২৮ বছর পর সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

, খেলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 12:46:23

ইংল্যান্ড ২ : সুইডেন ০

সেই ১৯৬৬ সালের পর থেকেই বিশ্বকাপ ট্রফি রহস্য হয়েই আছে ইংল্যান্ডের। কিছুতেই সেই রহস্যের কুল-কিনারা মিলছে না। কিন্তু ফেভারিটদের পতনের এই বিশ্বকাপে মনে হচ্ছে সোনার পরী আর সোনার হরিণ হয়ে থাকবে না! ফাইনাল থেকে এখন মাত্র এক পা দূরে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ড। শনিবার (৭ জুলাই) সুইডেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইংলিশরা পেয়ে গেছে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট! ৫২ বছর পর একটু একটু করে সমীকরণ মিলে যাচ্ছে!

তার আগে ইতিহাস জানাচ্ছে- ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপের পর আবারো সেমিফাইনালে উঠল থ্রি লায়ন্সরা। দল যে মেজাজে আছে এখন শিরোপার স্বপ্ন দেখতেই পারে ববি মুর-জিওফ হার্স্টের উত্তরসূরিরা।

সামারা অ্যারেনায় শনিবার ইংল্যান্ডের হয়ে গোল দু’টি করেছেন হ্যারি ম্যাগুইয়া ও ডেলে আলি। অল ইউরোপিয়ান এই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে গোল না করার আক্ষেপ নিয়েই বিদায় নিতে হলো সুইডিশদের। চেনা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কিছুই করে দেখাতে পারল না তারা! অনেকটা অনায়াসেই ম্যাচটা জিতে নিয়েছে ইংল্যান্ড।

শুরু থেকেই দাপট ছিল ইংল্যান্ডের। তারই পথ ধরে ম্যাচের ৩০ মিনিটে এগিয়ে যায় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। অ্যাশলি ইয়াংয়ের ভাসানো কর্নারে লাফিয়ে উঠে মাথা ছুঁইয়ে দেন ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুইয়ার (১-০)। ইংল্যান্ডের হয়ে এটিই তার প্রথম গোল।

এর আগে প্রথমার্ধের পুরোটা সময়জুড়েই দাপট ছিল ইংলিশদের। সুইডেন খেলছে প্রেসিং ফুটবল। আর ইংল্যান্ড রক্ষণ ঠিক রেখে আক্রমণ করে গেছে। চোখ জুড়ানো ফুটবল বলতে যা বোঝায় তা ছিল না কোয়ার্টার ফাইনালের এই ম্যাচে। তারপরও ইংল্যান্ড শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বল নিয়ন্ত্রণ থেকে আক্রমণ সবকিছুতেই ছিল এগিয়ে।

এর মধ্যে ২৩ মিনিটে রহিম স্টালিংয়ের ক্রসে উড়ে যাওয়া বল ডি বক্সে সুইডেনের এমিল ফরসবার্গের হাতে লাগে। কিন্তু ইচ্ছাকৃত হ্যান্ডবল না হওয়ায় পেনাল্টি পায়নি ইংল্যান্ড। তারপর ৪৪ মিনিটেও ব্যবধানটা দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সুইডিশ গোলরক্ষক ওলেসেনকে একা পেয়েও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি রহিম স্টার্লিং।

এরপর ডেলে আলির গোলে ৫৮ মিনিটে ব্যবধানটা দ্বিগুণ করে ইংল্যান্ড। ডান দিক থেকে জেসি লিনগার্ডের বাড়ানো ক্রসে হেডে গোল করেন আলি (২-০)।

অবশ্য গোলের একাধিক সুযোগ এসেছিল সুইডেনের সামনেও কিন্তু তাদের আক্রমনের মুখে প্রতিরোধের প্রাচীর তুলে দাঁড়িয়েছিলেন ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড। আগের ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে বাজপাখির মতো বল আটকে হয়েছিলেন জাতীয় বীর। শনিবারও চমক দেখালেন তিনি। তাকে পরাস্ত করার কৌশলটা যেন সুইডিশদের জানা ছিল না!

এই ম্যাচটাতে গোল পেলেন না হ্যারি কেইন। ইংল্যান্ড অধিনায়ক ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জয়ের পথে সবার চেয়ে এগিয়ে। গ্যারি লিনেকারের (১৯৮৬) পর আবারো কোনো ইংলিশ ফুটবলার গোল্ডেন বুটের অপেক্ষায়।

এই ম্যাচের আগে ইংল্যান্ড-সুইডেনের মুখোমুখি লড়াইয়ে ছিল সমানে সমান। সাতটি করে জয়ের বিপরীতে সমান সাতটি করে হার। এবার সুইডেনকে ছাড়িয়ে গেল ইংল্যান্ড। ১৯৯৪ সালের পর বিশ্বকাপের সেমিতে ফেলা হচ্ছেই না সুইডিশদের। তারুণ্যের শক্তির কাছে হেরে গেল তারা।

সমীকরণ আরো মিলে যাচ্ছে, ১৯৬৬-এর পর বিশ্বকাপে এবারই প্রথম ১০ বা এর বেশি গোল করল ইংল্যান্ড। তরুণ এই দলটির হাত ধরে একের পর এক বিস্ময় উপহার দিয়ে যাচ্ছে থ্রি-লায়ন্সরা। দলে জয়ের নায়কের কমতি নেই। তাহলে কী ৫২ বছর পর আবারো ট্রফি ফিরছে ইংল্যান্ডেই?

এ সম্পর্কিত আরও খবর