টি-টুয়েন্টিতেও রঙিন পারফরমেন্সের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.ডটকম | 2024-01-12 20:46:16

ক্রিস গেইল খেলছেন না টি-টুয়েন্টি সিরিজে। বিশ্রামে থাকছেন।

একটা বড় দুঃশ্চিন্তা নিশ্চয়ই কমল বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের? টি-টুয়েন্টি ম্যাচে ক্রিস গেইল থাকা মানেই তো তাকেই ঘিরেই ম্যাচ পরিকল্পনার সিংহভাগ সময় ব্যয়!

কারণ, গেইল যে টি-টুয়েন্টির ইউনিভার্সেল ব্যাটিং বস!

তবে খেলাটা যখন টি-টুয়েন্টি, আর দলের নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ; তখন যে কোন প্রতিপক্ষেরই বাড়তি একটা চিন্তা থাকবেই। টি-টুয়েন্টি যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ধাঁচেরই খেলা! শুধু বলার জন্য বলা নয়। খেলার মাঠেও তার প্রমাণ রেখেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ফরমেটের ক্রিকেটে দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তারা। আর বিষয় যখন টি-টুয়েন্টি তখন বাংলাদেশের জন্য জনপ্রিয় সংজ্ঞাটা এমন-‘এই ফরমেটের ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো ধাতস্থ হতে পারেনি’!

একটু মনে করিয়ে দেই। বাংলাদেশ টি-টুয়েন্টি খেলে আসছে সেই ২০০৬ সাল থেকে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত খেলেছে ৭৯ টি আর্ন্তজাতিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ। কিন্তু সাবলীল হওয়ার যে একটা বিষয় থাকে; সেই দক্ষতা এখনো ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম এই ফরমেটে আয়ত্ব করতে পারেনি বাংলাদেশ। রেকর্ডও তাই বলছে যে। জয় পেয়েছে ২৩ ম্যাচে। হার ৫৪ ম্যাচে। সমস্যা আরও বেড়েছে এই ফরমেট থেকে মাশরাফি বিন মর্তুজা ‘অভিমানি অবসরে’!

এই ফরমেটে বাংলাদেশের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যানও বেশ দুর্বল। সর্বশেষ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ তে আফগানিস্তানের কাছে ‘কাবুলিওয়াশ’ হয়েছে। টি-টুয়েন্টি থেকে মাশরাফির অবসরের পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ এক ডজন ম্যাচ খেলেছে। জিতেছে মাত্র ২টিতে। বাকি ১০টিতেই হার এবং হার। এমন নড়বড়ে পরিসংখ্যান ও ক্রমশ পিছুহটা কদমে থাকা বাংলাদেশ খেলতে নামছে টি-টুয়েন্টির অন্যতম শক্তিমান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে ১ আগস্ট, বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ছ’টায়। যে মাঠে খেলা হবে সেখানে অবশ্য কদিন আগেই দারুণ একটা সুখকর সময় কেটেছে বাংলাদেশের। সেন্ট কিটসের এই ওয়ার্নার পার্ক স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে ট্রফি জিতেছে বাংলাদেশ।

টি-টুয়েন্টির শুরুতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সেই ট্রফিটাই হতে পারে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। ওয়ানডেতে পারলে টি-টুয়েন্টিতে কেন নয়?

ক্রিস গেইল এই সিরিজে না খেললেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে রেখেছে এবারের টি-টুয়েন্টি দলে। শুধু কয়েকটা নাম বলি; মারলন স্যামুয়েলস, চ্যাডইউক কার্লটন, আন্দ্রে রাসেল, আন্দ্রে ফ্লেচার ও স্যামুয়েলস বদ্রি। এরা প্রত্যেকেই ম্যাচ উইনার। গেম চেঞ্জার।

 

টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট এদের কমফোর্ট জোন। সবমিলিয়ে সন্দেহ নেই টি-টুয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের জন্য সময়টা কঠিনই করে তুলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই বলে টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশ কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায়নি এমনও কিছু নয়। বলা যেতে পারে টি-টুয়েন্টির সেই শুরুর দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় দিয়েই এই ফরমেটে নিজেদের চিনিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৭ সালের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

হ্যাঁ, সেই ম্যাচে সেদিন ক্রিস গেইলও ছিলেন!

এবারের সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগে সেই ইতিহাসও বাংলাদেশ দলের জন্য বড় অনুপ্রেরণা হতে পারে। তবে টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এরচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা খুঁজছেন এবারের ওয়ানডে সিরিজ জয় থেকেই-‘৯ বছর পরে আমরা দেশের বাইরে কোন ওয়ানডে সিরিজ জিতলাম। এই জয় পুরো দলকে উদ্বীপ্ত করছে। আমরা একটা নতুন আশা নিয়েই টি-টুয়েন্টি সিরিজ শুরু করবো। দলে বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় আছে। আশা করছি নিজেদের প্রতিভার প্রমান রাখতে তারা সমর্থ হবে। টি-টুয়েন্টিতে নতুনদেরই খেলা।’

তাহলে টি-টুয়েন্টিতেও হয়ে যাক নতুন কিছু!

সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ হবে আরেক দেশ, যুক্তরাস্ট্রের ফ্লোরিডায়। তাই মুলত সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টি দিয়েই বাংলাদেশ দলের এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষ হচ্ছে।

সফরের শুরুটা হয়েছিল টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের বর্ণহীন পারফরমেন্সে; ২-০ তে হেরে। মাঝে রঙিন পোশাকে ওয়ানডেতে রং ছড়ানো সাফল্য মিলল; ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে। টি-টুয়েন্টি দিয়ে শেষটাও হোক ঝলমলো আলোর পরশ ছড়িয়ে।

গুডলাক বাংলাদেশ!

এ সম্পর্কিত আরও খবর