বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানিয়েছিল-টি-টোয়েন্টি সিরিজ পাকিস্তানে খেলব আমরা। টেস্ট সিরিজ নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে খেলতে চায় বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে তারপর পাকিস্তানে টেস্ট খেলার জন্য লম্বা সময় থাকার মতো নিরাপত্তা পরিস্থিতি আছে কিনা- সেটা জেনে টেস্ট সিরিজের পরিকল্পনা জানানো হবে।
কিন্তু শেষমেশ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাদের শুরুর অবস্থানে থাকতে পারেনি। পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেট সিরিজ খেলতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ। তাও আবার একবার নয়, সবমিলিয়ে তিন দফা সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে পাকিস্তান এই সিরিজে বাড়তি একটি ওয়ানডে ম্যাচও যোগ করে নিয়েছে।
প্রশ্ন হলো কেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাকিস্তান সফর নিয়ে তাদের শুরুর সেই কঠিন অবস্থান থেকে সরে এলো। তবে কি কোনো আইসিসি বা পিসিবি-র কোনো ক্রিকেটীয় চাপের কাছে নতি স্বীকার করল বিসিবি?
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এই প্রসঙ্গে যা বললেন সেটা কার্যত একধরনের চাপই বটে! নাজমুল জানালেন-‘একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে এটা যদি শুধু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হতো তাহলে অন্য কথা হতো। এখানে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আছে, যে টুর্নামেন্ট আইসিসির। বলতে গেলে এটা অনেকটা বিশ্বকাপ। আমরা টি-টোয়েন্টি খেলছি, ওয়ানডে খেলছি। এখন আইসিসি শুরু করেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, হোম এবং অ্যাওয়ের ভিত্তিতে। কাজেই এখানে তো আমাদের অন্য কোনো অপশন নেই। এখানে অংশগ্রহণ করাটা আমি মনে করি অবশ্যই প্রয়োজন। আইসিসির ফুল মেম্বার হিসেবে এখানে আমাদের অংশ নেওয়া উচিত। এখানেই মূল একটা চাপ ছিল। আমার মনে হয় এই টি-টোয়েন্টি সিরিজটি খেলে আসলে আমরা বুঝতে পারব আসলে। যে আসলে পরিস্থিতি কি এবং যদি আমাদের কোনো সমস্যা থাকে এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারব এবং পরে কথা বলতে পারব।’
নাজমুল হাসানের কথাতেই পরিষ্কার যে আইসিসি আয়োজিত এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কোনো ম্যাচে না খেললে পরে বিসিবি-কে হয়তো বা বড় ধরনের কোনো সমস্যায় পড়তে হতো। আইসিসি’র বিরাগভাজন হতে চায়নি বলেই বিসিবি এখন পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলতেও যাচ্ছে।
পাকিস্তানে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে নাজমুল নিশ্চয়তা দিলেন এভাবে- ‘আইসিসি তো তাদের দল পাঠাচ্ছেই (আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি)। তাছাড়া এরই মধ্যে আইসিসি পাকিস্তানের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করেছে এবং ওদের সব লোকজন থাকবে। ওরা বলাতেই তো আসলে আমরাও পাকিস্তান যাচ্ছি। সবদিক থেকে যেভাবে সিদ্ধান্তটা এসেছে এরপর ওখানে না যাওয়াটা কঠিন। এরপরও ওখানে যদি এমন কোনো ঘটনা আল্লাহ না করুক ঘটে বা তেমন অবস্থা হয় তাহলে তো আর আমরা যাব না। আমাদের যদি কখনো মনে হয় যে ওখানটায় যেমনটা ভেবেছিলাম বা পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়েছে তাহলে আমাদের সিদ্ধান্তও পরিবর্তন হবে। সেটা ভিন্ন ইস্যু। তবে এখন পর্যন্ত আমরা মনে করছি এটা (পাকিস্তান) একটি নিরাপদ জায়গা এবং আমরা খেলতে যেতে পারি সেখানে। ক্রিকেটারদের উচিত মাথায় এখন সেই নিরাপত্তার ব্যাপারটি বাদ দিয়ে খেলায় মনোনিবেশ করা।’