সাড়ে তিন বছর পর প্রথম গ্রাহক হারাল জিপি

, টেক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 17:37:14

গ্রামীণফোনের গ্রাহক কমার ইতিহাস খুব একটা পাওয়া যায় না। কিন্তু দুষ্প্রাপ্য এই উদাহরণই ফেব্রুয়ারি মাসে দেখল দেশের টেলিযোগাযোগ খাত।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে তাদের গ্রাহক কমেছিল। সে সময় পরপর দুই মাসে ধাক্কা খেয়েছিল দেশ সেরা অপারেটরটি।

তার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আবার গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় ধাক্কা খেল তারা।

গত জানুয়ারির শেষে তাদের কার্যকর সংযোগ ছিল সাত কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার। আর ফেব্রুয়ারির শেষে সেটি কমে চলে আসে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজারে।

ফেব্রুয়ারি মাসে অপারেটরটির ছয় লাখ নয় হাজার গ্রাহক সংযোগ কমেছে। যদিও বাকি তিন অপারেটরেরই কিন্তু গ্রাহক বেড়েছে। আর সে কারণে মোট কার্যকর সংযোগের ক্ষেত্রে আবার দেখা যাচ্ছে চার লাখ ৯৯ হাজার বৃদ্ধি ঘটেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত জুলাই মাসের পর থেকে অডিট সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার দিক থেকে নানা রকম চাপের মধ্যে আছে গ্রামীণফোন।

অডিটে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা দাবি করে। গ্রামীণফোন টাকা না দেওয়ায় প্রথমে অপারেটরটির ব্যান্ডউইথ ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। পরের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে এসে তাদের সকল ধরণের অনুমোদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরে এক পর্যায়ে এসে অপারেটরটির বরাদ্দ করা সব নম্বরও শেষ হয়ে গেলে তারা জঠিলতায় পড়ে যায়। এখন বাজারে বলতে গেলে গ্রামীণফোনের আর নতুন কোনো নম্বর পাওয়া যায় না। অন্যদিকে সব সময়ই দেখা যায় চালু থাকা নম্বরের অনেকেগুলো আবার বন্ধ হয়ে যায়।

টানা ৯০ দিন যদি কোনো নম্বর বন্ধ থাকে তাহলে সেটি পুনরায় বিক্রির অনুমোদন পায় অপারেটররা। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও অপারেটরকে বিটিআরসি’র কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। গ্রামীণফোনের আগের সব নম্বর যেহেতু শেষ এবং বন্ধ নম্বর তারা যেহেতু আর বিক্রির অনুমোদন পাচ্ছে না সে কারণেই তাদের সংযোগ কমে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের হাতে ০১৭ সিরিজে ১০ কোটি এবং ০১৩ সিরিজে দুই কোটি নম্বর বিক্রি করার অনুমোদন রয়েছে। ০১৩ সিরিজে তারা আরো কিছু নম্বর বিক্রির জন্যে অনুমোদন চাইলেও বিটিআরসি সেই অনুমতিও দেয়নি তাদেরকে।

গ্রামীণফোন যে এই অবস্থায় পড়তে পারে সেটি তাদের বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান দায়িত্ব নেওয়ার সময়ই সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই ধারণা দিয়েছিলেন।

২০১৬ সালে অবশ্য সকল মোবাইল সিমের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কারণে টানা কয়েক মাস ধরে সব অপারেটরের গ্রাহক কমে যাচ্ছিল। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত না হওয়ায় তখন অপারেটরদেরকে অনেক নম্বর বন্ধ করে দিতে হয়।

এর আগে ২০১৮ সালের আগস্টে অভিন্ন কলরেট এবং একই বছরের অক্টোবরে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি সেবা (আগের নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ) চালু হলে তখনও অন্য অপারেটররা ধাক্কা খায়। কিন্তু তখনও গ্রাহক বাড়তে থাকে গ্রামীণফোনের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর