মুশফিক-মুমিনুল এবং মিরপুর; একটি ধারাবাহিক পর্ব!

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 00:16:24

প্রচলিত একটা নিয়মের মতো হয়ে গেছে ব্যাপারটা। সিনেমা-নাটক ভালো চললে বা উপন্যাসটা জমে গেলে- সেটার ধারাবাহিক পর্ব হয়। কিন্তু তাই বলে ক্রিকেটে জুটির এমন ধারাবাহিক পর্ব?

মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হকের ব্যাটিং জুটি এখন সেই উদাহরণই তৈরি করছে। এখন পর্যন্ত টেস্টে বাংলাদেশের ডাবল সেঞ্চুরির জুটি আছে ৮টি। যার মধ্যে তিনটিতে এককভাবে সঙ্গী মুশফিক-মুমিনুল। আর এই দুজন দেশের মাটিতেই এমন ধারাবাহিক জুটি গড়তে যেন বেশি অভ্যস্ত।

টেস্টে মুশফিক-মুমিনুলের তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির জুটির সবগুলোই দেশের মাটিতে। দুটি ঢাকার মিরপুরে, একটি চট্টগ্রামে। শুরু করেছিলেন তারা ঢাকায়, শেষটাও এখন সেই ভেন্যুতে। মিল আরেকটি আছে। শুরুর এবং শেষের এই দুই কৃতিত্বে তাদের প্রতিপক্ষও একই; জিম্বাবুয়ে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে মিরপুর টেস্টের সেই সুখস্মৃতিকেই যেন ধারাবাহিক পর্ব হিসেবে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিরিয়ে এনেছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান।

১৫ মাস আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই টেস্ট ম্যাচে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের ইনিংসকে টেনে তুলে এবং সামনে বাড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক। দারুণভাবে সফল হয়েছিলেন তারা। চতুর্থ সেই উইকেট জুটিতে সেদিন তারা গড়েছিলেন ২৬৬ রান। মুমিনুল সেই ইনিংসে করেন ১৬১ রান। মুশফিক খেলেন তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি; ২১৯ রানের ইনিংস। মিরপুরের সেই টেস্টে জিম্বাবুয়েকে বড় ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ।

১৫ মাস পরে একই ভেন্যুতে, একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলকে প্রায় একই অবস্থানে পৌঁছে দিলেন মুশফিক-মুমিনুল জুটি। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষ সেশনে মুশফিক এসে মুমিনুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগে মুমিনুলে ব্যাট হাসল সেঞ্চুরির হাসিতে। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১ রান দূরে থেকে লাঞ্চে যান মুশফিক। লাঞ্চের পরপরই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের সেঞ্চুরিও পুরো করেন মুশফিক। দলের স্কোর যখন ৪০০’র কাছাকাছি পৌঁছে দিয়ে মুমিনুল ফিরলেন ১৩২ রান করে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬০.৪ ওভারে মুশফিক-মুমিনুল যোগ করেন ২২২ রান। রানরেটের স্বাস্থ্যও বেশ; ৩.৬৫।

মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটের সঙ্গে মুশফিক-মুমিনুলের সখ্যও বেশ পুরনো। দুজনের জন্যই এই মাঠ বেশ পয়মন্ত। ক্যারিয়ারের ৯ টেস্ট সেঞ্চুরির তিনটিই পেয়েছেন মুমিনুল এই মাঠে। অধিনায়ক হিসেবেও নিজের প্রথম সেঞ্চুরির আনন্দে ভাসলেন এখানেই। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট জয়ের আনন্দও তাহলে মিরপুর থেকেই নিয়ে ফিরছেন মুমিনুল? ৪০ টেস্টে মুমিনুলের গড় ৪০.৮৫। আর মিরপুরে সেই গড় ৫১.৭৫! তবে ‘লাকি মাঠ’ এর তালিকা তৈরি করতে বললে মুমিনুল নিশ্চয়ই চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে শীর্ষে রাখবেন। ৯ টেস্ট সেঞ্চুরির ৬টিই তার চট্টগ্রামে। রান গড় ৭৫.৪২!

মুশফিক তার ৭০ টেস্টের ১৯টিই খেলেছেন মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই মাঠে রানও তার হাজারের ওপরে। রান গড়ও চল্লিশের ওপরে। ক্যারিয়ারের সেরা অপরাজিত ২১৯ রানের ইনিংসও এই মাঠে তার। সেই ইনিংসটাই ছিল মুশফিকের শেষ সেঞ্চুরি। ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতেই যেন নিজের পরের টেস্ট সেঞ্চুরিও মুশফিক করলেন মিরপুরে, সেই একই প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

মুশফিক-মুমিনুল এবং মিরপুর; ক্রিকেটের ধারাবাহিক পর্বের আরো অধ্যায় নিশ্চয়ই বাকি থাকছে?

এ সম্পর্কিত আরও খবর