গ্রিজম্যান নায়ক, উরুগুয়েকে হারিয়ে সেমিতে ফ্রান্স

, খেলা

আপন তারিক সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 16:22:08

ফ্রান্স ২ : উরুগুয়ে ০

২০ বছরের পুরোনো সুখস্মৃতিতেই যেন টাইমমেশিনে করে নিজেদের ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দিদিয়ের দেশম। তখন তিনি ছিলেন ফরাসি ফুটবল দলটার অধিনায়ক আর এবার কোচ। নতুন ভূমিকায় দেশের ফুটবল ইতিহাসের সেরা সাফল্যটাকে স্পর্শ করার পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেলেন তিনি। ফ্রান্সও স্বপ্নপূরণের পথ থেকে আর দুই পা দূরে। শুক্রবার (৬ জুলাই) উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে জিনেদিন জিদানের উত্তরসূরিরা পেয়ে গেছে রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালের টিকিট!

নিঝনি নভগোরোদ স্টেডিয়ামে জয়ের নায়ক অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। ম্যাচে এই প্লেমেকার একটি গোল করিয়েছেন। অন্য গোলটি করেছেন তিনি নিজেই!

ম্যাচের ৪০ মিনিটে এসে নিশানা খুঁজে পায় ফ্রান্স। রাফায়েল ভারানের গোলে ওই হেড কোনোভাবেই যেন আটকানোর সাধ্য ছিল না উরুগুয়ের গোলরক্ষকের। সতীর্থ অ্যান্তোনিও গ্রিজমানের ভাসানো ফ্রি-কিকে এই ডিফেন্ডার লাফিয়ে উঠে হেডে নিতেই বল পোস্ট ঘেঁষে বল আশ্রয় নেয় উরুগুয়ের জালে। উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে ফরাসি ফুটবলার আর ভক্তরা (১-০)।

অবশ্য এর ৪ মিনিট পরই সমতা আসতে পারতো ম্যাচে। ঠিক একইভাবে হেডে গোল পেতে যাচ্ছিল উরুগুয়ে। নিশ্চিত একটা গোল হজম করা থেকে ফ্রান্সকে বাঁচান উগো লরিস। সেটপিস থেকে লাফিয়ে ডিফেন্ডার মার্তিন কাসেরেসের হেড ডানপাশে লাফিয়ে কোনোরকমে আটকে দেন লরিস। তারপর ডিয়েগো গোডিনের ফিরতি শট পোষ্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।

এক গোলে পিছিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষে মাঠ ছাড়ে উরুগুয়ে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ফেরার লড়াইটা তীব্র করতে গিয়েই হজম করে ফেলে আরেকটা গোল। এই গোলটির জন্য অবশ্য দায়ী দলটির গোলকিপার ফার্নান্দো মুসলেরা। ৬১তম মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে গ্রিজমানের শট থেকে উড়ে আসা বলের প্রায় লাইনেই ছিলেন তিনি। কিন্তু বল আঙুল গলে গোললাইন অতিক্রম করে ফেলে (২-০)!

ব্যস, এরপর অনেক চেস্টা করেও আর ম্যাচে ফেরা হয়নি উরুগুয়ের। উল্টো অনাকাংখিত এক ঘটনা উত্তাপ ছড়ায় মাঠে। প্রতিপক্ষে ফুটবলার ক্রিস্তিয়ান রদ্রিগেসের হালকা ছোঁয়া লেগে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে থাকেন এমবাপে। এনিয়ে ডিয়েগো গোডিনের সঙ্গে ঝামেলা বেঁধে যায় তার। রেফারি তারই পথ ধরে হলুদ কার্ড দেখান এমবাপে ও রদ্রিগেসকে।

যদিও শুরুতে ছিল কিলিয়ান এমবাপে গতি আঁচ করেছে উরুগুয়ে। তবে বাকীটা সময় ডিয়েগো গোডিনের নজর থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি তিনি। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ঝড় তোলা সেই এমবাপেকে এই ম্যাচে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাতে কী একাই বাকীটা পুষিয়ে দিয়েছেন গ্রিজম্যান। ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে গেছেন সেমিফাইনালে।

২০১০ সালের পর আবারো সেমিফাইনালে উঠা হলো না। এডিসন কাভানির ইনজুরিই যেন শেষ করে দিল লাতিন এই দলটির বিশ্বকাপ। আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক এখানে মাঠেই নামতে পারলেন না। নিশ্চিত করেই এই আক্ষেপ অনেক দিন পোড়াবে তাকে।

কোয়ার্টার ফাইনালে অ্যাডিডাস রঙীন এই বলের নাম টেলস্টার মেশতা! মেশতার ইংরেজি ড্রিম অথবা অ্যাম্বিশন। বাংলা স্বপ্ন বা লক্ষ্য! আর সেই স্বপ্নপূরণের পথেই থাকল ফ্রান্স। এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলো ফরাসিরা। আর মাত্র দু’টি ম্যাচ। দু’টো বাঁধা পেরোলেই স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি! স্বপ্নটা আবার দেখতেই পারে জিনেদিন জিদানের উত্তরসূরিরা!

এ সম্পর্কিত আরও খবর