থাইল্যান্ডে দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটক বলতে ভারতীয় পর্যটক এবং সাধারণ থাইদের কাছে ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্টকেই বোঝায়। আর বাংলাদেশি, নেপালিজ, শ্রীলংকান, পাকিস্তান এই সব দেশের মানুষকেই ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অঞ্চল ভেদে দুনিয়ার পর্যটকদের বিভিন্ন ক্লাস্টারে ভাগ করে থাইরা৷ যেমন- ইন্ডিয়ান, আরব, ফারাং (ইউরোপিয়ান), আফ্রিকান, আমেরিকান, চায়নিজ, ইত্যাদি।
থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের ঢল ছিল চায়নিজ। শুধু পর্যটক হিসেবেই নয় ব্যবসা বাণিজ্যে, এমনকি আত্মীয়তা হিসেবেও এখানে চায়নিজ সম্পর্ক বেশ জোরদার।
তবে বিগত কয়েক বছরে সব ছাপিয়ে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। একটি হিসাব থেকেই এই সংখ্যাটা অনুমান করা যায়। যেমন- থাই এয়ারওয়েজে বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া থেকে সপ্তাহে ৭০ টির বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। যেটি চায়না থেকে মাত্র ১৪ টি।
ভারতীয় পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নতুন নতুন প্যাকেজ এবং সুবিধা ঘোষণা করছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন প্রদেশ, যারা এর আগে শুধুই ফারাংদের উপর নির্ভর ছিল। পর্যটক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ভারতীয় পর্যটকদের ভ্রমণ ধরে রাখতে না পারলে, তারা অন্য কোন নতুন গন্তব্যে যেতে পারে। তাই ভারতীয় কায়দার সঙ্গে পর্যটন শিল্পকে আরো খাপ খাওয়াতে হবে।
সেক্ষেত্রে নতুন সরকার এবং আগত পর্যটন মৌসুমকে লক্ষ্য করে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। থাই হোটেল এসোসিয়েশন (পূর্বাঞ্চল) এর সভাপতি সানফেত সুফাবুয়ানসাথেইন সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, সামনে আবারো পর্যটন মৌসুম আসছে। তবে অতিরিক্ত বিমান ভাড়ার প্রভাব পড়ছে পর্যটন শিল্পে। এর ফলে পর্যটকরা তাদের ভ্রমণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে। তবে থাইল্যান্ড, বিশেষত পাতায়াতে ভ্রমণ করতে বিদেশি এবং থাই পর্যটকদের সেবার মূল্য, নিরাপত্তা, এসব বিষয়েই আশ্বস্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলোতে যাত্রী পরিপূর্ণ না হলে বিমানের টিকেটের মূল্যও কমানো যাচ্ছে না। আবার সামনের মৌসুমের হোটেলের মূল্যও এখনো স্পষ্ট হয়নি। তাই আসন্ন পর্যটন মৌসুমের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত বলা যাচ্ছে না।
ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি কাউন্সিল অব থাইল্যান্ড এর ডেপুটি চেয়ারম্যান সমসং সাছাফিমুক বলেন, খাবার ও বিনোদনের ক্ষেত্রে এখন ভারতীয় পর্যটকদের পছন্দকেও গুরুত্ব দিতে হবে। এই পর্যটকদের ভিন্ন গন্তব্য বেছে নেয়া থেকে বিরত রাখতে আমাদের দ্রুত তাদের কায়দা কানুন রপ্ত করতে হবে।
যেহেতু এশিয়ান ট্যুরিজমে ভারতীয় পর্যটকরা এখন উল্লেখযোগ্য এবং তাদের সংখ্যা থাইল্যান্ডেও বাড়ছে। ট্যুরিজম অথরিটি অব থাইল্যান্ডের হিসাবমতে দক্ষিণ এশিয়া থেকে এই বছর এখন পর্যন্ত ১৬ লাখ পর্যটক এসেছে।
থাই এয়ারওয়েজের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার চাই এমসিরি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া এখন গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট। কোভিডের পর এখন চায়না থেকে সপ্তাহে মাত্র ১৪ টি ফ্লাইট রয়েছে, যেটি দক্ষিণ এশিয়া থেকে ৭০ টি। ভবিষ্যতে ওই অঞ্চল ঘিরে পর্যটনের পরিকল্পনা আরো জোরদার করা হবে।