নির্ধারিত সময় শেষেও ফাইভজি নীতিমালার খসড়ার হদিস নেই

, টেক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-09 14:29:18

পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তির সেবা বাজারে আনার জন্যে এ সংক্রান্ত যে নীতিমালাটি তৈরি করা প্রয়োজন তার খসড়া ৩১ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সেটি কবে শেষ হবে তা বলতে পারছেন না কেউ-ই।

আগস্ট মাসে গঠিত কমিটি অনেকগুলো বৈঠকও করেছে। কিন্তু নীতিমালার খসড়া দাঁড় করানোর পর্যায়ে তারা আনতে পারেননি। যদিও কমিটিকে বেঁধে দেওয়া সময়ের পরেও আরো দেড় মাস পেরিয়ে গেছে।

দেশে ফাইভজি চালুর রূপরেখা, সময় ও ব্যাপ্তি, স্পেকট্রাম ব্যান্ড ও মূল্য নির্ধারণসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবসহ নীতিমালার একটি খসড়া তৈরি করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের স্পেকট্রাম কমিশনার হাসান মোহাম্মদ আমিনুলকে আহবায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে বিটিআরসি।

বিটিআরসি যখন কমিটি গঠন করেছিল তখন চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নীতিমালার খসড়া বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়।

কমিটি এ পর্যন্ত পাঁচটি বৈঠক করেছে। এর মধ্যে তারা আটটি সাব কমিটিও গঠন করেছেন নানা বিষয়ে।

হাসান মোহাম্মদ আমিনুল বলেন, সাব কমিটির কাছ থেকে প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণেই তাদের কাজের বিলম্ব হচ্ছে।

আমিনুল বলেন, কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণেই ঠিক কোন ব্যান্ডে ফাইভজি সেবা চালু করা হবে সে বিষয়ে তারা কোনো সুপারিশ চূড়ান্ত করতে পারেননি। তাছাড়া স্পেকট্রামের মূল্যই কি হবে সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিও ঝুলে আছে একই কারণে।

সরকার ২০২১ হতে ২০২৩ এর মধ্যে দেশে ফাইভজি চালু করার কথা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। এ জন্য সব রকম প্রস্তুতিতে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা তৈরি, কৌশলগত পরিকল্পনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ে জোর দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে তৈরি করা পথনকশায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই লাইসেন্স দেওয়া হবে। তাছাড়া প্রথম দফায় ২০২১ সালের শুরুতে ঢাকায় ফাইভজি চালু করে ওই বছরেই সব বিভাগীয় শহরগুলোতে সেবা সম্প্রসারণ করতে চায় সরকার।

এরপর ২০২৩ সালের মধ্যে সব জেলা শহর এবং ২০২৬ সালের মধ্যে সব উপজেলা, গ্রোথ সেন্টার বা বড় হাটবাজার, বিশ্বরোড ও রেলে ফাইভজি সেবা দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

ইতিমধ্যে ফাইভজি বিষয়ে বড় দুটি প্রযুক্তি সরবরাহকারী কোম্পানি হুয়াওয়ে এবং এরিকসনের কাছ থেকে তাদের প্রেজেন্টেশন নিয়েছে বিটিআরসি’র ফাইভজি নীতিমালা কমিটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ২.৬ গিগাহার্জ, ৩.৫ গিগাহার্জ ইত্যাদি ব্যান্ডসমূহ ফাইভজি সার্ভিসের জন্য জনপ্রিয় ব্যান্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর সে কারণে বিটিআরসি’র কমিটি এই দুটি ব্যান্ডেই ফাইভজি চালু করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

তবে আইটিইউ হতে ২৫০০-২৬৯০ মেগাহার্জ, ৩৩০০-৪২০০ মেগাহার্জ, ২৬-২৮ গিগাহার্জ, ৩২ গিগাহার্জ, ৩৮ গিগাহার্জ, ৪০ গিগাহার্জ এবং ৪৩ গিগাহার্জ ব্যান্ডসমূহে ফাইভজি প্রযুক্তির জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ প্রদানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানায় নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।

ফাইভজি পরীক্ষাকারী বিশ্বের প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ ফাইভ জি সামিটে ওই পরীক্ষার উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

পরে গত জানুয়ারি মাসে আবারো ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় হুয়াওয়ে, এরিকসন এবং জেডটি ফাইভ জি’র সেবা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখিয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর