করোনা মহামারির পর থেকেই স্মার্টফোন যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের। করোনাকালে মানুষের জীবনে এসেছে অনেক পরিবর্তন এবং সেই সঙ্গে ইন্টারনেট মানুষকে আধুনিকায়ন হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
কিন্তু করোনাকালের পর থেকেই সব শিক্ষার্থীরা যেন আসক্তি হয়ে পড়েছে স্মার্টফোনে থাকা টিকটক ভিডিও, অনলাইন গেম এবং অনলাইন জুয়ায়। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে ইন্টারনেটের অপব্যবহার।
তেমনি সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের শাকদহা নামক ব্রিজে গাড়ি দিয়ে যেতে যেতেই দেখা মেলে কিছু যুবকের লাঠি হাতে নিয়ে টিকটক ভিডিও করার দৃশ্য।
দেখা যায়, তারা একে অপরকে মারছে আর সেই দৃশ্য তাদের স্মার্টফোনে ভিডিও ধারণ করে নিচ্ছে। শুধু শহরের শাকদহা ব্রিজ নয়, বাইপাস সড়ক যেন টিকটকারদের আস্তানা। বিকেলে বের হলে দেখা মেলে স্মার্টফোন ও ডিজিটাল ক্যামেরা হাতে নিয়ে ভিডিও করার দৃশ্য।
স্মার্টফোনের এই ভিডিও ধারণ করে কি হবে এমন প্রশ্নে নাম গোপন করা এক যুবক বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে শখের বসে এগুলো করি। আমাদের ভালো লাগে আমরা ভিডিও করে টিকটক, ইউটিউব, এবং ফেসবুকে আপলোড করি। সেই ভিডিওতে হাজার হাজার ভিউ হলে আমাদের অনেক ভালো লাগে। শখের বসে ভিডিও করে অনেক সাড়া পাচ্ছি, মাঝে মাঝে নিজেদেরকে সেলিব্রিটি মনে হয় এমনই বলছিলেন নাম গোপন করা ওই যুবক।
শুধু টিকটক, লাইক ভিডিও নয়। শহরে এবং গ্রামে গঞ্জে দেখা মেলে বেশিরভাগ শিশু অনলাইন গেমে আসক্তি। ফ্রি ফায়ার ও পাবজি যেন তাদের মস্তিষ্ক দখল করে নিয়েছে।
তেমনি গ্রামের এক দোকানে গেলেই দেখা মেলে চোরাটে বসে অনেক গুলো যুবক গেম খেলছে এবং পাশ থেকে সবাই উঁকি মেরে দেখছে। সবার মন যেন গেমে, কেউ ডাকলে বা কল দিলে ধরা বা শোনার সময় নেই তাদের।
তাদের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা রাত দিন সব সময় গেম খেলে সময় কাটান। তারা অনেক অনেক দিন সারা রাত ও গেম খেলে পার করেন। তারা যেন আসক্ত হয়ে গেছে। স্কুল থেকে এসেই তারা ফোন নিয়ে গেম খেলতে বসে। গেম খেলা যেন তাদের প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গেছে। তিন বেলা ভাত খায় আর গেম এটাই তাদের জীবন। স্মার্টফোন তাদের জীবনে কাল হয়ে আসছে কিন্তু তাদের বোঝানোর কোনো উপায় না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সময়ে যুবকরা অনলাইন গেম, টিকটক, অনলাইন জুয়ায় খুব আসক্তি হয়েছে। তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে এসব অনলাইন গেমে অনেকেই আসক্তি হয়ে আত্মহত্যাও করছে। তাই আমাদের উচিত সোচ্চার হওয়া। সব বাবা মা যদি তাদের সন্তানদের নিজের দখলে রাখতে পারতো তাহলে এমন অধপতন হতো না। আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো এসব অনলাইন গেম, টিকটক, অনলাইন জুয়া যেন বন্ধ করে দেয়।