতে পারি সেখানে ভালো করতে পারব।'

মূলত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাতেই দুঃস্বপ্নের মতো একটা সিরিজ শেষ হয়েছে টাইগারদের। ইন্দোরে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচে হতাশায় ডুবিয়ে ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। কলকাতায়ও ঠিক একইভাবে ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব আর মোহাম্মদ শামিদের সামনে অসহায়ের মতো দেখা গেছে তাদের।

০-২ এ ভারতের কাছে সিরিজ হারের পর অজুহাত দাঁড় করালেন না মুমিনুল। রোববার ইডেনের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বসে বলছিলেন, 'একজন পেশাদার ক্রিকেটারের অজুহাত দেখানোর কোনো মানেই হয় না। আমি কোনো অজুহাত দেখাচ্ছি না। আমরা দল হিসেবে ভালো করতে পারিনি। এমনকি একটা জুটিও গড়তে পারিনি। কাল মুশফিক ভাই ও রিয়াদ ভাইয়ের মধ্যে একটা জুটি হয়েছিল। যদি আমরা ওই রকম অনেকগুলো কিংবা এর চেয়ে বড় কয়েকটি জুটি গড়তে পারতাম তাহলে ভালো হতো, আমরা ওদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারতাম। আমরা খুব বাজে ব্যাটিং করেছি।'

মুমিনুল নিজেও ছিলেন যারপরনাই ব্যর্থ। ইডেনে দুই ইনিংসেই শূন্য। জোড়া শূন্য, মানে ‘পেয়ার।’ ইতিহাসে ২৩তম বার ক্যাপ্টেন পেলেন পেয়ার! অথচ টেস্ট স্পেশালিস্ট মুমিনুলের ব্যাটিং গড় প্রায় চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। কেন এমনটা হলো? নেতৃত্বটা কি ঝোঝা হয়ে গেল মুমিনুলের?

এমন প্রশ্নে বিব্রত থাকলেও অধিনায়ক জানাচ্ছিলেন, 'দেখুন, আমি গড় নিয়ে বেশি ভাবছি না। দলের ফল নিয়ে একটু হতাশ। সেটা স্বাভাবিকও। যখন এমন ফল হয় তখন খারাপ লাগা স্বাভাবিকই। হয়তো আমি এখন সংগ্রাম করছি। সংগ্রাম থেকেই মানুষ ভালো কিছু পায়, হয়তো আমিও পাব।'

হয়তো ব্যক্তিগতভাবে চেনা পথে ফিরবেন মুমিনুল। কিন্তু বাংলাদেশের কি হবে? দলটা তো প্রায় ২০ বছর ধরে খেলছে টেস্ট ক্রিকেটে। কিন্তু সাফল্য তেমন নেই বললেই চলে। চলতি সিরিজটাতেই মুমিনুলদের বেশ এলোমেলো মনে হয়েছে। পরিকল্পনার বড্ড অভাব। এভাবে আর যাই হোক ম্যাচ জেতা যায় না।

অবশ্য এই সত্যটা ভালো করেই জানেন মুমিনুল। এখানে অবশ্য তার একটা ব্যাখ্যাও রয়েছে। টানা ব্যর্থতার পেছনের কারণটা জানাচ্ছিলেন, 'দেখুন, টেস্ট আমরা খুব নিয়মিত খেলি না। সামনের বছর আমাদের অনেকগুলো টেস্ট ম্যাচ আছে। প্রায় ১০টা টেস্ট আছে। আমরা যখন টানা টেস্ট ম্যাচ খেলব তখন এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব।'

মুমিনুলের এমন প্রতিশ্রুতি সত্য হবে কীনা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত এটা বলাই যায় দায়িত্ব নিয়ে খেললে অন্তত এতটা হতাশা সঙ্গী হতো না বাংলাদেশ দলের!

এ সম্পর্কিত আরও খবর