গ্রিস থেকে অলিম্পিক মশাল এসে পৌঁছেছে টোকিওতে। খবরটা সুসংবাদ। আর দুঃসংবাদ হলো পূর্ব নির্ধারিত সময়ে টোকিও অলিম্পিক শুরু হবে কিনা- তা এখনো বড় সংশয়।
আগামী ২৪ জুলাই থেকে টোকিও অলিম্পিক শুরুর কথা। তবে বিশ্ব জুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের ছোবলে টোকিও অলিম্পিকের ভবিষৎ এখন বড় অনিশ্চয়তায়। আয়োজক টোকিও’র কর্তা ব্যক্তিরা অবশ্য আশায় বুক বেঁধে আছেন যে যথাযথ সময়ে গেমস শুরু করা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
পুরো বিশ্ব এখন লড়ছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের বিরুদ্ধে। আরো আগে থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে। শহর-গ্রাম-মাঠ-ঘাট প্রায় সবকিছুই বন্ধ। বিশ্বের প্রায় সব নিয়মিত খেলার আসর এখন বন্ধ। নিজ ঘরে সবাই নিজেকে আটকে রেখেছেন। পুরো পৃথিবী যেন থমকে গেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে অর্থনীতি। সব দেশ তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। বিমানবন্দরও লকডাউন। প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার বাড়ছে প্রায় জ্যামিতিক হারে। কবে, কখন এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলবে বিশ্বের? সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।
যে সময়টায় মানবকুলের জীবন যখন চরম সঙ্কটে, তখন অলিম্পিকের আয়োজনের উপায় কোথায়? কিন্তু তবুও আশায় বুক বেঁধে আছে টোকিও। গ্রিস থেকে আগত অলিম্পিকের এই মশালকে ঘিরে স্বপ্নের ঘুড়ি আকাশে উড়াচ্ছে জাপান। সামনের সপ্তাহ জুড়ে জাপানের বিভিন্ন শহরে অলিম্পিকের এই মশাল প্রদক্ষিণ করবে। দেশ জুড়ে অলিম্পিক মশালের এই শুভযাত্রার একটা উজ্জীবিত শ্লোগান তৈরি করেছে জাপান। সেই যাত্রার নাম দিয়েছে তারা-‘আমাদের আশার আলো জ্বলবেই’! তবে এই আনন্দ যাত্রায় সতর্কতা জারি করেছেন টোকিও অলিম্পিকের আয়োজকরা। মশাল প্রদক্ষিণের এই সময়টায় যাতে বেশি গণজমায়েত না হয়- সেদিকেও কড়া নজর আছে তাদের। কারণ বেশি ভিড় মানেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা!
টোকিও অলিম্পিকের আয়োজক কমিটির সভাপতি ইয়োসিরো মোরি জানান-‘সবার আগে নিরাপত্তা। আর সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা দুঃখজনক কিছু সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের যে নির্দেশাবলি দিয়েছে আমরা সেটা মেনে চলার অঙ্গীকার করেছি। অলিম্পিককে সর্বোচ্চ নিরাপদ করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
গত ১২ মার্চ গ্রিসে এই অলিম্পিকের মশাল প্রজ্জ্বলিত করা হয় দর্শকশূন্য চত্বরে। এখন জাপানের বিভিন্ন শহরেও এই অলিম্পিক মশাল যখন প্রদক্ষিণ করবে তখনো রাস্তার পাশে ভিড় না জমাতে দর্শকদের নিরুৎসাহিত করছেন আয়োজকরা। অথচ এই আয়োজন তো দর্শকদের জন্যই!
শুক্রবার চার্টার্ড বিমানে করে টোকিওতে অলিম্পিক মশাল এসে পৌঁছায়। এই সময় জাপান বিমান বাহিনীর কয়েকটি বিমান আকাশে বিভিন্ন ক্রীড়া কৌশল প্রদর্শন করে। বিমান থেকে নীল রংয়ের ধোঁয়ায় অলিম্পিকের পাঁচটি বৃত্তের আদল তৈরি করা হয় আকাশের কোনায়। কিন্তু তীব্র বাতাসের ছটায় সেই অলিম্পিক বৃত্ত ঠিকভাবে দেখা যায়নি। বৃত্তগুলো মিলিয়ে যায় দ্রুতবেগে।
টোকিও অলিম্পিকের ভাগ্যও এখন তেমনই অনিশ্চয়তায়!
আরও পড়ুন-