করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিতেছেন ক্রিকেটার নাজমুল ইসলাম অপু। জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের পুরো পরিবারই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মা-বাবাসহ নাজমুল নিজেও পড়েছিলেন এই সঙ্কটে। তবে হার মানেননি। লড়েছেন এবং ফিরে এসেছেন জয়ী হয়ে। সর্বশেষ পরীক্ষায় তাদের সবার টেস্টের ফল নেগেটিভ এসেছে।
বার্তা২৪কে নাজমুল ইসলাম অপু ১ জুলাই, বুধবার দুপুরে জানান- ‘আমি বিশ্বাস করি, সাধারণ মানুষের দোয়া ছিল তাই আমি এত দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছি। বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার বেশি দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু আল্লাহ’র রহমতে আমরা সবাই এখন সুস্থ হয়ে উঠেছি। শারীরিক দুর্বলতা আছে। এখন সেটাই কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি।’
গত ২০ জুন নাজমুল ইসলাম অপু করোনাভাইরাসে পজিটিভ হন। উপসর্গ থাকায় তার মা-বাবারও টেস্ট করা হয়। সবারই ফল পজিটিভ আসে। এই দুঃসংবাদে ভেঙ্গে পড়েননি অপু। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেয়ে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে লড়াই চালিয়ে যান। ১ জুলাই, বুধবার হাতে পাওয়া সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ১১ দিনে লড়াইটা জিতলেন এই ক্রিকেটার।
করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর দিনগুলো থেকেই নারায়ণগঞ্জের অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন নাজমুল ইসলাম অপু ও তার পরিবার। প্রায় প্রতিদিনই অসহায় মানুষদের নিজ হাতে প্যাকেট করে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। এই ছোটাছুটিতেই নিজেও একসময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন অপু।
বার্তা২৪কে অপু বলছিলেন- ‘আমার এই দুঃসময়ে অনেক ক্রিকেটার ফোন করে, ম্যাসেজ পাঠিয়ে আমাকে সাহস যুগিয়েছেন। মুশফিক ভাই প্রতিদিনই ফোন করেছে। তামিম ভাই, সৌরভ (মমিনুল হক) ফোনে খোঁজ নিয়েছে। আমার প্রতি তাদের এবং সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আমাকে বাড়তি শক্তি ও সাহস দিয়েছে। প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর আমি নিজেকে বলতাম- আমাকে পুরো পরিবার নিয়ে এই লড়াইয়ে জিততেই হবে। আল্লাহ সহায় হয়েছেন বলেই আজ আমি সুস্থ হয়ে উঠেছি।’
যারা এখনো এই ভাইরাসে ভুগছেন তাদের জন্য নাজমুল ইসলাম অপুর পরামর্শ হলো- খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতে হবে। তিনি জানান- ‘এই সময় কোনো খাবারের স্বাদ নাকে লাগে না। খেতেও ভালো না। কিন্তু জোর করে হলেও খেতে হবে। খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না। আর নিয়ম করে লেবু, মধু ও কালিজিরা খেতে হবে।’
শারীরিকভাবে ফিট হওয়ার পর অপু আবার এই দুযোর্গে তার শহরের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেন- ‘আমি কোনো বিপদের ভয় না করে, নিঃস্বার্থভাবে এই কষ্টের সময় অসহায় মানুষের সহযোগিতা করেছিলাম। আমার সঙ্কটের সময় সেই নাম না জানা মানুষগুলোই দু’হাত তুলে আমার পরিবারের জন্য দোয়া করেছে। কষ্টে থাকা মানুষদের পাশে খুব দ্রুতই আমি আবার এসে দাঁড়াতে চাই। সবাই মিলেই আমাদের এই লড়াইয়ে জিততে হবে। সেটাই এখন বড় লড়াই। সবার মুখেই হাসি ফোটাতে হবে।’