বিশ্বজুড়ে চলছে গুগলের কর্মীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি। সর্বশেষ গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই এই প্রতিবাদকে সমর্থন জানালে তা ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মত।
কর্মসূচির দ্বিতীয়দিন শুক্রবার( ২ নভেম্বর) বিশ্বের নানা জায়গায় চলছে প্রতিবাদ। প্রতিবাদের অংশ হিসাবে গুগলের কর্মীরা তাদের কাজ ফেলে অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন, তারা তাদের ডেস্কে একটি নোট লিখে রেখে যান। যাতে লেখা ছিল, ‘আমি আমার ডেস্কে নেই, কারণ আমি অন্য গুগল কর্মী এবং কনট্রাক্টরদের সঙ্গে মিলে যৌন হয়রানি, স্বচ্ছতার অভাব ইত্যাদির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিতে অফিস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি।’
সর্বশেষ নিউইয়র্ক, টোকিও ডাবলিন, এরপর ভারতেও হায়দরাবাদ, গুরুগ্রাম ও মুম্বাইয়ের অফিসে প্রতিবাদে অংশ নেন ১৫০ জন কর্মী।
প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সুন্দর পিচাই বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদের বিষয়টি জানতাম। গতকালই কর্মীদের তা জানিয়েছি। প্রতিবাদে যোগদানে যারা ইচ্ছুক, আমরা তাদের পাশে আছি।’
পরে তিনি বলেছেন, ‘আমরা কীভাবে সংস্থার নীতি এবং পদ্ধতি পাল্টাতে পারি, তা নিয়ে কর্মীরা পরামর্শ দিয়েছেন। তা কীভাবে কার্যকর করা যায়, দেখব।’
গুগল কর্মীরা যেসব দাবি জানাচ্ছেন সেগুলো হলো :
১. গুগলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কর্মীদের বেলায় হয়রানি বা বৈষম্যের অভিযোগ উঠলে তা সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া।
২. যৌন হয়রানির বিষয়ে রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা।
৩. বেতন এবং সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্য বিলোপের অঙ্গীকার করা।
৪. যৌন অসদাচরণের অভিযোগ যেন নিরাপদে এবং অজ্ঞাতনামা হিসেবে দায়ের করা যায়, তার ব্যবস্থা করা।
এই প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করেছেন, গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইও। তিনি জানিয়েছেন, কোম্পানি থেকে অন্তত ৪৮ জন কর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ছাঁটাই করা হয়েছে। যাদের কাউকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গুগলে এই প্রতিবাদের সূচনা হয় উচ্চপদস্থ নির্বাহী কর্মকর্তা ও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম নির্মাতা অ্যান্ডি রুবিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর। তিনি সম্প্রতি গুগলের চাকরি ছেড়ে দেন। তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ থাকার পরও তাকে চাকরি ছাড়ার সময় মোট নয় কোটি ডলার দেয় গুগল।
এছাড়া,গুগলের নিজস্ব সংস্থা অ্যালফাবেট-এর অধিকর্তা রিচার্ড ডেভলও যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠায় গতকাল সরে গেছেন পদ থেকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে কয়েক বছর আগে। তা সত্ত্বেও সংস্থায় কেন ছিলেন তিনি? প্রশ্ন তোলা হয় ওই প্রতিবেদনে। শেষমেশ মঙ্গলবার ইস্তফা দেন তিনি। গুগল সে খবর স্বীকার করে নিয়েছে।