অনলাইনে টিসিবি’র নতুন ৪টি পণ্য বিপণন কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের এটি যৌথ উদ্যোগ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবি সেবা সপ্তাহে এ উদ্যোগ নিয়েছে।
রমজান মাসে ডাল, তেল, ছোলা ও চিনি অনলাইনে বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার।
ডাল, চিনি ও ছোলা ৫৮ টাকা কেজি দরে আর তেল ১০৮ টাকা লিটার হিসাবে অনলাইনে বিক্রি হবে। টিসিবি’র ট্রাক সেল থেকে এসব পণ্যের দাম একটু বেশি। একক ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ লিটার তেল ও অন্য পণ্য ৩ কেজি করে কিনতে পারবেন। ডেলিভারি চার্জ সর্বোচ্চ ঢাকায় ৩০ টাকা। ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা।
তবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কোনো ডেলিভারি চার্জ নিবে না। ঢাকায় ৩টি প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য বিক্রি করবে। যার মধ্যে আছে চালডাল, স্বপ্ন আর ওয়ানস্টপ সুপারশপ। বাকি সবজি বাজার, যাচাই ও কেজি ক্লিক কাল থেকে পণ্য পাবে। তা ছাড়া সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের একটি করে প্রতিষ্ঠান আছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-ক্যাব অতীতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে এসবের সফলতা ই-কমার্স খাতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে যার প্রভাব পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব কাজে সহযোগিতা করেছে। ই-কমার্স ডেলিভারি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দেওয়ায় মন্ত্রী তাদের প্রশংসা করেন।
বক্তা হিসেবে জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, ই-ক্যাবের মাধ্যমে টিসিবি পণ্যগুলো যেমন ডাল, তেল, চিনি ও ছোলা মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য অনলাইনে সাশ্রয়ী দামে বিক্রির সুযোগ করে দিয়েছি। টিসিবি’র এসব পণ্যেয় সরকার ভূর্তুকি দেয়।
আশা করছি যেসব প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য বিক্রির দায়িত্বে তারা যেন দরিদ্র এলাকা আর মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে প্রাধান্য দেয়। এক ক্রেতা বেশি পণ্য ক্রয় করতে না পারে সেদিকে যেন নজরদারি থাকে। এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পণ্যের দাম, ডেলিভারি চার্জ ও ক্রয়সীমা বেধে দিয়েছে।
কার্যক্রমের প্রধান নির্বাহী ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারের চেয়ে কম দামে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন ক্রেতারা। যেহেতু এতে সরকারের সহযোগিতা আছে তাই একটা নির্দিষ্ট পরিমাণেই পণ্য দেওয়া হবে।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার জানালেন, করোনা সময়ে যেকোনো সমস্যায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান নিশ্চিত করেছে। পেঁয়াজের দাম বাড়ার যে আশঙ্কা ছিল গত বছর সেখানে পেঁয়াজের দাম জনগণের নাগালে রাখতে ই-ক্যাব কাজ করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও টিসিবি যৌথভাবে এ কাজে সহযোগিতা করেছে। এবারও অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো লাভহীন এ সেবা দিয়ে পবিত্র রমজান ও করোনা সময়ে জনগণের পাশে থাকবে।
ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বললেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় খুব যত্ন সহকারে গত ৮ মাস অনলাইনে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম তদারকি করেছি। ফলে একদিকে যেমন পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে জনসাধারণ সাশ্রয়ী দামে পেঁয়াজ পেয়েছে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো লাভের চিন্তা না করে সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছে। চালডাল এবং যাচাই বেশি দামে বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিয়েছে। যাচাই এবং স্বপ্ন ডেলিভারি চার্জ ছাড়াই পণ্য বিক্রি করেছে।
চালডাল প্রতিষ্ঠাতা ও ই-ক্যাব পরিচালক জিয়া আশরাফ বললেন, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে পেঁয়াজ বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। অনলাইনে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের ৬০ শতাংশই বিক্রি করেছে চালডাল। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। প্রথম দিন পণ্য শর্টিং ও প্যাকেজিং করতে পাঠাতে সময় লাগতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয় দিন থেকে ক্রেতারা পণ্য যথাসময়ে পাবেন। এবারও সেরা সেবা দিয়েই পণ্য ক্রেতাদের দুয়ারে পৌঁছে যাবে।
ই-ক্যাব পরিচালক আসিফ আহনাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন ডব্লিওটিও সেল মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, টিসিবি’র পরিচালক মইনউদ্দীন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি অনু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, ই-ক্যাব জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন, যাচাই ডট কম সিইও আব্দুল আজিজ, চালডাল পরিচালক ইশরাত জাহান নাবিলা, স্বপ্ন ডট কম ও ই-কমার্স লিড শাহেদ উল ইসলাম, ই-ক্যাব রুরাল স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিল, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুছ ছোটন ও ই-ক্যাব ডিজিএম মাহমুদ উর রহমান।