গ্রামীণফোনের গ্রাহকদের জন্যে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া আরো সহজ হল। মাত্র ১০ সেকেন্ডের চেয়েও কম সময়ে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন তারা।
সম্প্রতি দুটি কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে সেবাটি চালু করেছে। অল্প সময়ের মধ্যে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে কোম্পানি দুটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গ্রামীণফোনের সাড়ে সাত কোটি গ্রাহকের সকলেই এই সুবিধার আওতাভূক্ত হবেন। সেটিকে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ায় বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে পরিচয় ভ্যারিফাইড করা গ্রামীণফোনের যে কোনো গ্রাহক শুধু *১৬৭# ডায়াল করেই ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। তবে প্রক্রিয়াটির মধ্যে গ্রাহককে কেবল চার ডিজিটের একটি পিন সেট করতে হবে।
তবে কোনো গ্রাহক যদি ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্টটি অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহার করতে চান তাহলে ‘নগদ’ এর অ্যাপটি ডাউনলোড করে সেখানে অ্যাকাউন্টটি অ্যাকটিভ করতে হবে। মোবাইল ফোনে অন্যান্য যে কোনো অ্যাপ ডাউনলোডের পর অ্যাকাউন্টটি অ্যাপে অ্যাক্টিভ করতে যেভাবে মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর একটি ভেরিফিকেশন কোড আসে এখানেও সেভাবে ভেরিফিকেশন কোডিটি সেট করলেই অ্যাকাউন্টটি অ্যাপে চালু হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যে গ্রামীণফোনের অসংখ্য গ্রাহক এই প্রক্রিয়ায় ‘নগদ’ এর অ্যাকাউন্ট খুলেছেন।
মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের গ্রাহক সলিমুল্লাহ নেওয়াজ এই প্রক্রিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, “এতো সহজে একটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে এটি আমি কোনো দিন চিন্তাও করিনি।”
এর আগে প্রথমে টেলিটক এবং পরে রবি ও এয়ারটেলের গ্রাহকদের জন্যেও একই প্রক্রিয়ায় ‘নগদ’ ওয়ালেটের অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা চালু করে দ্বিতীয় গ্রাহক সেরা এমএফএস অপারেটরটি।
এরপর অল্প দিনে মধ্যেই বাংলালিংকের গ্রাহকদের জন্যেও একই সুবিধা চালু করতে তৃতীয় গ্রাহক সেরা মোবাইল ফোন অপারেটরটির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ‘নগদ’।
সুবিধাজনক এই পদ্ধতিতে ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ‘নগদ’ এর হেড অব পাবলিক রিলেশন্স মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম সজল বলেন, মোবাইল ওয়ালেট খোলার প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে তারা শুরু থেকেই কাজ করছেন। সেই প্রক্রিয়ারই অংশ।
”আমাদের বিশ্বাস প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার ছোঁয়ায় অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াটি সহজ হবে এবং তাতে করে দেশে অধিক সংখ্যক মানুষ যারা স্বচ্ছন্দে লেদনদেন করতে চান তারা দ্রুততার সঙ্গে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির আওতায় আসবেন,” যোগ করেন সজল।
বর্তমানে দেশের প্রচলিত ব্যাংক এবং বিভিন্ন ধরণের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার মাধ্যমে দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ আর্থিক অন্তর্ভূক্তির আওতায় রয়েছে। ‘নগদ’ আশা করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি বয়োপ্রাপ্ত মানুষ ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশানের আওতাভূক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’ গত বছর ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে নানা ধরণের প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে সেবাগুলোকে আকর্ষণীয় করেছে। *১৬৭# ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াও তারই অংশ।
‘নগদ’ বলছে, যেহেতু মোবাইল অপারেটরদের কাছে তার গ্রাহকের সকল তথ্য বায়োমেট্টিক ভেরিফিকেশন করা আছে সুতরাং একই তথ্য বারবার বিভিন্ন কোম্পানিকে না দিয়ে এক জায়গা থেকেই সেটি সকলে সুবিধাজনভাবে ব্যবহার কতে পারবে।
এই সেবাটি চালু করতে আগেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছে গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় দ্বিতীয় অপারেটর ‘নগদ’।
গত আগস্ট মাস পর্যন্ত ‘নগদ’ এর গ্রাহক সংখ্যা আড়াই কোটি পেরিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব অনুসারে জুলাই মাসের শেষে দেশে নয় কোটি ২৬ লাখ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট আছে যার মধ্যে চার কোটি ২৭ লাখ অ্যাকাউন্ট কার্যকর আছে।
এই অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে জুলাই মাসে সব মিলে লেনদেন হয়েছে ৬২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা।