বিশ্বের সবচেয়ে বড় উইকেন্ড মার্কেট চাতুচাক

বিবিধ, ট্রাভেল

মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, থাইল্যান্ড | 2023-09-01 20:00:49

বাংলাদেশ থেকে যেসব পর্যটক থাইল্যান্ডে বেড়াতে আসেন, ভ্রমণের পাশাপাশি উদ্দেশ্য থাকে কেনাকাটা করা। সস্তায় কেনাকাটার জন্য প্লাটিনাম মার্কেট, ইন্দ্রা মার্কেটেই ভিড় করেন বেশি। তবে ব্যাংককের সবচেয়ে বিখ্যাত মার্কেট 'চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট' সম্পর্কে বাংলাদেশিদের ধারনা কম এবং কেনাকাটার ক্ষেত্রেও কম দেখা যায়।অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বড় উইকেন্ড মার্কেটের খেতাব ব্যাংককের চাতুচাক মার্কেটের। শুধু কম দাম নয়, ফ্যাশন এবং মানেও এই মার্কেট অপ্রতিদ্বন্দ্বী এখানে।

উইকেন্ড মার্কেট মানে শুধু সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মার্কেট। তাই শনি ও রোববার ছাড়া এই মার্কেট অন্যদিন বন্ধ থাকে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর এই দুই দিনেই প্রায় ২ লাখ পর্যটকের সমাবেশ ঘটে এখানে। ৩৫ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই মার্কেটে রয়েছে পণ্যের ২৬টি বিভাগ। প্রায় ২ হাজার দোকান। ১ হাজার ৮০০ ভেন্ডর। যেমন-খাবার, আর্ট, এনটিকস, ফ্যাশন, পশুপাখি এবং আরও অনেক কিছু।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় উইকেন্ড মার্কেট চাতুচাক

যেভাবে যাবেন:

বাংলাদেশের পর্যটকরা যেহেতু বেশিরভাগই সুকুমভিত এলাকায় থাকেন, তাই সেখান থেকে স্কাই ট্রেন (বিটিএস) বা পাতাল ট্রেনে (এমআরটি) চলে আসা যায় চাতুচাক মার্কেটে৷ বিটিএস এ আসলে মো-চিত স্টেশনে নেমে ৩-৪ মিনিট হাঁটলেই এই মার্কেট। আর এমআরটিতে সরাসরি চাতুচাক মেট্রো স্টেশনে নামা যায়। এছাড়াও ট্যাক্সিতে সর্বোচ্চ ৩০০ বাথেই যাওয়া যাবে সুকুমভিত থেকে।

কি পাওয়া যায়-

শনিবার বিকেলে আমরা গিয়েছিলাম চাতুচাক মার্কেটে। এই মার্কেটের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, থাইল্যান্ডের সব অঞ্চলের সিগনেচার ফ্যাশন আইটেমগুলো পাওয়া যাবে। যেমন উত্তর থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ থাইল্যান্ডের মানুষের পোশাক এবং কাপগের পার্থক্য রয়েছে। সেটা এই মার্কেটে বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যায়।

আরেকটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এখানে ব্র্যান্ডের পণ্যের প্রথম এবং দ্বিতীয় রেপ্লিকা পাওয়া যায়। এছাড়াও সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত ব্র্যান্ডের পণ্য পাওয়া যায়।

শুধু কম দাম নয়, ফ্যাশন ও মানেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী চাতুচাক

ইউনিক্লো, এডিডাস, নাইকি ব্র্যান্ডের যেমন রেপ্লিকা পণ্য পাওয়া যায়, তেমনি ব্যবহৃত পণ্যও পাওয়া যায়। এছাড়াও ব্যবহৃত জাপানি পণ্যও কেনা যায় দেখেশুনে। ব্র্যান্ডের হাতের ব্যাগ, লাগেজ, মিউজিকের গিটার, সেক্সোফোন, এসএলআর ক্যামেরা, লেন্স, তৈজসপত্র সবই পাওয়া যায় এখানে।

ব্যাংকক শিল্পের মর্যাদা দেয়। তাই চাতুচাক মার্কেটেও চিত্রশিল্পী, ভাস্করদের জন্য রয়েছে একটি বিভাগ। সেখানে তারা নিজেদের চিত্রকর্ম এবং শিল্পকর্ম প্রদর্শন এবং বিক্রি করতে পারেন।

চাতুচাক মার্কেটের বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্যাশন আইটেম এবং অনুষঙ্গ, যেমন, বেল্ট, সানগ্লাস, টুপি, ওয়ালেট, জুতা ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে হ্যান্ডক্রাফটস, সিরামিকস পণ্য, ফার্নিচার এবং গৃহসজ্জা, ফুড এন্ড বেভারেজ, গৃহসজ্জার গাছপালা, আর্ট এবং গ্যালারি, পোষা প্রাণি এবং অনুষঙ্গ, বই, এনটিকস, ব্যবহৃত পণ্য এবং কাঁপড়সহ আরও অনেক কিছু।

পুরো মার্কেটের প্রতিটি দোকান ঘুরে দেখতে চাইলে দুদিনেও সম্ভব হবে না। তাই বিভাগ ধরে কেনাকাটা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

থাইল্যান্ডের সিগনেচার ফ্যাশন আইটেমগুলো পাওয়া যাবে চাতুচাকে

যে দুটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে-

>> ব্যাংককের অন্যান্য লোকাল মার্কেটের মতো চাতুচাকেও দামাদামি করতে হবে। দামাদামিতে বিরক্ত না হয়ে বার্গেইন করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়। বিক্রেতার বলা মূল্য থেকে ৩০ শতাংশ কম দামে আপনার মূল্য বলতে পারেন।

>> সময় নিয়ে মার্কেটে যেতে হবে। চাতুচাক মার্কেট এতটাই বড় যে হাঁটতে গেলে পা ব্যথা হয়ে যাবে একসময়। তাই কেনাকাটার মাঝে বিশ্রাম, ফুট ম্যাসাজ এবং কিছু খেয়ে নিতে পারেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর