টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত করার কারণ আছে অনেক

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 05:18:23

করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগময় সময়টায় এখন বিশ্বের কোথাও কোনো ক্রিকেট নেই। সব বন্ধ। ঘরোয়া-আন্তর্জাতিক কোনো ধরনের ক্রিকেট মাঠে নেই। মাঝপথেই থেমে গেছে অনেক ক্রিকেট লিগ। আবার শুরু হওয়ার আগেই স্থগিত হয়ে গেছে অনেক দেশের ক্রিকেট লিগ।

শুধু ক্রিকেট নয়। ফুটবল, অ্যাথলেটিকস, টেনিস, হকি, বাস্কেটবল, শুটিং, বক্সিং, সাঁতার, ফর্মুলা ওয়ান রেস- আউটডোর ইনডোরের প্রায় ধরনের খেলাই এখন স্থগিত। টোকিও অলিম্পিক পিছিয়ে গেছে এক বছর। উইম্বলডন টেনিসও এই বছরের জন্য বাতিল। আগস্টের ইউএস ওপেনও বাতিলের খাতায় যোগ হতে চলেছে।

করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে খেলার সময়ও! এমন স্থবির সময়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন কি সম্ভব? আয়োজক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) অবশ্য আশার ঘুড়ি আকাশে উড়িয়েছে। তারা এখনো এই বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাবনা দেখছে। তবে সেই সম্ভাবনায় স্বপ্নের জাল আছে, আবেগ আছে। বাস্তবতার ঠাস বুনট নেই!

২৩ এপ্রিল আইসিসির সদস্য দেশগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা (সিইও) ভিডিও টেলিকনফারেন্সে বসছেন। সেই বৈঠকেই ক্রিকেটের সামনের সূচির অনেক সিদ্ধান্ত পরিষ্কার হবে। এই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে কিনা- সেই বিষয়েও একটা ধারণা পাওয়া যাবে।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারীর সার্বিক পরিস্থিতি জানাচ্ছে- ১৮ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় এই বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাবনা নেহাতই ক্ষীণ। বিশ্বকাপের মূল আসরের আগে অবশ্য সেপ্টেম্বর থেকেই বাছাই পর্ব শুরু হবে। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকায় যে বাছাই পর্ব খেলেই বাংলাদেশকে মূল পর্বে অংশ নিতে হবে। তবে আদতেই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে কিনা-তা নিয়ে যতখানি আশা রয়েছে, সংশয়ের পরিমাণ তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি!

মন খারাপ করার মতো সেই বাস্তব কারণগুলো নিচে দেখুন:

১) করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য অস্ট্রেলিয়া আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।

২) বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রেলিয়ায়ও এখন আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া সব ধরনের ফ্লাইট আসা-যাওয়া স্থগিত।

৩) সাধারণত বিশ্বকাপের মতো বড় আসরের আয়োজন করতে হলে অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়া শুরু করা হয় অন্তত ৭/৮ মাস আগে। কিন্তু সেপ্টেম্বরের বিশ্বকাপের জন্য আইসিসি এখনো এই প্রক্রিয়াই শুরু করতে পারেনি।

৪) বিশ্বকাপ আয়োজন শুধু মাঠের খেলাই নয়। বিজ্ঞাপন, টিকিট, বিমান ভ্রমন, হোটেল-আবাসস্থল, সম্প্রচারসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যাদি রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই স্টেকহোল্ডারদের কারো সঙ্গে আইসিসি কোন বৈঠকও করতে পারেনি।

৫) করোনাভাইরাস মুক্ত পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু শব্দ ঠিকই টিকে থাকবে- সঙ্গরোধ, সামাজিক দূরত্ব। টিম গেম ক্রিকেটে এই নিয়ম-কানুন মানা প্রায় অসম্ভব।

৬) এটা নিশ্চিত যে এখন থেকে বিদেশ যাত্রায় অতি অবশ্যই পুরো দলকে এবং সেই গেমসে অংশ নেওয়াদের কারোর করোনাভাইরাস নেই-এমন একটা প্রত্যয়ন পত্র নিতে হবে। কারো সামান্য সর্দি কাশির লক্ষণ থাকলেই বাকি সবাই এক ধরনের আতঙ্কে ভুগবেন। টুর্নামেন্ট চলাকালেই দেখা গেল পুরো দলকে কোয়ারেন্টিনে চলে যেতে হচ্ছে! একাদশ তৈরির দলই যে তখন মিলবে না।

৭) স্টেডিয়ামে হাজার হাজার দর্শক খেলা দেখতে আসবেন। তাদের মধ্যে যে করোনা পজিটিভ কেউ থাকবে না- সেই নিশ্চয়তা কোথায়। আর সেই একজনই পুরো স্টেডিয়ামের প্রায় সবাইকে আক্রান্ত করে ফেলতে পারে।

৮) যতদিন করোনাভাইরাসের প্রতিরোধক বা কার্যকর ইনজেকশন আবিষ্কার না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত টিম গেম শুরুটা বড় ঝুঁকির মধ্যেই থাকছে।

৯) ক্রিকেটাররা এখন সবাই বাড়িতে লকডাউনে। ব্যাট-বল থেকে অনেক দূরে। মাঠে নামার মতো ফিটনেসও সবার আছে কিনা- সন্দেহ। যা পরিস্থিতি তাতে সামনের আরো মাস দুয়েক তাদের মাঠের ক্রিকেটে ফেরার সম্ভাবনা নেই। বিশ্বকাপের জন্য যে ক্রিকেটাররাও প্রস্তুত না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর