এতোদিন চেয়েও যেখানে একটি টাকাও পায়নি, সেখানে এখন না চাইতেই অডিটের দাবিকৃত অর্থের অংশ পরিশোধ করছে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবি।
কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, প্রতি মাসে ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা করে পরিশোধ করবে রবি। প্রথম কিস্তির সময় ছিল জানুয়ারির ৩১ তারিখ পর্যন্ত। সেটি তারা পরিশোধ করেছিল ১৪ জানুয়ারি।
ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখের মধ্যেই দ্বিতীয় কিস্তির ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করলেই চলত। কিন্তু সেটি তারা দিয়ে দিল মাসে ১০ তারিখেই।
সব মিলে পাঁচ মাসের সমান কিস্তিতে ১৩৮ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে প্রতি মাসের শেষ তারিখের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করলেই চলত।
কিন্তু রবি আর কোনো অবস্থায় কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না। বরং তাদের সব আবেদন যাতে ঠিকঠাক অনুমোদিত হয়ে যায়, সে কারণে আগেভাগেই সব হিসাব চুকিয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুই কিস্তি মিলিয়ে রবি পরিশোধ করল ৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর গ্রামীণফোনের এক হাজার কোটি টাকাসহ অডিট খাত থেকে বিটিআরসি এ পর্যন্ত পেল এক হাজার ৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।
রবির কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মোট দাবি ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর গ্রামীণফোনের কাছে তাদের দাবি ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
গ্রামীণফোন আরো এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে আগামী তিন মাসের মধ্যে-আপিল বিভাগের এমন রায় বেরিয়েছে গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি)।
বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই মাসের পর থেকে রবি আর কোনো সেবা চালু, যন্ত্রপাতি আমদানিসহ ব্যাংক ঋণ নেওয়া, নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণসহ কোনো কিছুতেই আর কোনো অনুমোদন পায়নি। ফলে তাদের নেটওয়ার্ক এক রকম থমকে গেছে। এখন নতুন যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে তাদের একটা চাপ তৈরি হয়েছে। আবার যাতে কোনো কিছুর অনুমোদন পাওয়া নিয়ে কোনো জটিলতা না হয়, সে কারণে দ্রুত সব পরিশোধ করে দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলছেন, গ্রামীণফোনের ঘটনায় অপারেটররা হয়ত বুঝতে পেরেছে যে সরকার বিষয়টি খুবই শক্ত হাতে মোকাবিলা করবে। আর সে কারণে কেউ-ই নতুন কোনো ঝামেলা করবে না বলেই মনে করছেন তারা।
ফলে পাওনা আদায় আগের চেয়ে সহজ হবে বলেই তাদের ধারণা।