ক’দিন আগে উন্মোচন করা হয়েছে মার্কিন টেকনোজায়ান্ট এপলের যুগান্তকারি সৃষ্টি আইফোন ১৪ সিরিজ। সারা বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটি পিস সেলফোন বিক্রি করা এই প্রতিষ্ঠানটির ধারের কাছেও নেই বিশ্বের কোন মোবাইল ফোন তৈরি করা প্রতিষ্ঠান।
আইফোনের চমকপ্রদ নকশা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এটিকে দিয়েছে সেলফোনের জগতে সম্রাটের স্থান। বিশ্বখ্যাত এই আইফোনের ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের সাথে কাজ করছেন বাংলাদেশের সন্তান মাহিন মাশরুর। যতটুকু জানা যায় মাহিনই একমাত্র বাংলাদেশি যে প্রোডাক্ট ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন।
মাহিনের জন্ম ঢাকার উত্তরায়, ১৯৯৯ সালে। উত্তরার ‘ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন সেন্টারের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা মা’র সাথে চলে যায় কানাডায়। ২০১৮ সালে ভর্তি হন কানাডার মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে।
ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি অসম্ভব আকর্ষণ মাহিনের। ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত থেকে তিনি তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম দিকে যখন সে তার ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত তখন আবেদন করেছিলেন চাকরি। ইলনমাস্কের টেসলা, স্পেসএক্স, এ্যাপল এবং অনেক কানাডিয়ান নামকরা প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি ইন্টারভিউ এর ডাক পান। মাহিন তার শেষবর্ষের পরীক্ষা শেষ করার আগেই ইন্টারভিউ এর চারটি ধাপ অতিক্রম করে এ্যাপলের আইফোন ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেয়ার সুযোগ পান।
গত ১৫ জুলাই সে যোগ দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার কুপার্টিনোর স্টিভ জবস এর সেই বিখ্যাত ভবন অ্যাপল পার্কে। আইফোনের পরবর্তি সংস্করণের নকশায় বাংলাদেশের এই তরুণ মেধাবীর সম্পৃক্ততা থাকবে।
মেধাবী মাহিনের বাবা মা দুজনেই কৃষিবিদ। তাদের পৈত্রিক নিবাস উত্তরের জেলা গাইবান্ধা সদরের পলাশপাড়ায়। দেশে তার বাবা মোমিনুল আজম চাকরি করতেন বিসিএস (ডাক) ক্যাডারে আর মা মাহমুদা আনোয়ার ছিলেন বিসিএস (কৃষি) ক্যাডার। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ২০১০ সালে পাড়ি জমান কানাডায়। মাহিনের বড় ভাই মুহিবও কানাডায় মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।