ই-কমার্স খাতে বাংলাদেশের প্রতিকূলতা দূর করতে উদ্ভাবনী সব সমাধান নিয়ে কাজ করছে ‘পেপারফ্লাই’। স্মার্ট রিটার্নের পরে ‘স্মার্ট চেক’ ফিচারের উদ্বোধন করল প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) পেপারফ্লাই কার্যালয়ে এ ‘স্মার্ট চেক’ ফিচার উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা দেশের ই-কমার্স খাতের উন্নয়নে পেপারফ্লাইর প্রচেষ্টা ও উদ্ভাবনী উদ্যোগের কথা এবং ই-কমার্সের অন্যতম বাধা দূরীকরণে কার্যকরী সমাধান নিয়ে আসার গুরুত্ব ব্যক্ত করেন।
সব ধরনের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘রিটার্ন’ খুবই জরুরি। অনলাইন অর্ডার থেকে প্রায় ২৪ শতাংশ পণ্য ফেরত আসে। ফেরত আসা এসব পণ্য আবার ডেলিভারি করতে ই-কমার্স ও তাদের লজিস্টিক সহযোগীদের নতুন করে খরচ করতে হয়। ফলে ব্যবসা ব্যয় বেড়ে যায়।
অর্ডার দিয়েও ফেরত আসা ২৪ শতাংশ পণ্যের মধ্যে ২১ শতাংশই ঘটে ক্রেতার অনিচ্ছা এবং ডেলিভারি সময়ে তার অনুপস্থিতির কারণে। বাকি ৩ শতাংশ ঘটে পণ্য কিংবা পণ্যের প্যাকেজিং ঝামেলা, ত্রুটি বা দেরিতে ডেলিভারি দেওয়ার কারণে। কিন্তু সব সময় সঠিকভাবে এসবের কারণ ও সংখ্যার হিসাব পাওয়া যায় না। সঠিক সময় পণ্য ফেরত আসার সঠিক কারণ জানা গেলে তা ই-কমার্সের প্রধানতম সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়।
রিটার্ন পারসেন্ট বা সরবরাহ করতে না পারা পণ্যের সংখ্যা কমাতে কার্যত সমাধান নিয়ে আসতে অনেকদিন থেকেই কাজ করে আসছে পেপারফ্লাই। যার ভিত্তিতে গত মাসে প্রতিষ্ঠানটি উন্মোচন করে ‘স্মার্ট রিটার্ন’ ফিচার। আর এবারে এলো ‘স্মার্ট চেক’ অপশন।
আগ্রহী ক্রেতার সিদ্ধান্তহীনতার কারণে পণ্য ফেরত আসার সমাধান এনে দেবে ‘স্মার্ট চেক’। এ ফিচার পেপারফ্লাই নিবন্ধিত মার্চেন্টদের সুযোগ করে দেবে তাদের ক্রেতাদের মনোভাব জানার। এ তথ্যের মধ্যে থাকবে ক্রেতাদের অর্ডার করা পণ্যের প্রতি তাদের মনোভাব, কত শতাংশ ক্রেতা পণ্য ডেলিভারি নিচ্ছেন, কত শতাংশ নিচ্ছেন না-এসব তথ্য। যা ভবিষ্যতে মার্চেন্টদের ওই ক্রেতার পণ্য অর্ডার ও পণ্য ডেলিভারির অনুপাত এবং ত্রেতার ক্রয় স্বভাবের অভিজ্ঞতা জানতে সহায়ক হবে। আর সে অনুযায়ী মার্চেন্টরা নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন। নির্দিষ্ট অর্ডার ট্র্যাকও করা যাবে এ ফিচারে।
নতুন এ সেবা প্রসঙ্গে পেপারফ্লাইর প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) রাহাত আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘স্মার্ট রিটার্নের পর স্মার্ট চেক আনতে পেরে আমরা আনন্দিত। যাত্রার শুরু থেকেই প্রচেষ্টা ছিল লজিস্টিক খাতে উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে কাজ করার। স্মার্ট রিটার্ন ও স্মার্ট চেক সে প্রচেষ্টারই ফল। সামগ্রিকভাবেই লজিস্টিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখতে আগ্রহী পেপারফ্লাই। এ প্রতিশ্রুতিতেই ভবিষ্যতেও এগিয়ে যাব।’
‘বাংলাদেশে রিটেইল খাতে ই-কমার্সের পরিমাণ বর্তমানে ১ শতাংশেরও কম। কিন্তু এ বাজার আগামী দশকের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা আছে। লজিস্টিক যেহেতু ই-কমার্স প্রবৃদ্ধির অন্যতম সহায়ক, তাই ভবিষ্যতে স্মার্ট চেক ফিচারের মতো এ ধরনের আরও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করে যাব,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, ই-কমার্সে ক্রেতার কাছে ডেলিভারি পণ্য পৌঁছে দিতে পেপারফ্লাই নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট লজিস্টিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। সারা দেশের ৬৪ জেলা, ৪৯৩ উপজেলা এবং ৪৪৫৪ ইউনিয়নে নিজস্ব কর্মী দিয়ে ডেলিভারি পৌঁছে দিতে কাজ করছে পেপারফ্লাই। সফটওয়্যার ও দেশজুড়ে নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের লজিস্টিক সেবায় (যেমন স্বয়ংক্রিয় ফুলফিলমেন্ট ও ওয়্যারহাউজিং, ডোরস্টেপ মার্কেটিং অ্যাকটিভিশন এবং ই-কমার্স ও এফ কমার্সে রিটেইল ডিস্ট্রিবিউশন) উদ্ভাবনী নিশ্চয়তায় নিরলস কাজ করছে পেপারফ্লাই।