সবমিলিয়ে উভয় দল গোল মিস করেছে অন্তত ছয়টি। তবে গোল মিস করলেও গোল দেওয়ার কাজটা কিন্তু ঠিকই করে ফেলেছে বুরুন্ডি। একটা, দুটো নয়। একেবারে তিন তিন গোল করেছে তারা। তাও আবার সেই তিন গোলের সবগুলোর মালিক একজনই-জসপিন। স্ট্রাইকার জসপিনের এই হ্যাটট্রিক বুরুন্ডিকে তুলে এনেছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলের ফাইনালে। আর স্বাগতিক বাংলাদেশ বিদায় নিয়েছে সেমি-ফাইনাল থেকে।
জসপিন প্রথমার্ধে দুটো গোল করেন। আর দ্বিতীয়ার্ধের একমাত্র গোলের নায়কও তিনি। চলতি টুর্নামেন্টে এটি তার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। মরিশাসের বিপক্ষে টুর্নামেন্ট শুরুই করেছিলেন জসপিন হ্যাটট্রিক দিয়ে। সবমিলিয়ে টুর্নামেন্টে এখন তার গোলের সংখ্যা ৭! যে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন বুরুন্ডির এই তারকা স্ট্রাইকার, তাতে ২৫ জানুয়ারির ফাইনালেও সব ফোকাস থাকছে তার ওপরই। সেদিন টুর্নামেন্টের ফাইনালে বুরুন্ডি লড়বে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিনের বিপক্ষে।
সেমি-ফাইনাল ম্যাচে বুরুন্ডিই ছিল ফেভারিট। জিতল তারা সেই ফেভারিট হিসেবেই। ম্যাচের ৪৩তম মিনিটের সময় বাম দিক থেকে আসা আড়াআড়ি পাস থেকে পেনাল্টি বক্সের সামনে দাঁড়ানো জসপিন বল বাংলাদেশের জালে জড়িয়ে দেন (১-০)। সেই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠার আগেই বাংলাদেশ নিজেদের জালে দেখল আরেকটি গোল! এবারো গোলের ধরন প্রায় ঠিক একই কায়দায়। তবে এই গোল পায়ে নয়, হলো হেডে। বামপ্রান্ত থেকে উড়ে আসা বলে মাথা ছুঁইয়ে জসপিন দলের লিড বাড়িয়ে দিলেন (২-০)। দ্বিতীয় এই গোলটি পেলেন জসপিন প্রথমার্ধের খেলার বাড়তি মিনিটের সময়।
২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার তুমুল চেষ্টা চালায়। পরিকল্পিত আক্রমণে গেল দল। গোলের ক্ষেত্র তৈরিও হলো। সবই হলো কিন্তু গোলই যে হলো না! কখনো বল লাগল বুরুন্ডির গোলপোস্টে। কখনো বা লাইনের ওপর থেকে হাত দিয়ে গোল বাঁচালেন বুরুন্ডির গোলকিপার ডিজে। সাদউদ্দিন, রকিব ও জামাল ভূইঁয়া-তিনজনই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া এই ম্যাচকে মনে রাখবেন গোল মিসের ম্যাচ হিসেবে।
ম্যাচের শেষদিকে মামুন ও রকিবকে বদলি হিসেবে নামান বাংলাদেশ কোচ। মামুন বল পায়েই যে পেলেন না। রকিব মাঠে নেমেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু পেনাল্টি বক্সের সামনে থেকে শট নিলেন তিনি পোস্টের ওপরে! এমন গোলও কেউ মিস করে! টাচলাইনে দাঁড়ানো বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে হতাশায় মাথায় হাত দিলেন। এর আগে সাদউদ্দিন বুরুন্ডির গোলকিপার ডিজেকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। পোস্টে বল পাঠাতে গিয়ে সাদউদ্দিন বল সোজা গোলকিপারের শরীরে মারেন!
৭৮তম মিনিটের সময় রকিবের গোল মিসের দুঃখে বাংলাদেশ যখন কাতরতা দেখাচ্ছে, ততক্ষণে পাল্টা আক্রমণে উঠে গেছে বুরুন্ডি। সেই আক্রমণ থেকে প্রায় একক প্রচেষ্টায় নিজের এবং দলের তৃতীয় গোল করলেন স্ট্রাইকার জসপিন। পোস্টের সামনে দাঁড়ানো বাংলাদেশের চারজন ডিফেন্ডার শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলেন সেই গোল। গোলকিপার আশরাফুল হাত বাড়ালেন। কিন্তু কাছের পোস্টে সেই গোল বাঁচাতে পারলেন না।
ম্যাচে সবমিলিয়ে বুরুন্ডির জালে বাংলাদেশ ৮টি শট নেয়। কিন্তু কোনো গোল করতে পারেনি। আর ৬ শটের তিনটিই বাংলাদেশের জালে রেখে ফাইনালের টিকিট পেয়ে গেল বুরুন্ডি।