করোনা আতঙ্কে সঙ্গরোধে সাকিব, থাকছেন হোটেলে

বিবিধ, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 03:31:02

ক্রিকেটের বাইরে রয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আসছে অক্টোবরে। এখন মাঠের বাইরেই ব্যস্ত সাকিব আল হাসান। অফুরন্ত এই অবসর সময়ে দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রেই বেশি সময় কাটছে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের। ঢাকা থেকে এবার চলে গেছেন স্ত্রী-সন্তানের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তবে এখনই প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করেন নি তিনি।

করোনাভাইরাস আতঙ্কে মার্কিন মুল্লুকে পা দিয়েই কোয়ারেন্টাইনে চলে গেলেন সাকিব। সেখান থেকেই শনিবার নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ৪ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় সবাইকে সতর্ক করলেন তিনি। সঙ্গে জানালেন কিভাবে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে।

ভিডিও বার্তায় সাকিব জানান তিনি এখন আছেন সঙ্গরোধে। দেখা করেন নি স্ত্রী সন্তানের সঙ্গে।

সাকিব বলেন, ‘একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্র এসে পৌঁছলাম। যদিও প্লেনে সব সময় ভয় কাজ করেছে একটু হলেও। তারপরও চেষ্টা করেছি, নিজেকে কিভাবে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। তারপর যখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছলাম, আমি সোজা একটি হোটেলের রুমে উঠেছি। আমি ওদেরকে অবগত করেছি, এখানে থাকব কিছুদিন এবং আমি যেহেতু ফ্লাই করে এসেছি আমার একটু হলেও রিস্ক আছে। তাই আমি নিজেকে আইসোলেটেড করে রেখেছি। যে কারণে আমি আমার বাচ্চার সাথে দেখা করিনি। এটা অবশ্যই আমার জন্য কষ্টের।’

একইসঙ্গে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিলেন তিনি। বলেন, ‘আশা করি সবাই ভালো আছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসকে মহামারী রোগ বলে আখ্যায়িত করেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আপনারা ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছেন যে, বাংলাদেশেও বেশ কিছু করোনা রোগী পাওয়া গেছে। আমাদের এখনই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমাদের সতর্কতাই পারে আমাদের দেশকে সুস্থ রাখতে, আমাদেরকে সুস্থ রাখতে।’

জানালেন কিভাবে এই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে, ‘কিছু সিম্পল স্টেপ ফলো করলে আমার ধারণা, আমরা এই রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারব এবং আমাদের দেশকেও মুক্ত রাখতে পারব। যেমন- সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সোশ্যাল ডিসটেন্স ম্যান্টেন করা, হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় সঠিক শিষ্টাচার মেনে চলা এবং যদি কেউ বিদেশ ফেরত থাকেন তাহলে অবশ্যই নিজেকে ঘরে রাখা ও ঘর থেকে যেন না বের হয়, সে সম্পর্কে খেয়াল রাখা।’

সঙ্গরোধের ব্যাপারটিতেও গুরুত্ব দিলেন সাকিব। বলেন, ‘একই সময়ে আপনাকে মনে রাখতে হবে, আত্মীয় স্বজন বা বাইরের মানুষ আপনার সাথে এসে যেন দেখা করতে না পারে। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে যা খুবই জরুরি।’

নিজের কোয়ারেন্টিনে পরিবারের উপহার হয়, দেশের উপকার হয়-সেই কথাটিও শোনালেন ভক্তদের। বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘তারপরও আমার কাছে মনে হয়, আমার এই সামান্য স্যাক্রিফাইসটুকু করতে পারলে অনেক দূর এগুতে পারব। সো, এ কারণেই আমাদের দেশে যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের সবারই ছুটি অনেক কম থাকে। তারা চায় আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করতে, ঘোরাফেরা করতে, আড্ডা দিতে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে একত্রিত হতে। যেহেতু আমাদের সময়টা অনুকূলে না, আমি সবাইকে রিকোয়েস্ট করব এই নিয়মগুলো যেন সবাই মেনে চলেন। ‘আশা করি সবাই আমার এই কথাগুলো শুনবেন এবং কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে, এগুলো সম্পর্কেও অবগত হবেন এবং সেভাবে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবেন।’

একইসঙ্গে সবাই যেভাবে খাবার মজুদ করছেন সেটিও চোখে পড়েছে সাকিবের। তিনি বলছিলেন, ‘আর একটা কথা অবশ্যই বলতে চাই, কেউ আতঙ্কিত হবেন না। আমার মনে হয় না এটা কোনো ভালো ফল বয়ে আনতে পারবে। আমি নিউজে দেখেছি, অনেকে ৩, ৪, ৫ বা ৬ মাস পর্যন্তও খাবার সংগ্রহ করছেন। খাবারের সংকট কখনোই হবে না ইনশাআল্লাহ্‌। আমরা কেউ না খেয়ে মারা যাব না। তাই আমরা আতঙ্কিত না হই। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তই পারে আমাদের এর থেকে রক্ষা করতে। এবং সেটা আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই সম্ভব। আশা করি সবাই ভালো থাকবেন এবং প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভ্রমণ বা বাড়ির বাইরে বের হবেন না। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর