দেশীয় স্টার্টআপে দুই থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশীয় ই-কমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস ইভ্যালি। ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট-২০২১’ তথা বিগ এর মধ্যে দিয়ে এমন বিনিয়োগ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানানো হয় ইভ্যালির পক্ষ থেকে। এতে বলা হয়, আগামী ১২ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া বিগ এর মধ্যে দেশীয় স্টার্টআপে দুই থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইভ্যালি। দেশ ও বিদেশের ৬৫টি স্টার্টআপ নিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে বিগ। এই আয়োজনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডট কম ডট বিডি।
বিগ এর সাফল্য কামনা করে এবং দেশীয় স্টার্টআপে বিনিয়োগ সম্পর্কে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সার্বক্ষণিক তত্বাবধানে প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের দেশেও ভালো ভালো সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ তৈরি হচ্ছে এবং একইসাথে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্যও বিনিয়োগ বান্ধব দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। এমন সময়ে বিগ এর মতো আয়োজন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের সক্ষমতার আরও জানান দেবে।
দেশীয় স্টার্টআপে দুই থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে রাসেল বলেন, বাংলাদেশে স্টার্টআপ ব্যাপক সম্ভাবনাময়। দেশের প্রযুক্তি খাতে এটির আরও বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাতে শুরু করা উদ্যোক্তারাও সাফল্যের মুখ দেখছে। সম্ভাবনাময় এ খাতকে সরকারও বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। ফান্ডিং ছাড়া বড় হওয়া খুবই কষ্টকর। আপনারা জানেন একটা স্টার্টআপ ভালো করার প্যারামিটার হলো ফান্ডিং। এ ফান্ডিং তখনি বিদেশিরা আগ্রহ প্রকাশ করবে যখন স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসবে। আমরা ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি যে স্টার্টআপে যেখানে বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে সেখানে দুই কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত আমরা বিনিয়োগ করবো। আপাতত আমরা এটা বিগ এর মাধ্যমে করবো। পরবর্তীতে এর পরিধি আরও বাড়ানো হবে।
ইভ্যালির উদাহরণ দিয়ে এই উদ্যোক্তা আরও বলেন, ইভ্যালি স্টার্টআপ থেকে শুরু করেছিল। করোনায় সবার জন্যই খারাপ সময় গেছে। তবে করোনা ই-কমার্সের জন্য ইতিবাচক কিছু দিক নিয়ে এসেছে। আজকে হয়তো ইভ্যালি অনেকটা সফল করোনার কারণে এবং দেশের অবকাঠামোর কারণে। কিন্তু অন্যান্য স্টার্টআপ যারা আছেন তাদরকে আমরা এখন সহযোগিতা করতে চাই।
এদিকে সম্প্রতি ইভ্যালিসহ দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশংসা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিগ আয়োজন সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে পলক বলেন, আজকের কোভিড দুর্যোগে মানুষের ঘরে ঘরে সেবা পৌঁছে দিচ্ছে উদ্যোক্তারা। সাফল্যের নজির স্থাপন করেছে ই-ভ্যালির মতো স্টার্টআপগুলো। তারা এখন ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়াও ওয়ালটন দেশের সীমানা পেরিয়ে এখন সিলিকন ভ্যালিতে নিবন্ধিত হচ্ছে। বড় বড় গ্রুপগুলো এখন অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। উদ্যোক্তাদের বড় করে তুলতে দেশের প্রত্যেকটি হাইটেক পার্কে ছয় মাসের জন্য ফ্রি কো-ওয়ার্কিং স্পেস দেওয়া হচ্ছে। দেশজুড়ে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোক্তা ক্যাম্পাস গড়ে তুলছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ। আমরা করোনাকালে দেখেছি নতুন নতুন উদ্ভাবনগুলো আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভ্রমণ ও এয়ার টিকেটিং বিষয়ক জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস ফ্লাইট এক্সপার্টকে অধিগ্রহণ করেছে ইভ্যালি।