চীনের উহান শহরে শুরু হওয়া মহামারি করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্ব নেতাদের এবং বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের। তাই দেশে দেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করতে বলছে।
ইতোমধ্যে ওয়ার্ল্ড টেক জায়ান্টগুলো তাদের কর্মীদের টেলিওয়ার্কিং বা ঘরে বসে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। তবে অফিসে না গিয়ে ঘরে বসে কাজ করাটা অনেকের জন্য একটা নতুন অভিজ্ঞতা বটে।
চলুন তাহলে ঘরে বসে অফিসের কাজ সামলানোর কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জি সুইট: গুগলের জি-সুইট হচ্ছে এর কিছু ব্যবস্থাপনার সমন্বয়ে তৈরি একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান। যেখানে ইউজাররা তাদের সবধরনের অফিসিয়াল কাজ সম্পাদন করতে পারবেন। গ্রুপের মধ্যে যোহাযোগ, ফাইল শেয়ারিং, রিপোর্ট মূল্যায়ন সব কিছুই এই একটি প্ল্যাটফর্মে সম্ভব।
স্ল্যাক: এই সহযোগী টুলসের মাধ্যমে একজন কর্মীকে তার অফিসের অন্যান্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং সমন্বয় সাধন করে যেকোনো বিষয়ে কাজ করতে সাহায্য করবে। এই প্ল্যাটফর্মে একই সঙ্গে অফিসের একের অধিক কর্মীদের সঙ্গে একই সময়ে কল অথবা মেসেজ করা যাবে। স্ল্যাকের মাধ্যমে যেকোনো ফাইল পাঠানো এবং সম্পাদনা করা যাবে।
এছাড়া এই অ্যাপে ইউজার তার নোটিফিকেশন কাস্টমাইজড করে নিতে পারবেন। ফলে অযথা অন্যান্য নোটিফিকেশনে আর চোখ রাখতে হবে না।
ফ্লোক: এই অ্যাপের সাহায্যে একটি অফিসের কর্মীরা তাদের প্রতিদিনকার অফিস মিটিং, কার্য পরিচালনা ও সম্পাদনাসহ সবার কার্য তালিকা অনুযায়ী কাজ মূল্যায়ন করা যায়।
ফ্লোকে কাজের ভিন্নতা অনুযায়ী বিভিন্ন চ্যানেল খোলার সুবিধা রয়েছে। এতে করে নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্ধারিত ব্যক্তিদের মাঝে দ্রুত যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়া এতে থাকছে অডিও-ভিডিও কল সুবিধা।
এই অ্যাপটি উইন্ডোজ, লিনাক্স, ম্যাক, আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণে পাওয়া যাবে। অ্যাপটি ফ্রি ব্যবহার করা যাবে তবে আরও বেশি ফিচার সুবিধা নিতে চাইলে টাকা খরচ করতে হবে।
মাইক্রোসফট টিমস: মাইক্রোসফটের এই প্ল্যাটফর্মে অফিসের সকল ফাইল, মিটিং মিনিটস এবং কর্মীদের আলোচনার বিষয়বস্তু, কথোপকথন এ সবকিছুই হাতে থাকা স্মার্টফোনে সেভ করে রাখা যাবে।
আর গ্রুপ প্রোজেক্টের কাজে নির্ধারিত ইউজাররা কোনো ফাইল শেয়ার এবং এডিট করতে পারবে। এছাড়া ফেস-টু-ফেস কমিউনিকেশনের কিংবা মিটিংয়ের জন্য থাকছে এইচডি অডিও-ভিডিও কল করার সুবিধা। মাইক্রোসফট টিমস ইউজারদের কিংবা প্রতিষ্ঠানের গোপনীয়তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
টিমভিউয়ার: টিমভিউয়ার অ্যাপটিতে সবচেয়ে সহজ ও দ্রুত গতিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দূর থেকে বসেই নিজের ফোন থেকে অন্যের কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনে প্রবেশ করা যায়। এজন্য দুইজনকেই এই অ্যাপটি ইনস্টল করতে হবে এবং কম্পিউটারে প্রবেশের আগে দুজনের কাছে একটি নিরাপত্তা কোড যাবে। যা থেকে নিশ্চিত করা হয় যে আপনি আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের অন্যকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন।
মূলত, অফিসে যেমন ওয়ার্কিং কম্পিউটারগুলোতে নেটওয়ার্কিং করা থাকে তেমনি টিমভিয়ারের মাধ্যমে একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করে অন্য ডিভাইসের ফাইল এক্সেস সুবিধা পাওয়া যায়।
গোটুমিটিং: এই অ্যাপের মাধ্যমে ইউজাররা ভিডিও কলের সাহায্যে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া মিটিংয়ের শুরু হওয়ার পূর্বে ইউজারকে বার্তা পাঠানো, সামনে কোন ইভেন্ট আছে এসব কিছু সম্পর্কে জানতে পারবে।
ভিডিও মিটিং চলার সময় এর ক্লাউড রেকর্ডিং ফিচার ইউজারকে মিটিং মিনিট নোট করার সুযোগ দেবে। এর সাহায্যে ইউজার ঘরে বসেও তার অফিসের কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকতে পারবে।