প্রতিদিন নতুন ৭০ থেকে ৮০ হাজার অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে দেশের সেরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশে।
লকডাউনের কারণে সামগ্রিকভাবে লেনদেনের সংখ্যা এবং পরিমাণ কমলেও নতুন নতুন ব্যবহারকারী লেনদেনের এ বিস্তৃত নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিকাশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বিকাশ বলছে, করোনার আগেও যেখানে দিনে ২৫ থেকে ৩০ হাজার নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হতো, সেখানে তাদের নেটওয়ার্কে এখন নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার হার আগের চেয়ে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চলতি সপ্তাহে একটি ভার্চুয়াল ডিসকাশনে অংশ নিয়ে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদিরও বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক বা বিভিন্ন কার্ড থেকে বিকাশে টাকা আনার সেবাসহ নতুন অনেক সেবা চালু করায় অনেকেই বিকাশে আকৃষ্ট হচ্ছেন। তাছাড়া বিকাশ থেকে সহজেই মোবাইলে টাকা আনা বা অন্যান্য বিল দেওয়ার সুবিধা রয়েছে। মূলত এসব কারণেই লকডাউন সময়ে ঘরে বসে অফিসের কাজ করার সুবিধার্থে, যাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট ছিল না, তারা অ্যাকাউন্ট খুলছেন।
আবার যারা ঘরে বসে কাজ করছেন, তাদের অনেকেরই ছোটখাটো পেমেন্ট বা ই-কমার্সের কেনাকাটায় বা নানা ধরনের বিল দেওয়ার সুবিধার জন্যে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ বিকাশ ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। তাছাড়া অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াও অনেক সহজ হওয়ায় ঘরে বসে সহজেই খোলা যাচ্ছে এ অ্যাকাউন্ট।
শুধু জাতীয় পরিচায়পত্র থাকলেই যে কোনো সময়ে অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।
বিকাশ কর্মকর্তারা বলেন, শুরুর দিকে মূলত গ্রামে টাকা পাঠানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হতো বিকাশ।
পরে নতুন নতুন সেবা এবং বিলিং সুবিধা যুক্ত হওয়ার কারণে শহরের মানুষও বিকাশের নেটওয়ার্কে এসেছেন, বলছিলেন বিকাশের এক কর্মকর্তা।
তাছাড়া রপ্তানিমুখি শিল্পের জন্যে সরকার ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা নেওয়ার জন্যে যেহেতু তাদের কর্মীদের বেতন এমএফএস’র মাধ্যমে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা চালু করেছে, সে কারণেও অনেক নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে।
তবে করোনার কারণে লেনদেনকারীদের বড় অংশটিই যেহেতু শহর ছেড়ে পরিবারের কাছে চলে গেছে, সে কারণে লেনদেনের অংশ কমেছে।
জানা গেছে, আগে সব মিলে দিনে গড়ে ১২শ’ কোটি থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা এমএফএস প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে লেনদেন হলেও এখন দিনে ৫শ’ কোটি থেকে ৬শ’ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুসারে গত ফেব্রুয়ারিতে সব মিলে ৪১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে এমএফএস চ্যানেলে।
ওই মাসে সাকুল্যে কার্যকর এমএফএস অ্যাকাউন্ট ছিল ২ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার, যদিও মোট খোলা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার।
দেশে এখন সব মিলে ১৬টি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। যদিও কয়েক বছর আগেও এটি ছিল ২৯টি।