বাংলাদেশের পতাকা হাতে ভ্রমণপ্রিয় নাজমুন নাহার সোহাগী তার ভ্রমণের তালিকায় যুক্ত করলেন ১০০টি দেশ। শততম দেশ হিসেবে তিনি পা রেখেছেন জিম্বাবুয়েতে। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি লেখেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই বাংলাদেশের পতাকা হাতে আমি পা রাখবো শততম দেশ জিম্বাবুয়েতে!’
৯৯তম দেশ জাম্বিয়া থেকে পায়ে হেঁটে শততম দেশ জিম্বাবুয়ে প্রবেশ করেন নাজমুন নাহার। তারপর শুক্রবার আরকে পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশের পতাকা হাতে আজ পূর্ণ হলো আমার শততম দেশ ভ্রমণের ইতিহাস! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের সকল মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাম্বিয়ান সরকারের স্থানীয় গভর্নর হ্যারিয়েট কায়িনা! বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ১৭ বছর ভ্রমণের ইতিহাসের আজকের মাইলফলক হিসেবে আমাকে ‘ফ্যাগ গার্ল’ উপাধি দেন জাম্বিয়ান সরকারের গভর্নর! বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় আমি জিম্বাবুয়েতে পায়ের প্রথম স্টেপটি রাখলাম!’
নাজমুন নাহারের জন্ম লক্ষ্মীপুর জেলার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকত্তর শেষে কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন তিনি। প্রথম দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ২০০০ সালে, ভারতের পাঁচমারীতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে। বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন পৃথিবীর ৮০টি দেশের গার্লস গাইড এবং স্কাউটদের সঙ্গে।
তবে পৃথিবী ভ্রমণের সুযোগ পেতে বেশি দেড়ি হয়নি সোহাগীর। ২০০৬ সালে সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাওয়ার সুযোগ পান। আর এতেই সুযোগ মিলে যায় বিশ্ব ভ্রমণেরও। পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরি করে টাকা জমাতে থাকেন তিনি। এবার তিনি ভ্রমণ করছেন আফ্রিকার সাত দেশ ইথিওপিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, তাঞ্জানিয়া, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে।
শততম দেশ ভ্রমণের পর নাজমুন নাহার সোহাগী লেখেন, ‘আজকের এই মুহূর্ত শুধু আমার নয়, এই গৌরবময় মুহূর্তের অংশীদার বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ! এই মুহূর্ত তাদের যারা একটি বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকা পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করেছেন, প্রাণ হারিয়েছেন! আজ এই মুহূর্তে আমি সেই সব শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কথা স্মরণ করছি! পৃথিবীর বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের ওপর যে ব্রিজটি রয়েছে তা আমার শততম দেশের সাক্ষী হবে! ব্রিজটির অর্ধেক জাম্বিয়াতে, বাকি অর্ধেক জিম্বাবুয়েতে পড়েছে! আর বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতটি বহমান রয়েছে দুদেশের মধ্যে!’