গত বছরের জুলাই মাস থেকে অডিট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভীষণ চাপের মধ্যে আছে গ্রামীণফোন। তারপরেও বছরের প্রথম তিন মাসের তাদের লাভের পরিমাণ ছাড়িয়েছে এক হাজার কোটি টাকা।
জানুয়ারি থেকে মার্চ এ তিন মাসে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরটি এক হাজার ৭০ কোটি টাকা নেট লাভ করেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ দশমিক ৮০ ভাগ বেশি।
ফলে শেয়ার প্রতি তাদের আয়ও বেড়েছে। গত বছর এ সময়ে যেখানে অপারেটরটি প্রতি ১০ টাকার শেয়ারের বিপরীতে ছয় দশমিক ২৯ টাকা আয় করেছিল, এবার সেখানে শেয়ার প্রতি আয় উঠেছে সাত টাকা ৯২ পয়সায়।
বুধবার (২২ এপ্রিল) শেয়ার বাজারে নিবন্ধিত সবচেয়ে বড় কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
গ্রামীণফোনের ওয়েব সাইটে আপ করা প্রেজেন্টেশনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে অপারেটরটি মোট আয় করেছে তিন হাজার ৬২০ কোটি টাকা। যেখান থেকে নেট লাভ হলো এক হাজার ৭০ কোটি টাকা, অর্থাৎ মোট আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশই তাদের নেট লাভ।
গত বছর একই সময়ে তাদের মোট আয় ছিল তিন হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। অথচ গত বছরের ২২ জুলাই থেকে কিন্তু নেটওয়ার্ক তৈরির ক্ষেত্রে তেমন একটা বিনিয়োগই করতে পারেনি গ্রামীণফোন।
বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের করা অডিটের দাবিকৃত ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় সে সময় থেকে তাদের সব ধরনের এনওসি বন্ধ থাকে। ফলে নেটওয়ার্ক তৈরি করা বা নতুন প্যাকেজ অফার করা-কোনো কিছুই করতে পারেনি গ্রামীণফোন।
সর্বশেষ আদালতের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার রায়ের প্রেক্ষিতে গ্রামীণফোন প্রথম কিস্তিতে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। আর সে কারণে পর্যায়ক্রমে মার্চের ২৮ তারিখে থেকে তাদের এনওসি ইস্যু করা শুরু হয়েছে।
বিটিআরসির কাছ থেকে এনওসি না পেলে কোনো অপারেটরই কোনো যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারে না। নতুন এলাকায় নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারে না, এমনকি আগের নেটওয়ার্কের মেতরামতের কাজও করতে পারে না। তাছাড়া কোনো নতুন প্যাকেজ বাজারে ছাড়তে পারে না বা কারো সঙ্গে কোনো আর্থিক চুক্তিতেও যেতে পারে না।
এমন চাপে থেকেও লাভের পরিমাণ এক চতুর্থাংশ বৃদ্ধিকে অনেকেই বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেছেন। এ তিন মাসে গ্রামীণফোনের মোট কার্যকর গ্রাহক আগের চেয়ে খানিকটা কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীও। তবে তাতে ইন্টারনেট থেকে আয় কমেনি বরং খানিকটা বেড়েছেই। ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার করে তাদের আয় হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যেটি ছিল ৬৯০ কোটি টাকা।