৫০ লাখ দরিদ্র মানুষের কাছে সরকারি নগদ সহায়তার আড়াই হাজার টাকা চারটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অপারেটরদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির চলমান লকডাউনের কারণে আয়ের পথ বন্ধ এমন দরিদ্র পরিবারের কাছে এই নগদ সহায়তার টাকা আগামী বৃহস্পতিবার (১৪ মে) পৌঁছে যাবে।
দেশের প্রধান চারটি এমএফএস অপারেটর– বিকাশ, নগদ, রকেট এবং শিওরক্যাশের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের কাছে এই অর্থ সহায়তা পাঠানোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ দফায় সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাড়ে বারো’শ কোটি টাকার নগদ সহায়তা এমএফএস অপারেটরদের মাধ্যমে পাঠানোতে স্বচ্ছতার বিষয়টি সুনিশ্চিত হবে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ডাক বিভাগের এমএফএস অপারেটর ১৭ লাখ পরিবারের কাছে তাদের সহায়তা পৌঁছে দেবে। দেশের সবচেয়ে বড় এমএফএস অপারেটর বিকাশের নগদ সহায়তা যাবে ১৫ লাখ পরিবারের কাছে। রকেট সহায়তা পাঠাবে ১০ লাখ পরিবারকে। আর শিওরক্যাশের মাধ্যমে আড়াই হাজার টাকার সহায়তা পাবে আট লাখ পরিবারের কাছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এর চেয়ে সহজে দরিদ্র মানুষকে টাকা পাঠানোর আর কোনো উপায় এখনো পর্যন্ত চালু হয়নি। আমরা যেহেতু প্রচলিত সবচেয়ে জনপ্রিয় সেবাগুলো নিয়ে নিশ্চিত। সুতরাং স্বচ্ছতার বিষয়টিও সুনিশ্চিত থাকবে।’
সরকার নগদ সহায়তার টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে আড়াই হাজার টাকা ক্যাশআউট করতে যে খরচ সেটির অংক যোগ করেই দরিদ্র পরিবারগুলোকে পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে বিকাশের ক্যাশ আউট চার্জ যেহেতু এক দশমিক ৮৫ শতাংশ, সুতরাং সেই হিসেবে আড়াই হাজার টাকার ক্যাশ আউট চার্জ হিসেবে তাদেরকে অতিরিক্ত ৪৬ টাকা ২৫ পয়সা যোগ করে তবেই পাঠাতে হবে। তবে ক্যাশ-আউট খরচের এই টাকার ১৫ টাকা আবার সরকার এমএফএস অপারেটরগুলোকে দিয়ে দেবে।
সম্প্রতি সরকারি ত্রাণ এবং খাদ্য সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি ডাটাবেজ তৈরির কাজে হাত দেয় সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। তাদের তৈরিকৃত ডাটাবেজ থেকেই মূলত ওই ৫০ লাখের তালিকা তৈরি করে এই নগদ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে।
তবে আগামী কিছু দিনের মধ্যে পুরো ডাটাবেজে তৈরির কাজ শেষ হবে এবং সেখানে সব মিলে শোয়া এক কোটির মতো পরিবারের নাম থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন, তথ্য ও যোগাযোগ সচিব জিয়াউল আলম।
ডাটাবেজ তৈরির কাজ শেষ হলে এই পরিবারগুলো কিউআর কোড যুক্ত একটি কার্ড দেওয়া হবে যেটি ব্যবহার করে তারা পরবর্তীতে সরকারি খাদ্য সহায়তা পেতে পারবেন-যেটি আসলে ত্রাণ সহায়তা তছরুপের অভিযোগ মুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।